Dhaka , Saturday, 27 July 2024
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে হিলিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিক পালিত।। মহেশখালীতে লাইসেন্স বিহীন করাত কলের দাপট- হুমকির মুখে পরিবেশ জীববৈচিত্র্য।। রূপগঞ্জে পূর্বাচল ইয়ুথ ক্লাবের উদ্যোগে বৃক্ষ বিতরণ ও বৃক্ষ রোপন কর্মসূচী।। বিদ্যুৎ গ্যাসের প্রিপেইড মিটার রিচার্জের গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইন জনমনে তীব্র অসন্তোষ।। গাজীপুরে সকল কল-কারখানা চালু- পোশাক কারখানায় ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্য।। নরসিংদী কারাগারে  ৪৬৫ বন্দির আত্মসমর্পন।। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।। যৌতুক লোভী স্বামীর নির্যাতনের প্রতিবাদে স্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলন।। আপাতত বন্ধই থাকছে ফেসবুক- জুনায়েদ আহমেদ পলক।। নরসিংদীর কারাগারে হামলা দুই তদন্ত কমিটি গঠন – স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।। কোটা সংস্কার আন্দোলন -ময়মনসিংহে লাঠিসোটা হাতে শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধ- বিজিবি মোতায়েন।। শরীয়তপুরে ফেসবুক লাইভে এসে ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগ।। আমতলীতে ২য় শ্রেণির মাদ্রাসা ছাত্রী ধর্ষণ- ধর্ষক আটক।। সিলেট জেলা কর আইনজীবী সমিতির বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ।। যাত্রাবাড়ীতে রণক্ষেত্র, টোল প্লাজায় আগুন।। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান পুলিশের।। কোটা সংস্কার আন্দোলন- বিক্ষোভে উত্তাল ইবি- ছাত্রলীগের কার্যালয় ভাঙচুর।। চট্টগ্রামে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে মহানগর বিএনপির গায়েবানা জানাজা।। লালপুরে পদ্মায় গোসলে নেমে ৩ শিশু নিখোঁজ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার।। রূপগঞ্জে মামলা তুলে না নেয়ায় বাদীর বাড়ীঘরে হামলা- ভাংচুর- আগুন ১ জনকে কুপিয়ে জখম।। রাতে পোষ্ট- ভোরে তিন যুবক গ্রেফতার।। কালিয়াকৈরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সন্তানদের প্রতিবাদ সমাবেশ  অনুষ্ঠিত।। নগরীর অলিগলি হতে মুল সড়ক ব্যাটারি চালিত অবৈধ অটোরিকশার দখলে।। ফরিদপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া।। তিতাসে আ.লীগের বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচী অনুষ্ঠিত।। লিওনেল মেসি ভক্তরা বড় দুঃসংবাদ পেলেন।। ঢাবি হলে স্বাধীনতাবিরোধী প্রেতাত্মারা তাণ্ডব চালিয়েছে – মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী।। সদরপুরে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের সংবাদ সম্মেলন।। কোটা সংষ্কার আন্দোলন- রামগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগ।। পাবনায় বিদ্যুৎপৃষ্টে স্কুল পড়ুয়া ভাইবোনের মৃত্যু।।

প্লাস্টিকের দাপটে ঐতিহ্য হারাচ্ছে কাঠের খেলনা।।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 05:11:53 am, Sunday, 12 May 2024
  • 43 বার পড়া হয়েছে

প্লাস্টিকের দাপটে ঐতিহ্য হারাচ্ছে কাঠের খেলনা।।

নীলফামারী থেকে
  
সাদ্দাম আলী।।

  
  
থরে থরে সাজানো ট্রাক- ঠেলা গাড়ি- কেরকেরি গাড়ি- ঢোল গাড়িসহ নানা ব্রান্ডের আকর্ষনীয় সব গাড়ি। দিন-রাত হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে এসব গাড়ি তৈরী করছেন কারিগররা। কেউ বা আলতো তুলিতে করছেন রঙ-বেরঙের ডিজাইন। আবার অনেকেই লাগাচ্ছেন চাকা। আবার কেউবা কাঠ খোঁদাই করে তৈরী করছেন গাড়ির ফ্রেম। তৈরী হচ্ছে নানান মডেলের আকর্ষনীয় গাড়ি। ঠুকঠাক আওয়াজে মুখর নীলফামারীর সৈয়দপুরে বাঙালিপুর এলাকা।
  
