
নাদিম সরকার,
বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক আজ বিদ্যুৎ ভবনের মুক্তি হলে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা ২০২৫’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা, অনুদানের চেক বিতরণ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে জুলাই শহীদ পরিবার এবং আহত জুলাই যোদ্ধাদের সম্মান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে জুলাই শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা তাদের অভিজ্ঞতা ও সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন।
শহীদ মোঃ জান শরিফের স্ত্রী রহিদুন সাজবা বানু স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন যে, তার মেয়ের পিতৃস্নেহ এবং তাদের পরিবারের উপর ঘটে যাওয়া নির্মমতা কোনো অনুদান দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, শহীদরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, কিন্তু বর্তমানে তাদের পরিবারের খোঁজ কেউ রাখছে না।
আহত জুলাই যোদ্ধা মোঃ ফয়েজ, যিনি একটি চোখ হারিয়েছেন, তার উপর ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘটনার বর্ণনা দেন। আরেক আহত যোদ্ধা মোঃ রাকিব হোসেন বলেন, তাদের উপর ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত বিচার এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব জনাব ফারজানা মমতাজ। তিনি শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি শহীদ ও আহতদের আত্মত্যাগের বিষয়টি উপলব্ধি করে দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ গঠনে সরকারি-বেসরকারি সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। তিনি ভবিষ্যতে জুলাই শহীদ পরিবার ও আহতদের পাশে থাকারও আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) জনাব মোঃ সবুর হোসেন। এছাড়া, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) এবং বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানও স্মৃতিচারণমূলক আলোচনায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনে শহীদ হওয়া ১৭টি পরিবারকে এবং দৃষ্টিশক্তি হারানো ৪ জন ও গুরুতর আহত ৪ জনসহ মোট ২৫ জনকে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা করে মোট ২৫,০০,০০০/- (পঁচিশ লক্ষ) টাকার চেক প্রদান করা হয়। এর আগে, বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে গত ২০ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে ‘জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-কে ১,০৫,০০,০০০/- (এক কোটি পাঁচ লক্ষ) টাকার চেক প্রদান করা হয়েছিল।
অনুষ্ঠানের শেষে জুলাই শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত, আহত যোদ্ধাদের দ্রুত সুস্থতা এবং দেশের মানুষের কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।