
মোঃ মাসুদ রানা মনি লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি।।
চলতি রবি মৌসুমের শুরুতে লক্ষ্মীপুরে সার সংকট দেখা দিয়েছে। সংকট দেখিয়ে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষক কুল চরম হতাশায় ভুগছে। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে লক্ষ্মীপুরে ডিলার, সাব-ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। বিশেষ করে ইউরিয়া, ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ও মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে
সার বিক্রির সময় কৃষকদের ক্যাশ মেমো দেওয়ার বিধান থাকলেও ডিলাররা (পরিবেশক)কৃষকদেরকে কোন ক্যাশ মেমো দিচ্ছেনা বলে লক্ষ্মীপুরের কৃষক আবদুজ জাহের এবং খুচরা বিক্রেতা মাজেদ ও বাতেন জানান। তবে কৃষক এবং ডিলাররা সারের দাম বৃদ্ধির অভিযোগ করলেও কৃষি কর্মকর্তারা সারের দাম বৃদ্ধির কথা মানতে রাজি না।
কৃষকদের অভিযোগ,রবি মৌসুমের শুরুতে সংকট দেখিয়ে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন উপজেলায় ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। সার কেনায় বেশি টাকা ব্যয় হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
বেশি দামে সার ক্রয় করলেও কোন কৃষকই জানে না, সারের সরকারি মূল্য কত? কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর বাজারে সাব ডিলার হিসাবে সার বিক্রি করছেন মোঃ আবদুল মাজেদ। সারের অতিরিক্ত দামে এ বিক্রেতাও চিন্তিত। তিনি জানিয়েছেন প্রতি মৌসুমের শুরুতে হঠাৎ করে সংকট দেখিয়ে সারের দাম বেড়ে যায়। চলতি মৌসুমে গত নভেম্বর থেকে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সার।
মাজেদ জানান, বর্তমানে ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা দেশীয় ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি)র দাম বেড়েছে সাড়ে ১১শ টাকার বেশি। পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ২৫শ টাকায়। তবে খুচরায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। গত বছর ৫০ কেজির মূল্য ছিল ১৩৫০ টাকা। বিএডিসির এক বস্তা টিএসপি সারে বেড়েছে ১৫০ টাকা, মিউরেট অব পটাশ (এমওপি)তে বেড়েছে ১০০ টাকা। অন্যদিকে দেশীয় ডাই অ্যামোনিয়াম ফটপেট (ড্যাপ) সারের ৫০ কেজিতে দাম বেড়েছে ৮শ ৫০ টাকা, বিএডিসির ড্যাপে দাম বেড়েছে সাড়ে চারশত টাকা। দাম বেড়েছে ইউরিয়া সারেরও।
সদর উপজেলার চর মনসা গ্রামের সবজি চাষী আবুল বারাকাত জানান, তিনি চলতি সপ্তাহে ইউরিয়া সার কিনেছেন প্রতি কেজি ৩৫ টাকা দামে, টিএসপি ৭০ টাকা প্রতি কেজি। অন্যদিকে ড্যাব সার ৩০,৪০,৫০ টাকা দামে ক্রয় করতে হয়েছে।
কৃষক বারাকাত, মোশারেফর এবং সবুজের অভিযোগ খুব নিরবেই সকল সারের দামে প্রায় ৩০-৪০ ভাগ বেড়ে গেছে। সারের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যথ্যা নেই। কৃষকরা বেশি দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
লক্ষ্মীপুরের সারের ডিলার আক্তার এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মোঃ আরিফ জানায়, বিভিন্ন কারখানায় অগ্রিম টাকা দিয়েও সময় মতো সার উত্তোলন করা যাচ্ছে না। কিছু কিছু সারে প্রায় সংকট থাকে।
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ পরিচালক সোহেল মোঃ শামছুদ্দিন ফিরোজ বলেন, সারের কোন সংকট নেই। অতিরিক্ত দামে সার বিক্রির কোন অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। তিনি আরো বলেন, কৃষকরা যদি ক্যাশ মোমো দেখাতে পারে তবে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।