![](https://dainikajkerbangla.net/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
আবুল কাশেম রুমন- সিলেট।।
সিলেটে বেশ কয়েক দিন ধরে সীমান্ত এলাকা থেকে ছোট ছোট অভিযানে টুক টাক ভারতীয় অবৈধ চিনি- মোবাইল সহ অন্যান্য সামগ্রীর চালান আটক করা হলে- ট্রাক ভর্তি ১৪ টি চিনির গাড়ি বৃহস্পতিবার – ৬ জুন ২০২৪ইং- প্রশাসন জব্দের পর ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কে। জড়িত এসব ভারতীয় চোরাচালান সিন্ডিকেটের সাথে রহস্যের অন্তরালে ঘুরপাক কাচ্ছে নানা মুখী প্রশ্নের সচেতন মহলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে তারা তীর জুড়ছেন এ সিন্ডিকেটের সাথে সরকারি দলের অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মী- জনপ্রতিনিধি ছাড়াও পোশাকি বাহিনীর দিকে।
সীমান্ত এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়- কোম্পানীগঞ্জ- গোয়াইনঘাট- জৈন্তাপুর- কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ এখন চিনি চোরাচালের নিরাপদ রুট। আইন-শৃংখলা বাহিনী মাঝে-মধ্যে অভিযান চালিয়ে কিছু চিনির চালান জব্দ করলেও অধিকাংশই থেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বৃহস্পতিবার -৬ জুন ২০২৪ইং- যে চিনির চালান আটকের বিষয়ে অনেকে বলছেন- হয়তো চেইনে সমস্যার কারণে চিনির এই বড় চালান আটক হয়েছে। নয়তো এটাতো হতো না।
স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী- কোম্পানীগঞ্জের মাঝেরগাঁও- বরমসিদ্দিপুর- তুরং- নারাইনপুর- গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি- সোনারহাট- পান্তুমাই ও তামাবিল- কানাইঘাটের সুরইঘাট- লোভাছড়া ও ডনা এবং জকিগঞ্জের আটগ্রাম বর্ডার দিয়ে মূলত চিনি চোরাচালান হচ্ছে। আইন-শৃখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ম্যানেজ করে রাজনৈতিক কর্মী ও কিছু-কিছু জনপ্রতিনিধি চোরাচালানে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এ থেকে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী সাপ্তাহিক ও মাসোহারা আদায় করে থাকে। বিভিন্ন উপজেলায় বিট অফিসাররা চোরাই চিনি ভর্তি ট্রাক থেকে নির্ধারিত অর্থ আদায় করে উর্ধ্বতন অফিসারদেরকে ম্যানেজ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। চিনি চোরাচালানের মাধ্যমে অনেকে বিপুল অর্থ-বৈভবের মালিক হয়ে গেছে বলে আমাদের সোর্সের দাবি।
যে ভাবে জব্দ করা হয় ১৪ ট্রাক ভারতীয় চিনি – বৃহস্পতিবার -৬ জুন ২০২৪ইং- ভোর ৬টায় কোম্পানীগঞ্জ-জালালাবাদ রোডে শহরতলীর উমাইরগাঁও এলাকার ভাদেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে ১৪ ট্রাক ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়। এসময় একটি প্রাইভেটকার ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। তবে- এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার -মিডিয়া- মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ১৪ ট্রাক ভারতীয় চিনি জব্দ করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ যাবত ভারতীয় চিনি জব্দের সবচেয়ে বড় চালান এটি। জব্দকৃত চিনির আনুমানিক মূল্য ২ কোটি টাকা বলে জানান তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চিনিবোঝাই ট্রাকগুলো সিলেটের সীমান্ত এলাকা কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট থেকে জালালাবাদের দিকে যাচ্ছিল। এসময় পুলিশ ধাওয়া দিলে ১৪টি ট্রাক, প্রাইভেটকার ও ১টি মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যায় চোরাকারবারিরা। এই চোরাচালানে জড়িতদের আটক করতে পুলিশের অভিযান রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়- জব্দকৃত চিনির ট্রাকের মধ্যে ৩-৪টি কোম্পানীগঞ্জ থেকে এবং বাকি গুলো গোয়াইনঘাট সীমান্ত এলাকা থেকে এসেছে। ওই সূত্রের দাবি- চিনির চালান মূলত এয়ারপোর্ট বাইপাস হয়ে বাদাঘাট দিয়ে সিলেটে আসার কথা ছিল। কিন্তু, ট্রাক চালকেরা সালুটিকরে বাধা প্রাপ্ত হওয়ায় তারা রাস্তা পরিবর্তন করে বহর উমাইরগাঁও রাস্তা দিয়ে সিলেটে প্রবেশের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ট্রাকের এ চালান জব্দ করে।
এ প্রসঙ্গে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার -উত্তর- আজবাহার আলী শেখ -পিপিএম- জানান- গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালিয়ে ১৪টি ট্রাক ভর্তি ভারতীয় চিনি জব্দ করেছি। এসময় একটি প্রাইভেট কার ও একটি মোটরসাইকেল আটক করা হয়। তিনি বলেন- পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারিরা পালিয়ে যায়। তাদের ধরতে অভিযান চলছে। সেই সাথে সীমান্ত দিয়ে আসা চোরাই চিনির চালান জব্দ করতে জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে- নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। ইতোমধ্যে এই ১৪টি ট্রাক ভর্তি ভারতীয় চিনি জব্দের ঘটনায় জালালাবাদ থানার এসআই মো. সালাহ উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে মামলা করেছেন। মামলা যেতু নেওয়া হয়েছে প্রকৃত এ ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানো হয়েছে শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।