
দৈনিক আজকের বাংলা ডেস্ক:
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের খুব কাছে গিয়েও পারেননি। আহমেদাবাদের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হয়েছে। তবে শেষ চেষ্টা হিসেবে হয়তো ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপকে লক্ষ্য বানিয়েছেন রোহিত শর্মা।
টি–টোয়েন্টি ও টেস্টকে এরই মধ্যে বিদায় বলে দেওয়া রোহিত সেই বিশ্বকাপেও ভারতকে নেতৃত্ব দেবেন এবং শিরোপা জিতে জাতীয় দলের জার্সি চিরতরে তুলে রাখবেন—এমনটা হয়তো ভেবে রেখেছেন তাঁর ভক্ত–সমর্থকেরাও।
কিন্তু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম স্পোর্টস তক যে খবর জানাল, তাতে ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে রোহিতের অধিনায়কত্ব করা দূরে যাক, সম্ভবত দলেই জায়গা হবে না। এর অনেক আগেই তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেতে পারে।
২০২৭ সালের শুরুর দিকে ওয়ানডে বিশ্বকাপ হবে দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ায়। সে সময় রোহিতের বয়স হবে ৪০ ছুঁই ছুঁই। এ কারণে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) নাকি শিগগিরই অধিনায়কত্বে বদল আনতে চায়।
রোহিত শর্মাকে সরিয়ে শুবমান গিলকে ওয়ানডে অধিনায়ক করতে পারে বিসিসিআই।
স্পোর্টস তক জানিয়েছে, ভবিষ্যতের কথা ভেবে তরুণ নেতৃত্বের দিকে ঝুঁকতে চলেছে বিসিসিআই। সে ক্ষেত্রে বোর্ডের প্রথম পছন্দ শুবমান গিল, যাঁকে কিছুদিন আগে ভারতের টেস্ট অধিনায়ক করা হয়েছে।
৩৮ পেরোনো রোহিত এই বয়সে ওয়ানডের অধিনায়কত্ব হারানো মানে তিনি আর দলে ‘অটো চয়েজ’ থাকবেন না। স্পোর্টস তকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে ভবিষ্যৎ নির্ধারণে রোহিতের সঙ্গে আলোচনায় বসবে বিসিসিআই। কিন্তু মনে হচ্ছে, তিনি এরই মধ্যে তাঁর শেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ফেলেছেন।’
ভারত সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছে গত মার্চে। রোহিতের অধিনায়কত্বেই দলটি আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। দলকে দারুণ নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও অবদান রেখেছেন। ৫ ইনিংসে ১০০ স্ট্রাইক রেট ও ৩৬ গড়ে করেছেন ১৮০ রান। দুবাইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে ৭৬ রান করে তিনিই হন ম্যাচসেরা।
কিন্তু স্পোর্টস তকের খবরে বলা হয়েছে, অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ভারতের পরবর্তী ওয়ানডে সিরিজে রোহিতকে আর অধিনায়ক হিসেবে দেখা যাবে না। নেতৃত্বের ব্যাটনটা তুলে দেওয়া হবে ২৫ বছর বয়সী শুবমান গিলের হাতে। সেই সিরিজ দিয়েই পূর্ণকালীন ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু হবে গিলের।
শুবমান গিল বর্তমানে ভারতের টেস্ট অধিনায়ক।
২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপ জেতা গিল যুব ক্রিকেটে ভারতকে কখনো নেতৃত্ব দেননি। তাঁর অধিনায়কত্বের যাত্রা শুরু হয় ২০১৯ সালে রাজ্য দল পাঞ্জাবের হয়ে। আইপিএলের সর্বশেষ দুই মৌসুম তিনি গুজরাট টাইটানসকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। জাতীয় দলের হয়ে প্রথমবারের মতো অধিনায়কত্ব করেছেন গত বছর জিম্বাবুয়ে সফরের টি–টোয়েন্টি সিরিজ।
গত মে মাসে রোহিত শর্মা টেস্ট থেকে অবসর নিলে গিলকেই এই সংস্করণে নতুন অধিনায়ক করা হয়। গিলের নেতৃত্বে ইংল্যান্ড সফরে দারুণ খেলছে ভারত। হেডিংলিতে প্রথম টেস্ট হারের পর এজবাস্টনে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সিরিজে ১–১ সমতা ফিরিয়েছে তাঁর দল।
ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন গিল। প্রথম দুই ম্যাচে ১৪৬.২৫ গড়ে করেছেন ৫৮৫ রান। দুই সেঞ্চুরির সঙ্গে আছে একটি ডাবল সেঞ্চুরিও।
এর আগে ৮ বারের চেষ্টায় এজবাস্টনে টেস্ট জিততে না পারা (হার ৭টি, ড্র ১টি) ভারত অবশেষে জুজু কাটিয়েছে গিলের নেতৃত্বে। ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপও তাঁর নেতৃত্বেই খেলতে পারে ভারত।
রোহিতের অধিনায়কত্বে ভারত এখন পর্যন্ত ৫৬ ওয়ানডে খেলে ৪২টিতেই জিতেছে। হেরেছে ১২ ম্যাচে, টাই করেছে ১টিতে ও আরেকটি ম্যাচে ফল হয়নি।
কমপক্ষে ১০ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছেন—ভারতের এমন অধিনায়কদের মধ্যে রোহিতই সবচেয়ে সফল (৭৫% জয়)। তাঁর নেতৃত্বে ভারত ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পাশাপাশি ২০১৮ ও ২০২৩ এশিয়া কাপ এবং ২০২৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।