![](https://dainikajkerbangla.net/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
ফজলে এলাহি ঢালী ময়মনসিংহ।।
ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার গালাগাঁও ইউনিয়নের বাট্টা ভাটপাড়া গ্রামের দরিদ্র ইটভাটা শ্রমিক নূর ইসলাম।
ব্যাক্তিগত জীবনে দুই সন্তানের জনক।নিজের বলতে আছে আট শতক জমির উপড় বসতভিটা।স্থানীয় একটি ইটভাটায় কাজ করে চলে সংসার।দুই সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে নাজিয়া আক্তার।বাড়ির পাশের বাট্টা ভাটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে ভর্তি হয় বঙ্গবন্ধু সরকারী কলেজে।এমন সময় বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে আবেদন করে চাকুরী প্রাপ্তির আশায়।নিজেও জানে তাঁর বাবার পয়সা দিয়ে চাকুরী পাইয়ে দেওয়ার কোন সামর্থ্যই নেই।“পুলিশে চাকুরী পেতে টাকা লাগেনা”এমন বিশ্বাসে পথ চলতে থাকে সে।প্রায় একমাস ব্যাপী বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অমিত প্রতিভাধর ও মেধাবী নাজিয়া পেয়েছে কাঙ্খিত সেই চাকুরীটি।আনন্দে অত্নহারা সে এবং তাঁর পরিবার।ময়মনসিংহের পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন নাজিয়া ও তাঁর বাবা।নাজিয়া নিজের মুখেই স্বীকার করে লাখ লাখ নয় মাত্র ১শত ৯০ টাকায় চাকুরীটি পেয়েছে সে।
এ বিষয়ে নাজিয়ার বাবা নূর ইসলাম বলেন,আমি ইটভাটায় কাজ করে সংসার চালাই।ছেলে মেয়েকে মানুষের মত মানুষ করতে দিনরাত পরিশ্রম করি।মেয়েকে একটি সরকারী চাকুরীতে দেওয়ার আশা অনেক দিনের।আমার মেয়েটিও মেধাবী।তবে মানুষের সাথে কথা বললে বরাবরই আশাহত হতে হয়েছে।সবাই বলে চাকুরী নিতে অনেক টাকার দরকার হয়।আমার সেই সামর্থ্য নেই।একদিন তারাকান্দা থানায় এলে দেখা হয় মানবিক অফিসার ইনচার্জ-ওসি-মো.ওয়াজেদ আলী সাহেবের সাথে।আন্তরিক মানুষটিকে দেখে মনের কোনে জন্ম নেওয়া মেয়ের একটা চাকুরীর স্বপ্নের কথা উনাকে জানাই।সব শুনে তিনি আমাকে পুলিশের ট্রেইনী রিক্রুট কনস্টেবল পদে চাকুরীর আবেদন করতে বলেন।মেয়েকে দিয়ে আবেদন করাই।আবার দেখা করতে আসি ওসি সাহেবের কাছে।তিনি অভয় দিয়ে বললেন পুলিশে চাকুরী পেতে টাকা লাগেনা ,আপনার মেয়ের শারিরীক যোগ্যতা ও মেধা থাকলে অবশ্যই চাকুরী পাবে।সেই আশায় বুক বেঁধে দীর্ঘ ১ মাসের পরীক্ষা ও যাচাই বাছাই শেষে আজ আমার মেয়ে আজ বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য হতে চলেছে। আমি চাই আমার মেয়ে মানবিক পুলিশ হবে।সে দেশের সেবা করবে।আমার মতো গরীব মানুষের পাশে দাড়াবে।আমি বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ সকল পুলিশ সদস্যকে ধন্যবাদ জানাই।
এ বিষয়ে তারাকান্দা থানা অফিসার ইনচার্জ মো.ওয়াজেদ আলী জানান,নাজিয়ার বাবা একজন দরিদ্র মানুষ।তিনি আমার কাছে পরামর্শের জন্য এসেছিলেন।আমি উনাকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করার চেষ্ঠা করেছি।চাকুরী পাবার পরও নাজিয়াকে নিয়ে তার বাবা আমার কাছে এসেছিলেন।আমি তাদের খোঁজখবর নিয়েছি।নাজিয়াসহ তারাকান্দায় যাদের চাকুরী হয়েছে সকলের ব্যাপারে খোঁজখবর নিবো আশা করি।আমি নাজিয়ার বাবার কাছে তাদের জীবসংগ্রামের কথা শুনেছি।আমি ময়মনসিংহে আমার বিভাগীয় ও জেলা পুলিশের যেসকল অভিভাবকগণ রয়েছেন সকলকে অন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।সম্মান জানাই নাজিয়া ও তাঁর বাবার সকল আন্তরিক চেষ্ঠাকে।পুলিশের চাকুরীতে যোগ দিয়ে নাজিয়া মানবিক পুলিশ হবে এই কামনা করি।
উল্লেখ্য যে,শনিবার-২৩ মার্চ-রাতে জেলা পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল -টিআরসি-পদের নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা।