
বিজয় চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধি:
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন কানাডার সাত সদস্যের সংসদীয় প্রতিনিধি দল। বুধবার সকালে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সৌজন্য সাক্ষাৎটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন কানাডার সিনেটর সালমা আতাউল্লাহজান। সাক্ষাতে উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদার, কানাডিয়ান বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা এবং রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান বিষয়ে আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস প্রতিনিধি দলকে দেশের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া ও আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করেন।
“আপনারা এমন সময়ে এসেছেন, যখন বাংলাদেশ এক বড় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে—এই পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। আসন্ন নির্বাচন আমাদের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
রোহিঙ্গা বিষয়ে কানাডার দীর্ঘদিনের সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরও বলেন,
“রোহিঙ্গা সংকটের আট বছর পেরিয়ে গেছে। টেকসই সমাধান একটিই—তাদের স্বদেশে নিরাপদ প্রত্যাবর্তন। বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। এর মধ্যে হাজারো শিশু এমন এক ভবিষ্যতের দিকে বড় হচ্ছে, যেখানে তাদের নাগরিকত্ব বা পরিচয় অনিশ্চিত। তহবিল সংকট এখন এই মানবিক সঙ্কটকে আরও জটিল করছে।”
প্রতিনিধি দলের প্রধান সিনেটর সালমা আতাউল্লাহজান বলেন,
“রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আমি সবসময় কথা বলেছি। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, বৈশ্বিক মানবিক সমস্যা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এখনই কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে যাতে রোহিঙ্গারা শান্তি ও মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারে।”
তিনি অধ্যাপক ইউনুসের দীর্ঘদিনের মানবিক প্রচেষ্টার প্রশংসাও করেন।
প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন—
এমপি সালমা জাহিদ,
এমপি সামির জুবেরি (কানাডার বৈচিত্র্য, অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি),
মাহমুদা খান, গ্লোবাল সিইও, হিউম্যান কনসার্ন ইন্টারন্যাশনাল (HCI),
মাসুম মাহবুব, সিইও, হিউম্যান কনসার্ন ইউএসএ (HCUSA),
আহমাদ আতিয়া, সিইও, গেস্টাল্ট কমিউনিকেশনস, এবং
উসামা খান, সিইও, ইসলামিক রিলিফ কানাডা।
এমপি সামির জুবেরি বলেন,
“কানাডা বর্তমানে বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব বৈচিত্র্যকরণের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। বাংলাদেশ ও কানাডার মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে। আমরা তৈরি পোশাক, কৃষি ও নতুন উদীয়মান শিল্পে সহযোগিতা বাড়ানোর বড় সুযোগ দেখছি।”
সাক্ষাতে দুই দেশের মধ্যে বস্ত্র, কৃষি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং এসডিজি বিষয়ক জ্যেষ্ঠ সচিব লামিয়া মোরশেদ।

























