Dhaka , Tuesday, 1 July 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
কালিয়াকৈরে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ১০ হাজার গাছের চা’রা বিত’রণ শৌলজালিয়ায় আও’য়ামী লী’গ নে’তা চেয়ারম্যান রিপন ও প্যানেল চেয়ারম্যানকে মা’রধ’র নেত্রকোণার দুর্গাপুরে ক’মরে’ড অনিমা সিং’হে’র প্র’য়াণ দিবস উপলক্ষে স্মর’ন স’ভা পদ্মা সেতু দক্ষিণে প্রায় দেড় লাখ টাকার গাঁ’জাস’হ না’রী ও পু’রুষ আ’টক আদিতমারীতে পানিতে ডু’বে ১৮ মাস বয়সী শি’শুর মৃ’ত্যু  র‍্যাবের হাতে আ’ন্তঃজে’লা ডা’কা’ত দলের স’র্দার গ্রে’প্তার সীমান্ত এলাকায় ১৫ বিজিবির অ’ভিযা’নে বি’পুল প’রিমা’ণ অ্যা’ন্ড্রয়ে’ড মোবাইল ফোনের ডি’সপ্লে উদ্ধা’র ডাক বিভাগের কো’ষাগা’র ব্য’বস্থা’প’না ডিজিটাল রূ’পা’ন্তরে’র উদ্বোধন জুলাই বি’প্লবে’র শহি’দরা দেশ ও জা’তিকে মু’ক্তি’র পথ দেখিয়েছে-ধর্ম উপদেষ্টা ঢাকার বা’য়ুদূষ’ণ রো’ধে ‘ডি’গ্রেডে’ড এ’য়ারশে’ড’ চি’হ্নিত করা হবে। – পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নারায়ণগঞ্জ জেলা ও রূপগঞ্জ উপজেলা প্রাইভেট হাসপাতাল ওনার্স এসোসিয়েশনের পরিচিতি ও সংবর্ধনা স’ভা অনুষ্ঠিত পূর্বাচলে জ’বাইকৃ’ত ৫টি ঘো’ড়া উ’দ্ধার, একজন আ’টক বেসরকারি শিক্ষকদের জ্যে’ষ্ঠতা যো’গদানে’র দিন থেকে শুরু করতে রু’ল বীরগঞ্জে কা’লের ক’ণ্ঠ মাল্টিমিডিয়ার প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আ:লীগ নে’তা র’ঞ্জু গ্রে’প্তার শরীয়তপুরে শা’রী’রিক প্র’তিব’ন্ধক’তা জয় করে প্র’শা’সন ক্যা’ডারে উল্লা’স পান আজ থেকে নগর স্বা’স্থ্যসে’বা কা’র্যক্র’ম পরিচালনা করবে ডিএনসিসি “জুলাই গণঅ’ভ্যুত্থা’ন ছিল বাংলাদেশের মানুষের গ’ণত’ন্ত্র প্রতিষ্ঠার সং’গ্রামে’র মাইলফলক”-পার্বত্য উপদেষ্টা জলবায়ু অ’ভিযো’জ’নে ত’রুণ’দের স’ম্পৃ’ক্ত করতে একস’ঙ্গে কাজ করবে পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও ইউনিসেফ বাংলাদেশ নতুন প্র’জ’ন্মের ভা’বনা’য় ক’মরে’ড অণিমা সিং’হ — প্রা’সঙ্গি’ক এক বিপ্ল’বী আদ’র্শ” হাতিয়াতে যৌ’থবাহি’নীর অ’ভিযা’নে না’রীসহ আ’টক-৪, আ’গ্নেয়া’স্ত্র-স্ব’র্ণ উ’দ্ধা’র নোয়াখালীতে ভরা মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধির প্র’তিবা’দে বি’ক্ষো’ভ চিকিৎসার্থে ঢাকায় গিয়ে নি’হত ৩ জনের জা’না’যা সম্পন্ন, বি’চা’রের, দা’বী’তে এলা’কাবা’সীর মানব ব’ন্ধন চাচাকে আ’টক করেছে পু’লিশ  হাতিয়াতে যৌথবাহিনীর অভিযানে নারীসহ আটক-৪, আগ্নেয়াস্ত্র-স্বর্ণ উদ্ধার আশুলিয়ায় এম এ মতিন ও তার স্ত্রী’র গ্রে’প্তারে’র দা’বি’তে মা’নবব’ন্ধন রাজাপুরে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্রদলের উপহার সামগ্রী বিতরণ সরাইলে বা’ল্যবি’বাহ প্র’তিরো’ধ বিষয়ক আলোচনা সভা ইবি লালমনিরহাট ছাত্রক’ল্যাণ সমিতির নেতৃ’ত্বে মাহিউল-রবি দুর্গাপুরে ভূমি সেবা সহায়তা কেন্দ্রের উদ্বোধন মেডিঃ কলেজ ও হাস’পাতা’লের ই’ন্টার্নী চি’কিৎস’ক প’রিষ’দের আ’হবা’য়ক কমিটি গঠিত

