
শরীয়তপুরের জাজিরা পৌরসভার জামাল মাদবর কান্দি এলাকায় সেনাবাহিনীর পরিচয় ভাঙিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে একটি বাড়িতে রাতের অন্ধকারে হামলা চালানো হয়। এতে ভীত হয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাসলিমা বেগম (৫৫) নামে এক নারী মারা গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার (১১ জুন) রাত ১০টার দিকে। নিহত তাসলিমা বেগম জাজিরা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মজিবর মৃধার স্ত্রী।
পরিবারের দাবি, ঘটনার সূত্রপাত হয় ফেসবুকে স্ট্যাটাস ঘিরে। গত সোমবার (৯ জুন) বিকেলে স্থানীয় দুই যুবক নাইম ঢালী ও সজিব বেপারীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপর নাইম ঢালীর মা চম্পা বেগম ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
এর জের ধরেই বুধবার রাতে স্থানীয় আকবর ঢালী, খালিদ ঢালী ও শাহজাহান বেপারী লোকজন নিয়ে মজিবর মৃধার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা চিৎকার করে বলে, ‘সেনাবাহিনী আসছে, পুলিশ আসছে, সবকয়টারে ধরাই দিমু।’ এরপর তারা দরজায় লাথি মেরে ভাঙচুরের চেষ্টা করে। আতঙ্কে তাসলিমা বেগম ঘরের দরজা বন্ধ করে ভেতরে অবস্থান করছিলেন।
চোখের সামনে ঘটে যাওয়া সেই ঘটনার বর্ণনায় নিহতের ভাতিজি লিমা জানান, ‘তারা দলবল নিয়ে এসে আমাদের ঘিরে ফেলে। আমার কাকি দরজা আটকে রাখলে শাহজাহান বেপারী লাথি মেরে দরজা ভেঙে ফেলে। দরজার আঘাতে কাকি পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যান।’
পরিবারের লোকজন তাসলিমা বেগমকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের দেবর এনামুল মৃধা বলেন, “আমার ভাতিজার বিয়ের আয়োজন চলছিল। তারা এই বিয়ে ঠেকাতেই আতঙ্ক সৃষ্টি করে হামলা চালায়। সেনাবাহিনীর নাম ব্যবহার করে আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করতে আসে। ভাবি দরজা আটকে রাখলে তারা লাথি মারে, এতে দরজা ভেঙে গেলে ভাবি আঘাত পেয়ে মারা যান। আমি জড়িতদের বিচার দাবি করছি।”
অভিযুক্ত আকবর ঢালীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি দাবি করেন, “আমি কিছু জানি না। এলাকায় ঝামেলা থাকায় বেশি থাকিও না।”
এ বিষয়ে জাজিরা থানার ওসি মোহাম্মদ মাইনুল ইসলাম বলেন, “বুধবার রাতে এক নারীর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।” এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।