মাওলাদ হোসেন।।
পিরোজপুর চল্লিশের দশকের প্রতিভাবান সাহিত্যিক ও সাংবাদিক খান মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দীনের স্মরণে সোমবার -৯ ডিসেম্বর- পিরোজপুর সরকারি গণগ্রন্থাগারে আলোচনা সভা ও বুক কর্নারের উদ্বোধন করা হয়েছে।
পিরোজপুর সরকারি গণগ্রন্থাগার ও পিরোজপুর সাহিত্য পরিষদের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান। তিনি পিরোজপুর বুক কর্নারের শুভ উদ্বোধন করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি মোসলেহ উদ্দীনের জীবন ও কর্মের আলোকে নতুন প্রজন্মকে এদেশের সংস্কৃতির প্রকৃত শেকড় সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- পিরোজপুর টগড়া দারুল ইসলাম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. আব্দুল্লাহীল মাহমুদ, মোসলেহ উদ্দীনের কন্যা মাহফুজা মোসলেহী- সাহিত্য পরিষদের উপদেষ্টা মাসুদ খান- সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা হাছিবুর রহমান, পিরোজপুরের কবি সাহিত্যিকরা ও নানা পেশার মানুষ। তারা মুসলেহ উদ্দীনের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
তারা বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে ১৯৪১ সালে রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভিতে যোগদান- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কমিউনিকেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন। চল্লিশের দশকের গোড়ার দিকেই কোলকাতার দৈনিক আজাদ পত্রিকায় সাংবাদিকতা শুরু। তিনি সহ-সম্পাদক হিসেবে দৈনিক আজাদ- দৈনিক নবযুগ- দৈনিক ইত্তেহাদ ও গুলিস্তাঁ পত্রিকায় কাজ করেন। দেশভাগের পর নিউ নেশন- বাংলাদেশ টাইমস ও অবজারভার পত্রিকায় কাজ করেন। সাপ্তাহিক পাযরা- অভিযাত্রী এবং সেবা পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। কবিতা- প্রবন্ধ ও জীবনী মিলিয়ে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৬ টি। মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা তাঁর লেখায় প্রতিফলিত- সমাজ- সভ্যতা- সংস্কৃতি- ভাষা- সাহিত্য এবং ধর্ম নিয়ে গবেষণাধর্মী আরো ২০টি বইয়ের পান্ডুলিপি তার অপ্রকাশিত। বাংলা ১৩৫২ সালের ভাদ্র সংখ্যায় কায়কোবাদকে নিয়ে লেখা তার ‘মহাশ্মশানের কবি’ নামের ধারাবাহিক প্রবন্ধ ‘মোহাম্মদী’তে প্রকাশ হলে কোলকাতার সাহিত্য মহলে হৈচৈ পড়ে। কোলকাতা রাইটার্স বিল্ডিংয়ে তিনি ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর দেয়া ইয়াংগেস্ট জার্নালিস্ট নামে পরিচিত হন। তাকে আদর করে নাতী বলে ডাকতেন কায়কোবাদ।
অনুষ্ঠানে মোসলেহ উদ্দীনের কন্যা মাহফুজা মোসলেহী তার বাবার লেখা একটি অংশ আবৃত্তি করেছেন। তার কন্ঠে বাবার প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করেন।