নতুন প্র’জ’ন্মের ভা’বনা’য় ক’মরে’ড অণিমা সিং’হ — প্রা’সঙ্গি’ক এক বিপ্ল’বী আদ’র্শ”

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 02:44:38 pm, Tuesday, 1 July 2025
  • 47 বার পড়া হয়েছে

মোরশেদ আলম,

আজকের তরুণ সমাজ নানা বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে পথ খুঁজে ফিরছে। লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক-যুবতী কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা না পেয়ে হতাশায় ডুবে যাচ্ছে। কেউ কেউ অবক্ষয়ের পথে পা বাড়াচ্ছে। সরকার বদলাচ্ছে, কিন্তু মানুষের জীবনের মৌলিক সমস্যা থেকে যাচ্ছে একই জায়গায়। শ্রমিক বঞ্চিত হচ্ছে ন্যায্য মজুরি থেকে, কৃষক পাচ্ছে না ফসলের ন্যায্য দাম। শিক্ষা ও চিকিৎসা সবার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাকস্বাধীনতা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। রাজনীতি পরিণত হয়েছে কেবল ক্ষমতার খেলায়। আর এই সুযোগে দেশের সম্পদ তুলে দেওয়া হচ্ছে বিদেশি লুটেরাদের হাতে।

এই বাস্তবতায় তরুণদের মনে প্রশ্ন জাগে— কে আমাদের পথ দেখাবে? কোন রাজনীতি আমাদের মুক্তি দিতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তরে ফিরে তাকাতে হয় ইতিহাসের বুকে খচিত এক সংগ্রামী নারীর দিকে, যিনি ছিলেন এক সাহসিনী, এক অনড় বিপ্লবী, এক কমিউনিস্ট — কমরেড অণিমা সিংহ।

১৯২৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের এক শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অণিমা সিংহ। বাবা ছিলেন চিকিৎসক, মা শিক্ষিত ও প্রগতিশীল। ছোটবেলা থেকেই দুই ভাইয়ের মাধ্যমে যুক্ত হন ব্রিটিশবিরোধী রাজনীতিতে। সিলেট মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময় সক্রিয়ভাবে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। সামাজিক রক্ষণশীলতার গণ্ডি ভেঙে মায়ের সহায়তায় রাজনীতির ময়দানে নামেন। ছাত্রজীবনে মার্কসবাদে দীক্ষা নিয়ে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। তখন থেকেই তাঁর লক্ষ্য ছিল স্পষ্ট— শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি মানুষের মুক্তি।

গ্রামে গ্রামে ঘুরে, কৃষকদের ঘরে ঘরে, মাঠে-ময়দানে লড়াই করে তিনি গড়ে তোলেন কৃষক আন্দোলনের ভিত্তি। ১৯৫০ সালে টংক প্রথার বিরুদ্ধে হাজং কৃষকদের ঐতিহাসিক বিদ্রোহে তিনি সম্মুখভাগে নেতৃত্ব দেন। পুলিশি ধরপাকড়, অনাহার, পাহাড়ে আত্মগোপন— সব বাধা পেরিয়ে তিনি পৌঁছে যান প্রতিরোধের অগ্নিকেন্দ্রে। যখন পুলিশ এলাকা ঘিরে ফেলে, তখনও তিনি রাতের অন্ধকারে সেই ঘেরাও ভেঙে প্রবেশ করেন— প্রতিরোধের আগুন জ্বালাতে।

পাকিস্তান সরকার বাধ্য হয় টংক প্রথা বাতিল করতে, কিন্তু তখন কমিউনিস্ট পার্টিকেও করে নিষিদ্ধ। শুরু হয় দমন-পীড়ন, পরিবার দেশত্যাগে বাধ্য— কিন্তু অণিমা সিংহ দেশ ছাড়েননি। তিনি আত্মগোপনে থেকেও পড়াশোনা চালিয়ে যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। গোপনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন বিপ্লবী কমরেড মণি সিংহের সঙ্গে— যেন দুটি বিপ্লবী নদীর মিলন ঘটে এক মোহনায়।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যান ত্রিপুরায়, শরণার্থী শিবিরে সংগঠক হিসেবে কাজ করেন। দেশ স্বাধীন হলে তিনি বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সম্পাদিকা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে নিজ হাতে রুটি বানিয়ে বিতরণ করেন— কারণ তাঁর কাছে বিপ্লব মানে শুধু মিটিং-মিছিল নয়, মানুষের কষ্টে পাশে দাঁড়ানো, ক্ষুধার্থের মুখে খাবার তুলে দেওয়া।

