স্টাফ রিপোর্টার
ভোলা।।
গেল কয়েকদিন ধরে সমুদ্রে গভীর নিম্নচাপ থাকায় ভোলার উপকূল জুড়ে প্রায় ১০থেকে ১২ দিনের একটানা বৃষ্টিতে উপকূলীয় শহরে বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতি হলেও ভোলায় নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিপন্দি হয়ে পড়ে। টানা বৃষ্টিতে একদিকে যেমন দেখা দেয় জলাবদ্ধতা অন্যদিকে তীব্র সংকট। জলাবদ্ধতার কারণে ভোলার মৌসুমী সবজির পাশাপাশি, আমনের বীজতলা ও আউশধান এর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কোথাও কোথাও ও আবার ডুবে গেছে মাছের ঘের। এতে করে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছে ভোলার চাষিরা।
তবে কৃষি বিভাগ বলছে,ভোলায় টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ও উজানের নেমে আসা পানিতে মৌসুমী সবজি আমনের বীজতলা ও আউশধানের খেতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির শুরুতে কৃষকরা আশীর্বাদ মনে করলেও টানা ভারি বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এতে করে মৌসুমী সবজির গাছের গোড়া পচন ধরে। নষ্ট হয়ে যায় মৌসুমি সবজির পাশাপাশি আমন ধান এর বীজতলা ডুবে যায়য়ার সাথে সাথে আউশ ধান ডুবে যায় পানির নিচে। এতে করে দুশ্চিন্তারভাজ চাষীদের কপালে।
শিবপুরের কৃষক ইয়াসিন জানান, সমিতি থেকে টাকা নিয়ে প্রায় ১ একর জমিতে লাউ, জালিকুমড়া,শসা খেত করেছিলাম। অতিরিক্ত বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার কারণে আমার সব গাছগুলো পচে গেছে। এখন কিভাবে চলবে আমার সংসার? আর কিভাবে এনজিওর ধার দেনা পরিশোধ করব তা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি।
শিবপুরের আরেক কৃষক জাবেদ জানান, ধার দেনা করে আমি কিছু বীজ জমিতে লাগিয়েছি। পাশাপাশি কিছু মৌসুমী সবজি শসা, ভটভটি, লাউ, করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো সত্য,হঠাৎ বৃষ্টির অতিরিক্ত পানিতে ডুবে ফসলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমি বেশ চিন্তায় পড়ে গেছি কিভাবে ধারধারা পরিশোধ করব।
কালাম,মিজান নাগরসহ অন্যান্য কৃষকরা একই কথা বলেন, তারা বলেন,ধার দেনা ও সমিতি থেকে টাকা নিয়ে শসা, লাউ ও জালি কুমড়ো,আমন এর বীজতলা তৈরি করি। টানা অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি জমে থাকায় গাছের গোড়া পচন ধরে এতে আমরা এখন চিন্তিত, সমিতির কিস্তি দিব কিভাবে সংসার চালাবো কী ভাবে।
কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর ভোলা, এর উপ-পরিচালক
কৃষিবিদ মোঃ হাসান ওয়ারিসুল কবীর জানান, ভোলা জেলাতে শাক সবজি উৎপাদনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। এবছর লক্ষ্য মাত্রা ছিলো ১১ হাজার ৪৪ হেক্টর। এবং লক্ষ্য মাত্রা অনুযায়ী কৃষকরা আবাদে সক্ষম হয়েছে। সম্প্রতি বৃষ্টি পাতে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে পানি সরে গেলে কৃষকরা আবার তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে বলে আমি মনে করি।
তবে কিছু কিছু এলাকায় কৃষকরা আউশ ধান ভালো পেলেও উৎপাদন যে অর্থ ব্যয় করেছে, তাতে ধানের বর্তমান দামে তারা লাভবান হওয়া তো থাক দূরের কথা চালান-ও তুলতে পারেন কিনা এ নিয়ে সংশয়ে আছেন এ জেলার কৃষকরা। এ মুহূর্তে সরকারের কাছে তাদের একটাই দাবি, কৃষকদের হাতে ফসল থাকতেই বাজার মূল্য ভালো রাখারে কিছুটা লাভের মুখ দেখবেন তারা। আর না হলে এত পরিশ্রম করে আউশ ধান চাষ করেও তাদের ভাগ্যে গুনতে হবে লোকসান এমনটি ধারণা এখন এ জেলার অধিকাংশ আউশ এবং আমন চাষীদের।