Dhaka , Wednesday, 15 January 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
সাভারে দুই পেশাদার ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।।  নতুন বই না পেয়ে কার্যালয়ে সহকারী হিসাব রক্ষককে লাঞ্ছিত।। সরাইল উপজেলা নবগঠিত বিএনপি কমিটির বিরুদ্ধে ঝাড়ু।। রামগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপির যৌথ প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত।। কাস্টমস হাউসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মানববন্ধনে বক্তারা।। ঝিনাইগাতী বিপুল পরিমাণ মাদকসহ গ্রেপ্তার ৪।। মেহেরপুরে আলু উত্তোলন শুরু দাম নিয়ে হতাশা।। খুলনা জেলার শ্রেষ্ঠ ওসির সম্মাননায় ভূষিত হলেন- ওসি সবজেল হোসেন।। তামাকজাত পণ্য থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের চেয়ে চিকিৎসায় ব্যয় বেশি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা।। নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে বিলোনিয়া এবং রামগড় স্থলবন্দর সংক্রান্ত কমিটি গঠন।। আনসার বাহিনীকে আরো প্রশিক্ষিত করে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।। বনের গাছ কেটে সরকারি জায়গায় যুবদল নেতার হোটেল নির্মাণ রূপগঞ্জে তানযীমুল মাদারিসিল ক্বওমিয়্যাহ উদ্যোগে মুহতামিম সম্মেলন।। মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় চন্দ্রপাড়া দরবার শরীফে ওরছ অনুষ্ঠিত।। কক্সবাজারে টিপু হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত তিন আসামি গ্রেফতার ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার- প্রেস ব্রিফিং – পুলিশ সুপার কক্সবাজার।। নারায়ণগঞ্জে কুন প্রস্তুতকারি কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ড।। মহেশখালীতে নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে -জীবিকার উপকরণ বিতরণ।। কুমিরমারা বাইতুন নূর জামে মসজিদের বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত।। মেহেরপুরে জেলা বিএনপির জনসভা অনুষ্ঠিত।। দেবহাটার সুশীলগাঁতী ও টাউনশ্রীপুর গ্রামকে স্বাস্থ্যকর ঘোষণা।। জিয়া সাইবার ফোর্সের উপদেষ্টাকে ভাঙ্গায় গণসংবর্ধনা।। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ৩০ মিনিট পরে মাটি চাপা পড়া শ্রমিক জীবিত উদ্ধার।। মুজিবনগরে ১৮টি স্বর্ণের বারসহ ভারতীয় নাগরিক আটক।। থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের মাঝে কম্বল বিতরণকালে ডা. শাহাদাত হোসেন।। হাটহাজারিতে মন্দির চুরির ঘটনার প্রধান আসামি গ্রেফতার।। সীমান্ত পরিস্থিতি এখন মোটামুটি স্বাভাবিক- স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা।। বায়ুদূষণরোধে অভিযান অব্যাহত জরিমানা ২৪ লক্ষাধিক টাকা ৯ ভাটা বন্ধকরণসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সতর্কতা।। কারেন্ট জাল নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করে বা কাউকে শাস্তি দিয়ে সমস্যা সমাধান করা যাবে না- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা।। ঠাকুরগাঁও পাসপোর্ট অফিসের একাউন্টেন্ট ঘুষ নেওয়ার সময় দুদকের হাতে  আটক।। রামগঞ্জ প্রাইভেট হসপিটাল ও ক্লিনিক ওনার্স এসোসিয়েশনের পরিচিতি সভা।।

গাজীপুর সাভার আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় অস্থিরতা কেন।।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 05:17:49 am, Wednesday, 4 September 2024
  • 83 বার পড়া হয়েছে

গাজীপুর সাভার আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় অস্থিরতা কেন।।

মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ 
সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টার।।
গাজীপুর- আশুলিয়া ও সাভারে তৈরি পোশাক কারখানায় অস্থিরতার নেপথ্যে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ঝুট ব্যবসা বলে জানা গেছে। তারা কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিক অসন্তোষকে কাজে লাগিয়েছেন। এই অভিযোগ খোদ পোশাক শ্রমিক নেতাদের। তবে মালিকরা বলছেন দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে তৃতীয় পক্ষ এখানে সক্রিয়।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সোমবার -৩ সেপ্টেম্বর- রাত থেকেই সেনাবাহিনীসহ যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করে। মঙ্গলবারও কিছু পোশাক কারখানা বন্ধ থাকলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ ও শ্রমিক নেতারা।