কমরেড অণিমা সিংহ আজও প্রাসঙ্গিক— কারণ তিনি ছিলেন নিপীড়িত জনগণের পক্ষে দাঁড়ানো বিকল্প রাজনীতির প্রতীক। তিনি দেখিয়ে গেছেন, নারী মানেই দুর্বল নয়— নারীও হতে পারে বিপ্লবের অগ্রসেনানী। তিনি শিখিয়েছেন, কৃষক-শ্রমিকের পাশে দাঁড়াতে হলে তাদের জীবনের অংশ হয়ে উঠতে হয়। তিনি প্রমাণ করেছেন, বিপ্লব কেবল ক্ষমতা দখলের লড়াই নয়, এটি আদর্শ, আত্মত্যাগ আর ন্যায়ের পক্ষে অটল থাকার সংগ্রাম।

কমরেড অণিমা সিংহ শেখান বাস্তব সংগ্রামের চর্চা। তিনি আজকের তরুণদের জন্য প্রেরণা, যারা সমাজ বদলাতে চায়, যারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়তে চায়, যারা বুঝতে চায়— কমিউনিজম মানে কেবল তাত্ত্বিক চর্চা নয়, এটি জীবনযাপন, এটি মানুষ গড়ার কাজ।

 

১৯৮০ সালের জুন মাসে এক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ১ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর জীবন আমাদের শেখায়— নিজের অধিকার আদায় করতে হলে লড়াই করতে হয়, বাধা যত কঠিন হোক, সংগ্রাম ছাড়া কোন মুক্তি নেই। আপনার শিক্ষার অধিকার, আপনার শ্রমের মূল্য, ফসলের ন্যায্য দাম, চিকিৎসা, বাসস্থান— সবকিছুর জন্য লড়াই করতে হবে, সংগঠিত হতে হবে। এইটাই কমরেড অণিমা সিংহের শিক্ষা। এইটাই কমিউনিস্ট রাজনীতির পথ।

তিনি অমর, তিনি প্রেরণা, তিনি চেতনার দীপ্ত আগুন। আজ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা,

বিপ্লবী কমরেড অণিমা সিংহ- লাল সালাম ।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

কালিয়াকৈরে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ১০ হাজার গাছের চা’রা বিত’রণ

নতুন প্র’জ’ন্মের ভা’বনা’য় ক’মরে’ড অণিমা সিং’হ — প্রা’সঙ্গি’ক এক বিপ্ল’বী আদ’র্শ”

আপডেট সময় : 02:44:38 pm, Tuesday, 1 July 2025

মোরশেদ আলম,

আজকের তরুণ সমাজ নানা বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে পথ খুঁজে ফিরছে। লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক-যুবতী কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা না পেয়ে হতাশায় ডুবে যাচ্ছে। কেউ কেউ অবক্ষয়ের পথে পা বাড়াচ্ছে। সরকার বদলাচ্ছে, কিন্তু মানুষের জীবনের মৌলিক সমস্যা থেকে যাচ্ছে একই জায়গায়। শ্রমিক বঞ্চিত হচ্ছে ন্যায্য মজুরি থেকে, কৃষক পাচ্ছে না ফসলের ন্যায্য দাম। শিক্ষা ও চিকিৎসা সবার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাকস্বাধীনতা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। রাজনীতি পরিণত হয়েছে কেবল ক্ষমতার খেলায়। আর এই সুযোগে দেশের সম্পদ তুলে দেওয়া হচ্ছে বিদেশি লুটেরাদের হাতে।

এই বাস্তবতায় তরুণদের মনে প্রশ্ন জাগে— কে আমাদের পথ দেখাবে? কোন রাজনীতি আমাদের মুক্তি দিতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তরে ফিরে তাকাতে হয় ইতিহাসের বুকে খচিত এক সংগ্রামী নারীর দিকে, যিনি ছিলেন এক সাহসিনী, এক অনড় বিপ্লবী, এক কমিউনিস্ট — কমরেড অণিমা সিংহ।