একসময় সৈয়দপুরের অর্ধশতাধিক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতেন এ পেশায়। তবে কাঠ দিয়ে তৈরী করা এসব গাড়ি মানুষ কিংবা মালামাল পরিবহনের জন্য নয়। প্রতিটি ঈদ- পহেলা বৈশাখ- মেলা কিংবা নানান উৎসবে বিক্রি হয়ে থাকে শিশুদের খেলনা হিসেবে। এসব ছাড়া যেন পূর্ণতা পেতো না কোনো মেলাই। গ্রামবাংলার খেলাধুলার একটি ঐতিহ্য ছিল এসব কাঠের খেলনা। একসময়ে বাজারও কেড়েছিল এই কাঠব্রান্ডের গাড়ি। তবে প্লাস্টিকের ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে কাঠের খেলনা গাড়ির জৌলুস। কারিগররাও পড়েছেন চরম বিপাকে- হাড়-ভাঙ্গা পরিশ্রমেও সুখী নন তারা।  বিক্রি আর চাহিদা কম থাকায় কোনোমতে পেট চলে এ কারিগরদের। তারপরেও পরিবেশ বান্ধব গ্রাম বংলার ঐতিহ্যবাহী খেলনা টিকিয়ে রাখতে চান তারা। কালের বিবর্তনে যেমন ঐতিহ্য হারাচ্ছে এ শিল্প- তেমনি কাঠ দিয়ে খেলনা বানানো কারিগররা এ পেশা থেকে যাচ্ছেন অন্য পেশায়। কেউ আবার বাপ-দাদার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এই পেশায় কাজ করছেন।
  
খেলনা তৈরির কারিগর সেলিম উদ্দিন  বলেন- আমার বাপ-দাদার আমল থেকে এই পেশায় জড়িত ছিল। ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আমি এই পেশায় কাজ করছি। ঈদ-পূজা ছাড়া এসব খেলনা বিক্রি হয় না। এখন প্লাস্টিকের কারণে খেলনার চাহিদা খুবই কম। খেলনা তৈরি করে কোনোমতে আমাদের সংসার চলে। গ্রামবাংলার এসব খেলনা কেউ নিতে চায় না। আগে দিনে কমপক্ষে ১ হাজার খেলনা বিক্রি হতো। এখন পুরো বছরজুড়ে ১৫ হাজার বিক্রি হয় না। আমাদের সরকারি ভাবে সহায়তা করলে আমরা এ পেশা টিকে রাখতে পারব।
  
সেলিম উদ্দিনের বউ নাসিমা বেগম বলেন- আমি বাড়ির কাজ করার পাশাপাশি এখানে এসে কাজ করি। আমার বিয়ে হয়েছে ২০ বছর আগে তখন থেকে এসব কাজ করি। আমাদের এখানে আগে বিক্রি খুব ছিল। এখন তেমন বিক্রি হয় না- যা বিক্রি হয় তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে।
  
কাঠের খেলনা ব্যবহার বাড়াতে পারলে এই শিল্পটাকে ধরে রাখা সম্ভব বলে মনে করছেন অনেকে। আবহমান বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী খেলনা বাজারে টিকিয়ে রাখার দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের।
  
স্থানীয় বাসিন্দা আবু তালেব  বলেন- একসময় এই কাঠের খেলনা খুব ব্যবহার হত। গ্রামে-গঞ্জে ও শহরেও ব্যবহার হত। বর্তমানে এটা বিলুপ্তির পথে। আমাদের সমাজের সব কিছু উন্নত হচ্ছে কিন্তু এসব উন্নত হচ্ছে না। এদেরকে এগিয়ে নিতে গেলে এইসব খেলনার ব্যবহার বাড়াতে হবে।
  
এদিকে এই কাঠ শিল্প বিকাশে উদ্যোক্তাদের উন্নত প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহায়তার আশ্বাস বিসিক কর্মকর্তার। বিসিক জেলা কার্যালয়ের উপ-ব্যবস্থাপক চারু চন্দ্র বর্মন  বলেন- সৈয়দপুরে আগে হস্ত ও কুটির শিল্পের দ্বারা কাঠের বিভিন্ন ধরনের খেলনা সামগ্রী উৎপাদিত হতো। কিন্ত বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বা অনান্য খেলনার কারনে হস্ত ও কুটির শিল্প বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে। এধরনের যে সকল উদ্যোক্তা আছে তাদেরকে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ ও ঋণের মাধ্যমে যুগোপযোগী খেলনা বা এই শিল্পটা বিকাশের জন্য বিসিক সবসময় পাশে থাকবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে হিলিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিক পালিত।।

প্লাস্টিকের দাপটে ঐতিহ্য হারাচ্ছে কাঠের খেলনা।।

আপডেট সময় : 05:11:53 am, Sunday, 12 May 2024
নীলফামারী থেকে
  
সাদ্দাম আলী।।

  
  
থরে থরে সাজানো ট্রাক- ঠেলা গাড়ি- কেরকেরি গাড়ি- ঢোল গাড়িসহ নানা ব্রান্ডের আকর্ষনীয় সব গাড়ি। দিন-রাত হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে এসব গাড়ি তৈরী করছেন কারিগররা। কেউ বা আলতো তুলিতে করছেন রঙ-বেরঙের ডিজাইন। আবার অনেকেই লাগাচ্ছেন চাকা। আবার কেউবা কাঠ খোঁদাই করে তৈরী করছেন গাড়ির ফ্রেম। তৈরী হচ্ছে নানান মডেলের আকর্ষনীয় গাড়ি। ঠুকঠাক আওয়াজে মুখর নীলফামারীর সৈয়দপুরে বাঙালিপুর এলাকা।
  