শ্রমিক নেতারা মঙ্গলবার শিল্প উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠক শেষে তারা পোশাক শ্রমিকদের শান্ত থেকে কাজে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে শিল্প মালিকরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে সরকারকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে শিল্পের নিরাপত্তা চেয়েছেন।
বাংলাদেশ পোশাক শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান বলেন, কিছু পোশাক কারখানায় অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যা আছে। সেটা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ছিলে। কিছু কারখানায় বেতন বকেয়া- হাজিরা- বোনাস- টিফিন ভাতা ও শ্রমিক ছাঁটাই নিয়ে অন্তোষ ছিলো। এটা নিয়ে কয়েকদিন ধরে কিছুটা শ্রমিক অসন্তোষ ছিলো। কিন্তু সোমবার যে ৫০টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যায় তা নিরাপত্তার কারণে। বহিরাগতরা বিভিন্ন পোশাক কারখানায় হামলা চালালে ওই কারখানাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।
তিনি বলেন- সরকার পরিবর্তনের পরও ঝুট ব্যবসার আধিপত্য ধরে রাখতে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা বহিরাগতদের দিয়ে পোশাক কারখানায় হামলা চালায়। পোশাক কারাখানার ওয়েসটেজ এই ঝুট ব্যবসায় আছে কোটি কোটি টাকা। আর এই ব্যবসা রাজনৈতিক প্রভাবশালীরাই নিয়ন্ত্রণ করেন।
কয়েকদিন আগে থেকে পোশাক কারখানা এলাকায় অস্থিরতা শুরু হলেও ১ সেপ্টেম্বর প্রথম ১০টি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়, ওইদিন কয়েকটি কারখানায় হামলা হয়। ২ সেপ্টেম্বর পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটে। হামলার কারণে ৫০টি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবারও ১০টির মতো কারখানা বন্ধ ছিলো। তারা নিরাপত্তার কারণে কারখানা খোলেনি।
এই পরিস্থিতির শুরু হয় বিভিন্ন সময় ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে। তারা চাকরিচ্যুতদের কাজে ফিরিয়ে নেওয়া এবং পোশাক কারখানায় কমপক্ষে ৫০ ভাগ পুরুষ নিয়োগের দাবিতে কয়েকদিন আগে আন্দোলন শুরু করেন। বাংলাদেশে পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের প্রায় ৮০ ভাগ নারী। ‘বেকার আন্দোলন’ নামের ওই সংগঠনের নেতা শহীন আহমদে বলেন- তবে পোশাক কারখানায় যারা হামলা করেছে তারা আমাদের কেউ নয়। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছিলাম। যারা হামলা করেছে তারা বহিরাগত। তাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য আছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশনের সভাপতি সরোয়ার হোসেন বলেন- কারা ক্ষমতায় আসলো আর কারা ক্ষমতা ছাড়লো সেটা আমাদের বিষয় নয়। আমরা শ্রমিকরা শিল্প উৎপাদন ঠিক রাখতে চাই। আমাদের শ্রমিকদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে সেগুলো আমরা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আদায় করতে চাই। কিন্তু এখন যারা পোশাক কারখানায় হামলা করেছে তারা কোনো শ্রমিক নয়। কোনো একটি গোষ্ঠী এই খাতকে অস্থিতিশীল করতে এই হামলা চালিয়েছে। আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো কর্মসূচিও দেইনি। কোনো কোনো পোশাক কারখানায় অভ্যন্তরীণ কর্মসূচি ছিলো। তারই সুযোগ নিয়েছে হামলাকারীরা।
গাজীপুর- আশুলিয়া ও সাভারে দেড় হাজারের বেশি পোশাক কারখানা আছে। একটি কারখানার শ্রমিকরা বাইরে এলেই এক-দেড় হাজার শ্রমিকের বিক্ষোভে পরিণত হয়। মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান বলেন- কোনো কারখানার শ্রমিকরা বাইরে আসেনি। তারপরও হামলা কারা করলো সেটা তদন্ত হওয়া দরকার।
তিনি আরও বলেন- শিল্প উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন শ্রমিকদের যে যৌক্তিক দাবি আছে তা ধীরে ধীরে পূরণ করা হবে। তাদের সময় দিতে হবে। আর এর সাথে ২০২৩ সালে ২০ হাজার শ্রমিককে আসামি করে যে ৪৩টি মামলা হয়েছে তা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেছি।
আশুলিয়া এলাকায় মঙ্গলবারও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। তারা কিছুক্ষণের জন্য সড়ক অবরোধ করেন।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশের এসপি মোহাম্মদ সারোয়ার আলম জানান- মঙ্গলবার তিন-চারটি কাখানায় কিছুটা ঝামেলা ছিলো। আগের দিন বন্ধ করে দেয়া ওই কারাখানাগুলো মঙ্গলবারও না খোলায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। রাস্তার পাশের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সড়কও অবেরোধ করেন। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। 
তিনি বলেন- সোমবার রাত থেকেই পুলিশ ও সেনা সদস্যরা যৌথ অভিযান শুরু করে। এখনো কারখানার নিরাপত্তায় টহল অব্যাহত আছে।
