শিমুল তালুকদার
সদরপুর থেকে।।
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ২২নং মুলামেরটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনিয়মের সাথে সম্পৃক্ত প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগমের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্কুলের নতুন ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী- যুব সমাজ এবং এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী- শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলেন প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে একের পর এক অনিয়ম করে যাচ্ছেন। বিদ্যালয়টি তাঁর বাড়ির পাশে হওয়ায় তিনি নিয়ম-কানুন না মেনে ঠিকমতো বিদ্যালয়ে আসেন না- এলেও খুব দ্রুত চলে যান ফলে তার সহকারী শিক্ষকরাও একই ধাঁচে হাঁটছে- স্কুলে আর্সেনিক মুক্ত পানির ব্যাবস্থা থাকার পরে ও প্রধান শিক্ষকের অব্যবস্থাপনার কারনে শিক্ষার্থীরা বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে- স্কুলে শিক্ষার্থীদের ওয়াশরুম না থাকায় আশেপাশের বাড়ীতে যাচ্ছে- স্কুল চলাকালীন সময়ে শ্রেণীকক্ষে প্রাইভেট পড়ান- স্কুলের ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়ার সরঞ্জাম ও সাংস্কৃতিক সরঞ্জাম স্কুলে ব্যবহার না করে তার বাসায় নিয়ে ব্যবহার করেন- স্লিপ বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে শুরু করে সরকারি সকল বরাদ্দ নামমাত্র খরচ দেখিয়ে তিনি ইচ্ছামত ভোগ করে যাচ্ছেন- যা সহকারী শিক্ষকদেরও জানতে দিচ্ছেন না।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষককে বারবার অবগত করার পরেও প্রধান শিক্ষক কোন তোয়াক্কা করতেন না। পরবর্তীতে বিষয়টি সাবেক সভাপতি লুৎফুর রহমানকে জানানো হলে তিনি আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিকবার অভিযোগ দেওয়া হলেও উপর মহলে তার লোক থাকার কারণে সেগুলোর কার্যকারিতা হারায় বলে অভিযোগ করেন।
প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম এর পিতা ও তার স্বামী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বিধায় রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় থাকার কারণে অভিভাবকরা কিছু বললে তাকে ‘দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। তাঁর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে দিন দিন বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ হারাচ্ছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত বেত্রাঘাত করার কারণে শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে বিমুখ হয়ে যাচ্ছেন- স্কুলটি শিক্ষার্থী শূন্য হয়ে পড়েছে, ছাত্র ছাত্রী সংগ্রহে ও শিক্ষকদের কোন কর্মতৎপরতা নেই
বলে অভিযোগ করেন তারা।
অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম বলেন- দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র স্কুল ও তার সুনামকে বিনষ্ট করতে অহেতুক মিথ্যা অভিযোগ করে আসছে যার কোনোটিরই ভিত্তি নেই।
তিনি আরো বলেন- স্কুলের আশেপাশের স্থানীয় বাড়ির লোকজন ফসলি মৌসুমে স্কুলের মাঠে ফসল রাখেন- ফসলের যাবতীয় প্রক্রিয়াজাতকরণ করনের কাজ সম্পন্ন করেন- বিদ্যালয়ের মাঠে ও বেড়ার সাথে গরু ছাগল বাধেন এতে স্কুলের পরিবেশ দূষণ হয়, শব্দ দূষণ হয়- শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় মনোযোগ বিঘ্নিত হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এলাকা বাসীকে স্কুলের যায়গায় ফসল রাখতে নিশেধ করার কারনে অহেতুক আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন। তাছারা আমি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। আমার বিরুদ্ধে ইতি পুর্বেও শিক্ষা অফিসে অভিযোগ করা হয়েছিল, যদি আমার বিরুদ্ধে কোন অনিয়ম থাকতো তবে অবশ্য ই শিক্ষা দপ্তর আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারতো বলে জানান তিনি।
অর্থ আত্বসাত প্রশঙ্গে প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ বেগম বলেন- বিদ্যালয়ের স্লিপ বরাদ্দকৃত সহ স্কুল উন্নয়ন খাতে যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় শিক্ষা অফিসার নিয়মিত ভাবে সেই বরাদ্দকৃত অর্থের কাজের তদারকি করেন- তাই অর্থ আত্বসাত করার কোন সুযোগ নেই। বিদ্যালয়ের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন- প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা। যারা শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন তারা বিদ্যালয়ের মাঠটি ফশল রেখে ও গরু ছাগল বেধে রাখতো। তাদেরকে নিশেধ করার কারনে মিথ্যা রটাচ্ছেন। তাদের সুবিধার্থে প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ বেগমকে এই স্কুল থেকে বদলি করানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন।