আব্দুর রাজ্জাক শাও।।
আমাদের এই আধুনিক যুগে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের ক্ষতিকর সামাজিক সমস্যা হলো মাদকাসক্তি। গোটা পৃথিবীর মানুষ মাদকের মরণ ব্যাধিতে আক্রান্ত। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও এ সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
‘বাংলাদেশ মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন – ১৯৮৯ মোতাবেক, মাদকাসক্ত বলতে দৈহিক বা মানসিকভাবে মাদক দ্রব্যের উপর নির্ভরশীল ব্যক্তি বা অভ্যাসবশে মাদকদ্রব্য ব্যবহারকারী ব্যাক্তিকে বোঝায়।
মাদকাসক্তির কারণ -কোন একটি নির্দিষ্ট কারণে কখনও সমস্যা সৃষ্টি হয় না। আধুনিক যুগে মাদক সেবন এমন ভাবে বিস্তার লাভ করেছে যে, গোটা সমাজ এর ভয়াবহতায় আতঙ্কিত।
পরিবারিক বিশৃঙ্খলা- পরিবারের বিশৃঙ্খল পরিবেশ শিশু কিশোরদের মধ্যে হতাশা ও নিরাপত্তাহীনতা বোধ সৃষ্টি করে। যে সকল পরিবারে শিশু কিশোরদের পিতা- মাতা ঝগড়া – বিবাদে লিপ্ত থাকে সেই সমস্ত শিশু কিশোরদের মধ্যে অনেকেই মাদকদ্রব্যের প্রতি আসক্ত হয়ে থাকে। এমনকি বাবা – মায়ের বিছিন্নতা ও শিশু – কিশোরদের মাদকের দিকে ঠেলে দেয়।
সঙ্গদোষ -যে কোন ব্যক্তিকে মাদকাসক্ত করতে সঙ্গদোষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যে কোন একজন নেশাগ্রস্ত হলে সে তার সঙ্গীদেরকে নেশার জগতে আনার জন্য চেষ্টা চালায়। একসময় সঙ্গীরাও নেশার জগতে চলে আসে।
অপসংস্কৃতি -নেশা বিস্তারের আর একটি কারণ হচ্ছে অপসংস্কৃতি। বিদেশী সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ- বিদেশী ছায়াছবি- ভি.সি.আর বিকৃত জীবন যাপন পদ্ধতি প্রভৃতি কারণে এদেশের সংস্কৃতিতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। ফলে আমাদের সমাজে বিশেষ করে তরুণেরা নেশার জগতে লিপ্ত হচ্ছে।
হতাশা ও ব্যর্থতা -যে কোন কিছু প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিফলতা বা অপ্রাপ্তি, ব্যর্থতা ও হতাশার সৃষ্টি করে। কোন কারণে তরুণদের মাঝে বঞ্চনা, হাতাশা ও ব্যর্থতার সৃষ্টি হলে তারা সহজেই নেশার প্রতি আকৃষ্ট হয়। তারা তাদের বিফলতা থেকে মুক্তির পথ খোঁজে। এমন কি শেষ পর্যন্ত মাদকাসক্ত হয়ে সফলতার স্বাদ পেতে চায়।
দরিদ্রতা ও বেকারত্ব- বাংলাদেশের ব্যপক দরিদ্রতা ও বেকারত্ব মানুষকে অসহায়ত্বের দিকে ঠেলে দেয়। বেকারত্বের যন্ত্রণা ভুলে থাকার জন্য তারা নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করে থাকে।