১৯২৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের এক শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অণিমা সিংহ। বাবা ছিলেন চিকিৎসক, মা শিক্ষিত ও প্রগতিশীল। ছোটবেলা থেকেই দুই ভাইয়ের মাধ্যমে যুক্ত হন ব্রিটিশবিরোধী রাজনীতিতে। সিলেট মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময় সক্রিয়ভাবে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। সামাজিক রক্ষণশীলতার গণ্ডি ভেঙে মায়ের সহায়তায় রাজনীতির ময়দানে নামেন। ছাত্রজীবনে মার্কসবাদে দীক্ষা নিয়ে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। তখন থেকেই তাঁর লক্ষ্য ছিল স্পষ্ট— শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি মানুষের মুক্তি।

গ্রামে গ্রামে ঘুরে, কৃষকদের ঘরে ঘরে, মাঠে-ময়দানে লড়াই করে তিনি গড়ে তোলেন কৃষক আন্দোলনের ভিত্তি। ১৯৫০ সালে টংক প্রথার বিরুদ্ধে হাজং কৃষকদের ঐতিহাসিক বিদ্রোহে তিনি সম্মুখভাগে নেতৃত্ব দেন। পুলিশি ধরপাকড়, অনাহার, পাহাড়ে আত্মগোপন— সব বাধা পেরিয়ে তিনি পৌঁছে যান প্রতিরোধের অগ্নিকেন্দ্রে। যখন পুলিশ এলাকা ঘিরে ফেলে, তখনও তিনি রাতের অন্ধকারে সেই ঘেরাও ভেঙে প্রবেশ করেন— প্রতিরোধের আগুন জ্বালাতে।

পাকিস্তান সরকার বাধ্য হয় টংক প্রথা বাতিল করতে, কিন্তু তখন কমিউনিস্ট পার্টিকেও করে নিষিদ্ধ। শুরু হয় দমন-পীড়ন, পরিবার দেশত্যাগে বাধ্য— কিন্তু অণিমা সিংহ দেশ ছাড়েননি। তিনি আত্মগোপনে থেকেও পড়াশোনা চালিয়ে যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। গোপনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন বিপ্লবী কমরেড মণি সিংহের সঙ্গে— যেন দুটি বিপ্লবী নদীর মিলন ঘটে এক মোহনায়।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যান ত্রিপুরায়, শরণার্থী শিবিরে সংগঠক হিসেবে কাজ করেন। দেশ স্বাধীন হলে তিনি বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সম্পাদিকা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে নিজ হাতে রুটি বানিয়ে বিতরণ করেন— কারণ তাঁর কাছে বিপ্লব মানে শুধু মিটিং-মিছিল নয়, মানুষের কষ্টে পাশে দাঁড়ানো, ক্ষুধার্থের মুখে খাবার তুলে দেওয়া।

কমরেড অণিমা সিংহ আজও প্রাসঙ্গিক— কারণ তিনি ছিলেন নিপীড়িত জনগণের পক্ষে দাঁড়ানো বিকল্প রাজনীতির প্রতীক। তিনি দেখিয়ে গেছেন, নারী মানেই দুর্বল নয়— নারীও হতে পারে বিপ্লবের অগ্রসেনানী। তিনি শিখিয়েছেন, কৃষক-শ্রমিকের পাশে দাঁড়াতে হলে তাদের জীবনের অংশ হয়ে উঠতে হয়। তিনি প্রমাণ করেছেন, বিপ্লব কেবল ক্ষমতা দখলের লড়াই নয়, এটি আদর্শ, আত্মত্যাগ আর ন্যায়ের পক্ষে অটল থাকার সংগ্রাম।

কমরেড অণিমা সিংহ শেখান বাস্তব সংগ্রামের চর্চা। তিনি আজকের তরুণদের জন্য প্রেরণা, যারা সমাজ বদলাতে চায়, যারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়তে চায়, যারা বুঝতে চায়— কমিউনিজম মানে কেবল তাত্ত্বিক চর্চা নয়, এটি জীবনযাপন, এটি মানুষ গড়ার কাজ।

 

১৯৮০ সালের জুন মাসে এক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ১ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর জীবন আমাদের শেখায়— নিজের অধিকার আদায় করতে হলে লড়াই করতে হয়, বাধা যত কঠিন হোক, সংগ্রাম ছাড়া কোন মুক্তি নেই। আপনার শিক্ষার অধিকার, আপনার শ্রমের মূল্য, ফসলের ন্যায্য দাম, চিকিৎসা, বাসস্থান— সবকিছুর জন্য লড়াই করতে হবে, সংগঠিত হতে হবে। এইটাই কমরেড অণিমা সিংহের শিক্ষা। এইটাই কমিউনিস্ট রাজনীতির পথ।

তিনি অমর, তিনি প্রেরণা, তিনি চেতনার দীপ্ত আগুন। আজ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা,

বিপ্লবী কমরেড অণিমা সিংহ- লাল সালাম ।