একসময় সৈয়দপুরের অর্ধশতাধিক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতেন এ পেশায়। তবে কাঠ দিয়ে তৈরী করা এসব গাড়ি মানুষ কিংবা মালামাল পরিবহনের জন্য নয়। প্রতিটি ঈদ- পহেলা বৈশাখ- মেলা কিংবা নানান উৎসবে বিক্রি হয়ে থাকে শিশুদের খেলনা হিসেবে। এসব ছাড়া যেন পূর্ণতা পেতো না কোনো মেলাই। গ্রামবাংলার খেলাধুলার একটি ঐতিহ্য ছিল এসব কাঠের খেলনা। একসময়ে বাজারও কেড়েছিল এই কাঠব্রান্ডের গাড়ি। তবে প্লাস্টিকের ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে কাঠের খেলনা গাড়ির জৌলুস। কারিগররাও পড়েছেন চরম বিপাকে- হাড়-ভাঙ্গা পরিশ্রমেও সুখী নন তারা।  বিক্রি আর চাহিদা কম থাকায় কোনোমতে পেট চলে এ কারিগরদের। তারপরেও পরিবেশ বান্ধব গ্রাম বংলার ঐতিহ্যবাহী খেলনা টিকিয়ে রাখতে চান তারা। কালের বিবর্তনে যেমন ঐতিহ্য হারাচ্ছে এ শিল্প- তেমনি কাঠ দিয়ে খেলনা বানানো কারিগররা এ পেশা থেকে যাচ্ছেন অন্য পেশায়। কেউ আবার বাপ-দাদার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এই পেশায় কাজ করছেন।
  
খেলনা তৈরির কারিগর সেলিম উদ্দিন  বলেন- আমার বাপ-দাদার আমল থেকে এই পেশায় জড়িত ছিল। ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আমি এই পেশায় কাজ করছি। ঈদ-পূজা ছাড়া এসব খেলনা বিক্রি হয় না। এখন প্লাস্টিকের কারণে খেলনার চাহিদা খুবই কম। খেলনা তৈরি করে কোনোমতে আমাদের সংসার চলে। গ্রামবাংলার এসব খেলনা কেউ নিতে চায় না। আগে দিনে কমপক্ষে ১ হাজার খেলনা বিক্রি হতো। এখন পুরো বছরজুড়ে ১৫ হাজার বিক্রি হয় না। আমাদের সরকারি ভাবে সহায়তা করলে আমরা এ পেশা টিকে রাখতে পারব।
  
সেলিম উদ্দিনের বউ নাসিমা বেগম বলেন- আমি বাড়ির কাজ করার পাশাপাশি এখানে এসে কাজ করি। আমার বিয়ে হয়েছে ২০ বছর আগে তখন থেকে এসব কাজ করি। আমাদের এখানে আগে বিক্রি খুব ছিল। এখন তেমন বিক্রি হয় না- যা বিক্রি হয় তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে।
  
কাঠের খেলনা ব্যবহার বাড়াতে পারলে এই শিল্পটাকে ধরে রাখা সম্ভব বলে মনে করছেন অনেকে। আবহমান বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী খেলনা বাজারে টিকিয়ে রাখার দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের।
  
স্থানীয় বাসিন্দা আবু তালেব  বলেন- একসময় এই কাঠের খেলনা খুব ব্যবহার হত। গ্রামে-গঞ্জে ও শহরেও ব্যবহার হত। বর্তমানে এটা বিলুপ্তির পথে। আমাদের সমাজের সব কিছু উন্নত হচ্ছে কিন্তু এসব উন্নত হচ্ছে না। এদেরকে এগিয়ে নিতে গেলে এইসব খেলনার ব্যবহার বাড়াতে হবে।
  
এদিকে এই কাঠ শিল্প বিকাশে উদ্যোক্তাদের উন্নত প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহায়তার আশ্বাস বিসিক কর্মকর্তার। বিসিক জেলা কার্যালয়ের উপ-ব্যবস্থাপক চারু চন্দ্র বর্মন  বলেন- সৈয়দপুরে আগে হস্ত ও কুটির শিল্পের দ্বারা কাঠের বিভিন্ন ধরনের খেলনা সামগ্রী উৎপাদিত হতো। কিন্ত বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বা অনান্য খেলনার কারনে হস্ত ও কুটির শিল্প বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে। এধরনের যে সকল উদ্যোক্তা আছে তাদেরকে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ ও ঋণের মাধ্যমে যুগোপযোগী খেলনা বা এই শিল্পটা বিকাশের জন্য বিসিক সবসময় পাশে থাকবে।