
তৌহিদ বেলাল, কক্সবাজার অফিস:
কক্সবাজার সৈকতের হিমছড়ি পয়েন্ট সাগরে গোসলে নেমে নিখোঁজ হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী অরিত্র হাসানের সন্ধান মেলেনি এক সপ্তাহেও।
অরিত্র হাসানের বাড়ি বগুড়া জেলায়। তার বাবা সাকিব হাসান জাতীয় একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক। ছেলে নিখোঁজ হয়েছে জানার পর থেকেই স্ত্রীকে নিয়ে তিনি কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে অবস্থান করছেন।
গত মঙ্গলবার সকাল ৭টায় অরিত্র হাসানসহ তার আরও দুই সহপাঠী সাগরে ভেসে যায়। এদের মধ্যে ভেসে যাওয়ার আড়াই ঘন্টার মধ্যে কেএম সাদমান রহমান শাবাব (২১) নামের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ একই সৈকতে ভেসে আসে। শাবাব ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা কেএম আনিছুর রহমানের ছেলে।
পরদিন বুধবার সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থলের ২৫ কিলোমিটার উত্তরে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক শুঁটকি মহাল সৈকতে আসিফ আহমদ (২২) নামে আরও এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার হয়। আসিফ বগুড়া সদরের নারুলি দক্ষিণের বাসিন্দা রফিকুল ইসলামের ছেলে।
নিখোঁজ অরিত্র হাসান বগুড়া সদরের নিধনিয়া দক্ষিণ পাড়ার আমিনুল ইসলামের ছেলে। মৃত উদ্ধার ও নিখোঁজ তিনজনই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র।
নিখোঁজ অরিত্র হাসানের সন্ধানে সাগর ও উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (এডিশনাল ডিআইজি) আপেল মাহমুদ।
তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিস, লাইফগার্ড, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বিচকর্মীদের সমন্বয়ে ঘটনার পর থেকে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সবশেষে যোগ দিয়েছে বিমান বাহিনী। তারা ড্রোন উড়িয়ে কক্সবাজার সদর, টেকনাফ, মহেশখালী, সোনাদিয়া ও কুতুবদিয়া সৈকতে ও সাগরে অনুসন্ধান করে। উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় খবরও দেওয়া হয়েছে।
সি-সেইফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার মোহাম্মদ ওসমান গনি জানান, নিখোঁজ শিক্ষার্থীর খোঁজে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের মহেশখালী থেকে টেকনাফের নাফ নদীর মোহনা পর্যন্ত উদ্ধারকর্মীরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন।
সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক ইমতিয়াজ আহমদ বলেন, হিমছড়ি সৈকতে একাধিক গুপ্তখালের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সেখানে গোসল করা ঝুঁকিপূর্ণ ও উদ্ধার তৎপরতাও নেই। নিহত শিক্ষার্থীরাও গুপ্তখালে আটকা পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।