মো.ইমরান হোসেন
স্টাফ রিপোর্টার।।
গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বারবার লিফট দুর্ঘটনায় প্রায়ই হতাহতের ঘটনা ঘটছে। এ হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। হাসপাতালটির লিফট নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করা হয় কি না তা কমিশনের কাছে বোধগম্য নয়। তাই এই হাসপাতালের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের তলব করা হয়েছে।
জানাযায়- শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাত্র চার মাসের ব্যবধানে লিফটে প্রাণহানির ঘটনার পুনরাবৃত্তি অত্যন্ত অনভিপ্রেত ও উদ্বেগজনক। লিফটে কয়েকদিন ধরে ত্রুটি দেখা দেওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে লিফট চলমান রাখার যে অভিযোগ ওঠেছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় মর্মে কমিশন মনে করে। এ বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যাদি পর্যালোচনাপূর্বক স্বঃপ্রণোদিত অভিযোগ -সুয়োমটো- গ্রহণ করেছে।
উল্লেখ্য- নবজাতকের চিকিৎসা করাতে এসে জাহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি নিহত হন।
অপরদিকে- লিমা আক্তার নামের এক নারীর সদ্য ভূমিষ্ঠ কন্যার চিকিৎসার জন্য বাবা জাহিদুল ইসলাম তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে মেয়েকে ভর্তি করেছে। লিফট ১১ তলায় থাকলেও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ১০ তলায় দরজা খুলে যায়। তবে পাটাতন না থাকায় পা দেওয়ার পরই নিচতলায় পড়ে জাহিদুল ইসলাম মারা যান। নিহতের স্বজনের অভিযোগ- এই লিফটে গত কয়েক দিন ধরে সমস্যা থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এবং কাউকে সতর্কও করেনি। যদি লিফটটি নষ্ট হওয়ার কারণে বন্ধ থাকত বা লিফটম্যান উপস্থিত থাকতেন তাহলে হয়তো দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। এ বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, লিফট দুর্ঘটনার ঘটনাটি হাসপাতালের সমগ্র স্বাস্থ্য-সেবাসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও গাফলতি সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। জবাবদিহিতার সংস্কৃতি এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে পারে।
মানবাধিকার কমিশনের সুয়োমটোতে উল্লেখ রয়েছে- শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাত্র চার মাসের ব্যবধানে লিফটে প্রাণহানির ঘটনার পুনরাবৃত্তি অত্যন্ত অনভিপ্রেত ও উদ্বেগজনক। লিফটে কয়েকদিন ধরে ত্রুটি দেখা দেওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে লিফট চলমান রাখার যে অভিযোগ ওঠেছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় মর্মে কমিশন মনে করে।
বারবার লিফট দুর্ঘটনায় মৃত্যু যেন মানুষ মারার একটি ফাঁদে পরিণত করেছে। এর আগেও গত ১২ মে তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফটে ৪৫ মিনিট আটকে থেকে রোগীর মৃত্যু সংক্রান্ত সংবাদটি কমিশনের নজরে এলে ঘটনাটির সঠিক তদন্তপূর্বক কাদের অবহেলায় লিফটে ৪৫ মিনিট আটকে থেকে রোগীর মৃত্যু হলো তা শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনকে অবহিত করার জন্য মহাপরিচালক- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বলা হলেও এখন পর্যন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফট থেকে পড়ে বারবার মৃত্যুর মতো মর্মান্তিক ঘটনা ঘটছে সে বিষয়ে পরিচালক-শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল- নির্বাহী প্রকৌশলী- গণপূর্ত বিভাগ- গাজীপুর এবং নির্বাহী প্রকৌশলী- গণপূর্ত বিভাগ-গাজীপুর-কে কমিশনের বেঞ্চ-১ এর সভায় হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া জন্য বলা হয়েছে।