আশিকুল ইসলাম
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি।।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খাঁন বলেছেন, স্বাধীন বাংলাদেশে নিষ্ঠুর স্বৈরাচার আ’লীগ সরকার বার বার দেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করেছে। এই আ’লীগ ৭১ এর পর স্বাধীন বাংলাদেশে বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় শাসন ও শোষণের নীতি অবলম্বন করেছিল। আর খুনী- স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা গোটা দেশকে স্বৈরাচারী কায়দায় দেশের মানুষ এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে জিম্মী ও অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। পনের বছর আ’লীগের নিষ্ঠুর ও ফ্যাসিবাদী চরিত্রের অপশাসন আমলে খুন, গুম, মামলা-হামলা আর স্বাধীন- গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের মহোৎসবে মেতেছিলো। দেশে ন্যয়বিচার বলতে কিছুই ছিল না। বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করে দিয়েছিল। এমতোবস্থায় ছাত্র-জনতার রক্তে অর্জিত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত ২য় স্বাধীন বাংলাদেশে আর কোন স্বৈরাচারীকে মেনে নেয়া হবে না।
মঙ্গলবার -৩ সেপ্টেম্বর- বিকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, এনায়েতপুর থানা শাখা’র উদ্যোগে- বৈষমাবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় এক আলোচনা সভা ও দো’য়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
মাও. রফিকুল ইসলাম খাঁন আরো বলেন- একটি সুখী-সমৃদ্ধ- বাসযোগ্য সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে দল-মত ধর্ম- বর্ণ নির্বিশেষে আমাদের সবাইকে ঐক্যবন্ধভাবে কাজ করতে হবে। ,এ সময় তিনি সকলের জন্য নিরাপদ- একটি বৈষম্যহীন- ইনসাফ ভিত্তিক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে- সকল দেশ প্রেমিক নাগরিকদেরকে জামায়াতের হাতকে শক্তিশালী করার উদাত্ত আহবান জানান ।
বিশেষ অতিথি জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাও. শাহীনুর আলম দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব অটুট রাখতে গণতান্ত্রিক ও দেশ প্রেমিক সকল ছাত্র-জনতাকে সব সময় সতর্ক থাকার এবং দেশ বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার আহবান জানান।
সমাবেশে- থানা জামায়াতের পক্ষ থেকে এনায়েতপুর থানাকে উপজেলা ঘোষণা, যমুনা নদীর ভাঙ্গণ রোধ ও ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে পাঁচিল পর্যন্ত টেকসই বাঁধ নির্মাণ, পূর্বের ন্যায় চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার পূর্বাঞ্চল নিয়ে সিরাজগঞ্জ-৬ সংসদীয় আসন পূর্নবহাল, শহীদ পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আন্দোলনে আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারীদের যথাযথ পুর্নবাসন করার ৫টি প্রস্তুবনা পেশ করেন।
ঐতিহ্যবাহী এনায়েতপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন এনায়েতপুর থানা আমীর ডা. মোঃ সেলিম রেজা। এনায়েতপুর থানা সেক্রেটারী ডা.মোফাজ্জল হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় মজলিশে শু’রা সদস্য, জেলা নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মো. আলী আলম, জেলা নায়েবে আমীর মাও, আব্দুস সালাম, জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম- বেলকুচি উপজেলা আমীর আরিফুল ইসলাম সোহেল- উল্লাপাড়া উপজেলা আমীর মাও, শাহজাহান আলী, শাহজাদপুর উপজেলা আমীর মাও- মিজানুর রহমান- চৌহালী উপজেলা আমীর আবু সালেহ মোহাম্মদ আবু সাইদ- জামায়াত নেতা অধ্যাপক আব্দুল মজিদ, বেলকুচি উপজেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক নূর-উন-নবী সরকার- এনায়েতপুর থানা নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাও- আব্দুল গফুর- জামায়াত নেতা আল-আমীন খন্দকার, জুবায়ের হোসেন- হাজী রফিকুল্লাহ খন্দকার, শ্রমিক নেতা ডা. আইয়ূব আলী ও থানা শিবির সভাপতি ছাত্রনেতা ফয়সাল খন্দকার প্রমুখ।
এর পরে মাও- রফিকুল ইসলাম খাঁন রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে এনায়েতপুরে নিহত ৩ বীর; শহীদ শিহাব- শহীদ সিয়াম ও শহীদ ইয়াহিয়া’র পরিবারে যান এবং পৃথক পৃথকভাবে শহীদ পরিবারের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। তিনি শহীদ পরিবারের সদস্যদের সার্বিক খোঁজ-খবর নেন- তাদের যেকোনো সমস্যায় পাশে থাকার আশ্বাস দেন- এবং জামায়াতের পক্ষ হতে তিন পরিবারের হাতে মোট ৬ লাক্ষ টাকার আর্থিক অনুদানের অর্থ তুলে দেন। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হলে তিনি সকল শহীদ পরিবারকে ধৈর্য্য ধরার আহবান জানান, এবং শহীদদের এই আত্মত্যাগের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে শহীদদের শাহাদাৎ কবুলিয়াতের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন।