
মোঃ মাসুদ রানা মনি
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি।।
মাদকের করালগ্রাসে অতীষ্ট রামগঞ্জ পৌর এলাকার শ্রীপুর ও অভিরামপুর গ্রামের লোকজন এ ছাড়াও উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের আথাকরা, দেবনগর,লক্ষ্মীধর পাড়া সহ প্রত্যন্ত এলাকার উঠতি বয়সী কিশোর-তরুন যুবকরা মাদকের মারন নেশায় যেন বুদ হয়ে থাকে। প্রতিদিন বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদকের রমরমা বানিজ্য। রাত যত গভীর হয় ততই অপরিচিত মোটরসাইকেল আরোহীদের ভীড় দেখা দেয় এইসব এলাকায়। লক্ষ্মীধর পাড়া গ্রামের বিষ্ণুপুর রোডের খোকন মিয়ার বাগানে দিনের বেলায়ও বখাটের মাদক সেবন করতে দেখা যায়। এছাড়াও ভোলাকোট বিষ্ণুপুর রোড পোদ্দার রাস্তায় দিন রাত প্রতিনিয়ত মাদক সেবন চলে।শুধু মাত্র হাত বদল হয়ে ফেন্সিডিল-ইয়াবার মতো নেশাদ্রব্য চলে যায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে। অভিভাবকগণ তাদের সন্তানদের নিয়ে গত ১০-১২ বছর থেকে এক ধরনের আতঙ্কে দিন যাপন করতে বাধ্য হয়েছেন। কোনভাবেই যেন নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয়নি এ অবৈধ কার্যক্রম। বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এরই ধারাবাহিকতায় ৫ আগষ্ট পটপরিবর্তনের পরে অতীষ্ট এলাকাবাসী ফুসে উঠেন মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে। থানা পুলিশ- বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছে মাদকের বিষয়ে অভিযোগ দিলে চুনোপুটিরা পালিয়ে গেলেও তাদের দোসররা রয়েছে।
সম্প্রতি গত শুক্রবার -১১ অক্টোবর- রাত ১০টায় জোড় কবর সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় ছাত্রজনতা মিলে উক্ত এলাকার কুখ্যাত ইয়াবা ও মাদক কারবারি আরিফ হোসেন ওরফে রিয়াজ প্রকাশ কইলজ্জা ভূনা! কে ১০ পিস ইয়াবাসহ আটক করে। এসময় তার কাছ থেকে বেশ কিছু মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়।
ঐ ঘটনার পর থেকে আরিফের সহযোগিরা আরিফকে ছাড়িয়ে নিতে ব্যর্থ চেষ্টা করে। স্থানীয় কতিপয় রাজনীতিবিদরা বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করতে দফায় দফায় বৈঠক করেন। বিষয়টি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের জানালে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে আরিফের সহযোগিরা গা-ডাকা দেয়। পরে আরিফকে পুলিশকে সোপর্দ করা হয়।
পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছাত্র-জনতাকে সাথে নিয়ে শ্রীপুর বরকন্দাজ বাড়ির মাদক কারবারি আবদুর রশিদের বাড়িতে তল্লাশী চালায়। সেনাবাহিনী ও ছাত্রজনতার অভিযানের খবর পেয়ে আবদুর রশিদ পালিয়ে যায়।
আরিফকে আটকে সহযোগিতা করার অপরাধে রবিবার বিকেলে শ্রীপুর বেপারী বাড়ির হারুন বাহিনীর প্রধান হারুন ওরফে হেঞ্জা সহ কয়েকজন বাজারের ফার্মেসী ব্যবসায়ী রায়হানকে তার দোকানের সামনে এসে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে এবং পিলারের সাথে বেঁধে পেটানোর হুমকি দেয়। একই দিন গভীর রাতে দোকান থেকে বাড়ী যাওয়ার পথে মডেল কলেজ শিক্ষার্থী শান্তকে মুখোশধারী অজ্ঞাত ব্যক্তি তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করে। ১৫ অক্টোবর দিবাগত রাত ৩টার দিকে রায়হানের ঘরে অজ্ঞাত ৭-৮ জন লোক রাতের অন্ধকারে হামলা করে তার ঘরে প্রবেশের চেষ্টা করে জানালার কাঁচ ভেঙ্গে দেয়। এসময় ঘরে প্রবেশের জন্য দরজায় কয়েকবার আঘাত করা হয়। এসময় তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
গত বুধবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রীপুর বরকন্দাজ বাড়ীর আবদুর রশিদের বাড়ির সামনের একটি পরিত্যাক্ত ঘর থেকে আনুমানিক ৩-৪ কেজি ওজনের একটি গাঁজার পোটলা উদ্ধার করে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ফার্মেসী ব্যবসায়ী রায়হান আতঙ্কে দিন যাপন করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।