![](https://dainikajkerbangla.net/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
মোরেলগঞ্জ -বাগেরহাট- প্রতিনিধি।।
ঘুর্ণিঝড় রেমালের আক্রমনে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা।
তিনদিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করা সম্ভব হয়নি। তবে ক্ষতি হয়েছে কয়েক শ কোটি টাকার। পানি বন্দী রয়েছে ২ লাখের বেশি মানুষ। উনুনে পানি থাকায় হাজার হাজার মানুষ অভূক্ত দিন কাটাচ্ছে ।
রোববার -২৬ মে- রাতে রেমালের আক্রমনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ১০ হাজার বসতঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্থ হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩০ হাজারের বেশি বসতঘর। ঝড়ে প্রায় ৫০ হাজার গাছ পড়ে গেছে। এরমধ্যে ৫ শত গাছ বিদ্যুতের তারের ওপর পড়েছে। প্রায় ৮ শত কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৫০ টি খুটি ও ২শত বিদ্যুতের মিটার ভেঙ্গে গেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পৌর সভার কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হলেও গোটা উপজেলা বিদ্যুতের আওতায় নিয়ে আসতে আরো ১ মাস সময় লাগবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান- উপজেলার ১শত ২০ কি. মি. পাকা রাস্তা সম্পুর্ণ রুপে বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ৪ শত কি. মি. কাঁচা রাস্তা পানিতে ডুবে আছে। সে সব রাস্তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া মুসকিল। তিনি বলেন- এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে মোরেলগঞ্জ বাসীর আরো ২০ বছর সময় লাগবে। তিনি আরো বলেন, টাকার হিসেবে দেড় শ কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল জাবির বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষয় ক্ষতির কোন তালিকা পাওয়া যায়নি। তবে ২-১ দিনের মধ্যে সম্পূর্ন তালিকা পাওয়া যাবে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারি ভাবে ১ শত মে. ট. চাল- ১ লাখ টাকা- ২ শত ৫০ বস্তা চিড়া- ২৫ কেডেট গুড়- ২ শত বোতল পানি ও ১ শত ২৫ কার্টুন বিস্কুট- ১৬ ইউনিয়ন ও ১টি পৌর সভায় দেয়া হয়েছে।
অপরিশিম ক্ষতি হয়েছে মৎস্য সেক্টরে। উপজেলার বহরবুনিয়া- জিউধরা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চিংড়ি ও সাদা মাছের ১২ হাজারের বেশি মৎস্য ঘের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় জানান -মৎস্য সেক্টরে ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
রেমালের তান্ডবে মারা গেছে হাজার হাজার মুরগি। মুরগি খামারিরা তাদের মুরগি সময় মত সরিয়ে নিতে না পারায় ২ লাখের বেশি মুরগি মারা গেছে বলে জানিয়েছেন খামার সমিতি। খামারি মো. আব্দুল আলী বলেন- তার একমাত্র সম্বল ১৮ শত ডিম পাড়া মুরগি পানিতে ডুমে মারা গেছে। তিনি এখন নি:স্ব হয়ে গেছেন।
মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যার মো. হুমায়ুন কবির মোল্ল্যা বলেন- তার ইউনিয়নে ১ হাজারের বেশী ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ১ শ কি. মি. কাঁচা, পাকা রাস্তা ভেসে গেছে। এসব সড়কে মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।