মিজানুর রহমান অপু,
পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি।।
আজ (২৭ আগষ্ট) সকালে রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
পাশাপাশি দুই ঘরের ডোঙ্গার পানি এক ঘর থেকে অন্য ঘরে পড়ায় মোসাঃ রীনার উপর হামলা চালায় পাশের ঘরের মোঃ ইব্রাহিম ও আহসান নামের দুই যুবক।জানা যায় ইব্রাহিম ও আহসান দুই ভাই।
হামলার পরবর্তীতে মোসাঃ রীনা নিরুপায় হয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ করেন।অভিযোগে তিনি বলেন,বেশ কিছু দিন ধরে ইব্রাহিম ও আহসান দুই ভাই আমাকে বিভিন্ন ধরনের কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছে।তারা দুজন বিভিন্ন সময় আমাকে বিভিন্ন ভাবে জ্বালাতন করতো।তাদের কোন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তারা আজ ডোঙ্গার পানি ঘরে পড়াকে কেন্দ্র করে আমার উপর হামলা চালায়।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মোঃ জাহাঙ্গীর বলেন,মোসাঃ রীনার স্বামী ছিদ্দিক মুন্সি মোটরসাইকেল ড্রাইভার। তারা চরমোন্তাজে জায়গা কিনে ঘর উঠানো থেকেই ঝামেলা করছে ইব্রাহিম ও আহসান। ইব্রাহিম ও আহসান তারা ছিদ্দিক মুন্সীকে ঘর উঠাতে বাঁধা দিয়েছিলো।তারপর থেকেই মোসাঃ রীনাকে ইব্রাহিম ও আহসান বিভিন্ন ধরনের কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছে।বিভিন্ন সময়েই রীনার ঘরের চালে ইট মারতো, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতো।আজ সকালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা দুই ভাই মোসাঃ রীনার উপর হামলা চালায়। এরপর মোসাঃ রীনা পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে সেই দুই ভাইয়ের নামে লিখিত অভিযোগ দেন। ফাঁড়ির ইনচার্জ অভিযুক্ত দুই যুবককে ফাঁড়িতে ফোন করে আসতে বললে তারা ফাঁড়িতে আসতে রাজি হয় না। পরবর্তীতে তাদের লোক পাঠিয়ে হাজির করা হয়।চরমোন্তাজ ফাঁড়ির ইনচার্জ মহিউদ্দিন হোসেন তাদের দুই গ্রুপের মধ্যের ঝামেলা মিটিয়ে দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মোশারফ এর নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে। খান মোশারফের নেতৃত্বে বহু বেআইনি কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে সূত্রে জানা যায়।চরমোন্তাজের প্রশাসন কঠোর হওয়ায় বর্তমানে তার বহু বেআইনি কাজ ঠিক ভাবে চালাতে বহু সমস্যা হয়।এই মারামারির ঘটনার নেতৃত্ব আড়ালে বসে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মোশারফ দেয় বলে জানা যায়৷ গরিবের জমি দখল,গরু মহিষ চুরি,পাঁকা ধান কেঁটে নিয়ে যাওয়া, মাদক ব্যাবসা সহ বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার নেতৃত্বেই ইব্রাহিম ও আহসান মোসাঃ রীনার সাথে এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানা যায়৷
এ বিষয়ে চরমোন্তাজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মহিউদ্দিন হোসেন বলেন,
মারামারি ঘটনার পরে মোসাঃ রীনা এসে ইব্রাহিম ও আহসানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরে আমি তাদের দুজনকে ফাঁড়িতে ডাকি। তারা ফাঁড়িতে আসতে অস্বীকার করে এবং বিভিন্ন বাজে ভাষায় গালিগালাজ করে। পরবর্তীতে আমি তাদের পুলিশে দিয়ে ফাঁড়িতে নিয়ে আসি। অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট ভাই আহসানের বিরুদ্ধে বেশি অভিযোগ রয়েছে। আমি অভিযুক্ত আহসানের বড় ভাই ইব্রাহিমকে বলি কি বিচার করা উচিৎ? তখন তিনি তার ছোট ভাইকে আমার সামনে বসে চর থাপ্পড় মারলে আমি তাকে থামিয়ে দেই। এবং দুই গ্রুপকে মিলিয়ে দেই।এ সময় চরমোন্তাজ ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ হালিম আমাকে ফোন দিয়ে বলে তাদের দুই গ্রুপকে তাদের কাছে পাঠিয়ে দিতে৷ তিনি সমাধান করে দিবেন।পরবর্তীতে আমি তাদের মোঃ হালিম মেম্বারের কাছে পাঠিয়ে দেই। তারা মেম্বারের কাছে গিয়ে বলে আমি অভিযুক্ত আহসানের গায়ে হাত দিয়েছি।
আসলে এই ইউনিয়নে একটি কুচক্রী মহল রয়েছে যারা আমাকে এখান থেকে সড়াতে চায়। আমি এখানে থাকায় তাদের কোন অনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে দেই না। এর আগে ফাঁড়ির পুলিশের সাথে তাদের ভালো সম্পর্ক ছিলো। তখন অসহায় মানুষের উপর অন্যায় চালাতো এই কুচক্রী মহল। আমি আসার পরে তাদের কোন অপরাধী কর্মকাণ্ডের প্রশ্রয় দেই না যার কারনে তারা আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে৷ এর নেতৃত্বে রয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মোশারফ। এমন কি আজকের এই ঘটনার পেছনেও রয়েছেন তিনি।