এদিকে মঙ্গলবার গাজীপুরে চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে বেশ কয়েকটি স্থানে পোশাক শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। সকালে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা গাজীপুর মহানগরীর ভোগরা বাইপাস, ছয়দানা- হাজির পুকুর- মালেকের বাড়ি, সাইনবোর্ড এলাকায় বিক্ষোভ করেন। শ্রমিক বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে শ্রমিকদের ইট-পাটকেলে শিল্প পুলিশের এএসপি মোশরাফ হোসেনসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত এসপি ইমরান হোসেন বলেন, সকাল থেকেই গাজীপুরের বেশ কয়েকটি স্থানে বিভিন্ন পোশাক কারখানার চাকরিচ্যুত শ্রমিকেরা চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে যানবাহন চলাচলে বাধা দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন- পোশাক কারখানায় সমস্যা কিছু না কিছু সবসময়ই থাকে। আমরা সেটা অভ্যন্তরীণভাবে সমাধান করি। কিন্তু এবার যা ঘটেছে তা অপ্রত্যাশিত। আমরা মনে করি এর সঙ্গে শ্রমিকরা জড়িত নয়। তৃতীয় কোনো পক্ষ যারা অস্থিতিশীল পরিবেশ করতে চায় তারা এটা করেছে। তাদের চিহ্নিত করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি।
তিনি জানান- সরকার ব্যবস্থা নেয়ার পর মঙ্গলবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। মঙ্গলবার অল্প কিছু কারখানায় সমস্যা হয়েছে। বিভিন্ন সময় চাকরিচ্যুতরা এই সমস্যা করছে। আসলে হায়ার এন্ড ফায়ার একটা স্বাভাবিক ঘটনা। বেতন নিয়ে কোনো সমস্যা নাই।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

সাভারে দুই পেশাদার ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।।

গাজীপুর সাভার আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় অস্থিরতা কেন।।

আপডেট সময় : 05:17:49 am, Wednesday, 4 September 2024
মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ 
সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টার।।
গাজীপুর- আশুলিয়া ও সাভারে তৈরি পোশাক কারখানায় অস্থিরতার নেপথ্যে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ঝুট ব্যবসা বলে জানা গেছে। তারা কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিক অসন্তোষকে কাজে লাগিয়েছেন। এই অভিযোগ খোদ পোশাক শ্রমিক নেতাদের। তবে মালিকরা বলছেন দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে তৃতীয় পক্ষ এখানে সক্রিয়।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সোমবার -৩ সেপ্টেম্বর- রাত থেকেই সেনাবাহিনীসহ যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করে। মঙ্গলবারও কিছু পোশাক কারখানা বন্ধ থাকলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ ও শ্রমিক নেতারা।
শ্রমিক নেতারা মঙ্গলবার শিল্প উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠক শেষে তারা পোশাক শ্রমিকদের শান্ত থেকে কাজে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে শিল্প মালিকরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে সরকারকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে শিল্পের নিরাপত্তা চেয়েছেন।
বাংলাদেশ পোশাক শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান বলেন, কিছু পোশাক কারখানায় অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যা আছে। সেটা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ছিলে। কিছু কারখানায় বেতন বকেয়া- হাজিরা- বোনাস- টিফিন ভাতা ও শ্রমিক ছাঁটাই নিয়ে অন্তোষ ছিলো। এটা নিয়ে কয়েকদিন ধরে কিছুটা শ্রমিক অসন্তোষ ছিলো। কিন্তু সোমবার যে ৫০টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যায় তা নিরাপত্তার কারণে। বহিরাগতরা বিভিন্ন পোশাক কারখানায় হামলা চালালে ওই কারখানাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।
তিনি বলেন- সরকার পরিবর্তনের পরও ঝুট ব্যবসার আধিপত্য ধরে রাখতে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা বহিরাগতদের দিয়ে পোশাক কারখানায় হামলা চালায়। পোশাক কারাখানার ওয়েসটেজ এই ঝুট ব্যবসায় আছে কোটি কোটি টাকা। আর এই ব্যবসা রাজনৈতিক প্রভাবশালীরাই নিয়ন্ত্রণ করেন।
কয়েকদিন আগে থেকে পোশাক কারখানা এলাকায় অস্থিরতা শুরু হলেও ১ সেপ্টেম্বর প্রথম ১০টি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়, ওইদিন কয়েকটি কারখানায় হামলা হয়। ২ সেপ্টেম্বর পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটে। হামলার কারণে ৫০টি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবারও ১০টির মতো কারখানা বন্ধ ছিলো। তারা নিরাপত্তার কারণে কারখানা খোলেনি।
