
বিজয় চৌধুরী,
বড়দিন উপলক্ষে দেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শীর্ষ ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও সৌহার্দ্য বিনিময় করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ, ন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান ফেলোশিপ অব বাংলাদেশের সভাপতি বিশপ ফিলিপ পি অধিকারী, খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ড. বেনেডিক্ট আলো ডি রোজারিও এবং জাতীয় চার্চ পরিষদ বাংলাদেশ-এর সভাপতি খ্রিস্টোফার অধিকারীসহ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে খ্রিস্টান নেতারা তাঁদের বক্তব্যে আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সুনাম ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে তাঁর ভূমিকার প্রশংসা করেন। পাশাপাশি তাঁর নেতৃত্বে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে—এমন প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন তাঁরা।
আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ তাঁর বক্তব্যে যিশু খ্রিস্টকে সার্বজনীন মানবতার প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ক্ষমা, ভালোবাসা ও মানবসেবার আদর্শ ধারণ করেই বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ও এ বছর বড়দিন উদযাপন করছে।
প্রধান উপদেষ্টাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের পুনর্গঠনে জনগণ আপনার ওপর যে আস্থা রেখেছে, আপনি তা নিষ্ঠার সঙ্গে বাস্তবায়ন করে চলেছেন। আমরা প্রার্থনা করি, একটি শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আপনার প্রচেষ্টা সফল হোক।’
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত সবাইকে বড়দিন ও আসন্ন নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ সমাজের নৈতিক দর্পণ। আপনাদের মাধ্যমে সমাজের প্রকৃত চিত্র উপলব্ধি করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, একটি সুস্থ ও মানবিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করেই জুলাই সনদ প্রণয়ন করা হয়েছে। জনগণের মতামতের ভিত্তিতে গণভোটের মাধ্যমে এই সনদ বাস্তবায়ন হলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি গণভোটও অনুষ্ঠিত হবে এবং গণভোটে জনগণের রায় অনুযায়ী ভবিষ্যৎ সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এ লক্ষ্যে নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে ধর্মীয় নেতাদের সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের নেতৃবৃন্দ বড়দিন উপলক্ষে ট্রাস্টকে আড়াই কোটি টাকা অনুদান দেওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। তাঁরা জানান, দেশজুড়ে প্রায় ৮০০টি চার্চের মধ্যে তিন ধাপে এই অনুদান বিতরণ করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বড়দিন উদযাপনের অংশ হিসেবে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটেন প্রধান উপদেষ্টা।
