এই পরিস্থিতির শুরু হয় বিভিন্ন সময় ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে। তারা চাকরিচ্যুতদের কাজে ফিরিয়ে নেওয়া এবং পোশাক কারখানায় কমপক্ষে ৫০ ভাগ পুরুষ নিয়োগের দাবিতে কয়েকদিন আগে আন্দোলন শুরু করেন। বাংলাদেশে পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের প্রায় ৮০ ভাগ নারী। ‘বেকার আন্দোলন’ নামের ওই সংগঠনের নেতা শহীন আহমদে বলেন- তবে পোশাক কারখানায় যারা হামলা করেছে তারা আমাদের কেউ নয়। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছিলাম। যারা হামলা করেছে তারা বহিরাগত। তাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য আছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশনের সভাপতি সরোয়ার হোসেন বলেন- কারা ক্ষমতায় আসলো আর কারা ক্ষমতা ছাড়লো সেটা আমাদের বিষয় নয়। আমরা শ্রমিকরা শিল্প উৎপাদন ঠিক রাখতে চাই। আমাদের শ্রমিকদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে সেগুলো আমরা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আদায় করতে চাই। কিন্তু এখন যারা পোশাক কারখানায় হামলা করেছে তারা কোনো শ্রমিক নয়। কোনো একটি গোষ্ঠী এই খাতকে অস্থিতিশীল করতে এই হামলা চালিয়েছে। আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো কর্মসূচিও দেইনি। কোনো কোনো পোশাক কারখানায় অভ্যন্তরীণ কর্মসূচি ছিলো। তারই সুযোগ নিয়েছে হামলাকারীরা।
গাজীপুর- আশুলিয়া ও সাভারে দেড় হাজারের বেশি পোশাক কারখানা আছে। একটি কারখানার শ্রমিকরা বাইরে এলেই এক-দেড় হাজার শ্রমিকের বিক্ষোভে পরিণত হয়। মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান বলেন- কোনো কারখানার শ্রমিকরা বাইরে আসেনি। তারপরও হামলা কারা করলো সেটা তদন্ত হওয়া দরকার।
তিনি আরও বলেন- শিল্প উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন শ্রমিকদের যে যৌক্তিক দাবি আছে তা ধীরে ধীরে পূরণ করা হবে। তাদের সময় দিতে হবে। আর এর সাথে ২০২৩ সালে ২০ হাজার শ্রমিককে আসামি করে যে ৪৩টি মামলা হয়েছে তা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেছি।
আশুলিয়া এলাকায় মঙ্গলবারও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। তারা কিছুক্ষণের জন্য সড়ক অবরোধ করেন।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশের এসপি মোহাম্মদ সারোয়ার আলম জানান- মঙ্গলবার তিন-চারটি কাখানায় কিছুটা ঝামেলা ছিলো। আগের দিন বন্ধ করে দেয়া ওই কারাখানাগুলো মঙ্গলবারও না খোলায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। রাস্তার পাশের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সড়কও অবেরোধ করেন। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। 
তিনি বলেন- সোমবার রাত থেকেই পুলিশ ও সেনা সদস্যরা যৌথ অভিযান শুরু করে। এখনো কারখানার নিরাপত্তায় টহল অব্যাহত আছে।
এদিকে মঙ্গলবার গাজীপুরে চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে বেশ কয়েকটি স্থানে পোশাক শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। সকালে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা গাজীপুর মহানগরীর ভোগরা বাইপাস, ছয়দানা- হাজির পুকুর- মালেকের বাড়ি, সাইনবোর্ড এলাকায় বিক্ষোভ করেন। শ্রমিক বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে শ্রমিকদের ইট-পাটকেলে শিল্প পুলিশের এএসপি মোশরাফ হোসেনসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত এসপি ইমরান হোসেন বলেন, সকাল থেকেই গাজীপুরের বেশ কয়েকটি স্থানে বিভিন্ন পোশাক কারখানার চাকরিচ্যুত শ্রমিকেরা চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে যানবাহন চলাচলে বাধা দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন- পোশাক কারখানায় সমস্যা কিছু না কিছু সবসময়ই থাকে। আমরা সেটা অভ্যন্তরীণভাবে সমাধান করি। কিন্তু এবার যা ঘটেছে তা অপ্রত্যাশিত। আমরা মনে করি এর সঙ্গে শ্রমিকরা জড়িত নয়। তৃতীয় কোনো পক্ষ যারা অস্থিতিশীল পরিবেশ করতে চায় তারা এটা করেছে। তাদের চিহ্নিত করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি।
তিনি জানান- সরকার ব্যবস্থা নেয়ার পর মঙ্গলবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। মঙ্গলবার অল্প কিছু কারখানায় সমস্যা হয়েছে। বিভিন্ন সময় চাকরিচ্যুতরা এই সমস্যা করছে। আসলে হায়ার এন্ড ফায়ার একটা স্বাভাবিক ঘটনা। বেতন নিয়ে কোনো সমস্যা নাই।