Dhaka , Friday, 28 March 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
খেটে খাওয়া মানুষদের নিয়ে বিরিশিরি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত জুলাই-আগস্ট আন্দোলন নোয়াখালীতে তারেক জিয়ার ঈদ উপহার পেল দৃষ্টিশক্তি হারানো আমজাদ লালমনিরহাটের আদিতমারী থেকে গাঁজাসহ গ্রেপ্তার ১ মোটিভেট ভূরুঙ্গামারীর সকল সদস্যের নিরলস পরিশ্রমে আজকের নবীন বরণ, পুরষ্কার বিতরণ ডাব পাড়তে ডেকে নিয়ে ভাতিজাকে হত্যা, চাচা আটক বাংলাদেশ প্রেসক্লাব, ফরিদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে ইফতার ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে ছুরি ধরে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩ রামগঞ্জে  টপসয়েল কাটার অপরাধে ১লাখ টাকা জরিমানা  রূপগঞ্জে আগারপাড়া যুব সমাজের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও ইফতার মাহফিল রূপগঞ্জে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতারণ ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ঘোষণা আদালতের শহীদ উমর ফারুক ব্লাড ডোনার সোসাইটি’র দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত  নরসিংদীর শিবপুরে যুবকের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শহীদদের মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে রূপগঞ্জ ঈদ উপহার, সেলাই মেশিন,ভ্যানগাড়ী বিতরন সিএমপি কর্তৃক বাংলাদেশ পুলিশ বার্ষিক আযান, ক্বিরাত ও রচনা চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা-২০২৫ এর পুরস্কার বিতরণ আমাদের সংকট এখনো শেষ হয় নাই- খলিলুর রহমান ইব্রাহিম  জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ২ জন হাতীবান্ধা থেকে ফেনসিডিলসহ এক মাদক কারবারি গ্রেপ্তার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে আটক ৩ জন নোয়াখালীতে পথচারীদের জন্য বিএনপি নেতার ইফতার  সীতাকুণ্ডে কৃষকদলের সম্পাদক নাসির উদ্দিনকে জবাই করে হত্যা মেহেরপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত ৩১ দফা বাস্তবায়নে সকল নেতা কর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য- কাজী মনিরুজ্জামান মনির নরসিংদীতে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন  মীর নোয়াবুল হক মেমোরিয়াল হাইস্কুলে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ১৭ বছর পর রামগঞ্জে প্রকাশ্যে বিএনপির ইফতার মাহফিল  কালীগঞ্জে ফেনসিডিলসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ  লালমনিরহাটে মর্যাদার সাথে মহান স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপন অসহায়,দূস্তদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ করলেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন

বর্ষা ধর্ষণ ও হত্যা ,আড়াই বছরেও মেলেনি ডিএনএ রিপোর্ট

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 04:38:51 pm, Tuesday, 11 March 2025
  • 16 বার পড়া হয়েছে

বর্ষা ধর্ষণ ও হত্যা ,আড়াই বছরেও মেলেনি ডিএনএ রিপোর্ট

ইসমাইল ইমন চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম নগরীর জামাল খানের চাঞ্চল্যকর শিশু বর্ষা ধর্ষন, হত্যা ও লাশ গোপনের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আসেনি প্রায় আড়াই বছরেও। আই.ও বলছেন ডিএনএ রিপোর্টের অপেক্ষায় তদন্ত ঝুলে আছে।

মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৬ষ্ট আদালতে বাদী ও ভিকটিম পক্ষে একাধিকবার তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট তলব এর আবেদন করেছে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইট ফাউন্ডেশন বিএইচআরএফ। কিন্তু ডিএনএ রিপোর্ট এর অপেক্ষায় তা ঝুলে আছে। মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন – বিএইচআরএফ মহাসচিব এডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান বলেন,শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলা সমূহ গুরুত্ব না দেয়ায় আজ একের পর এক নারকীয় শিশু ধর্ষণের মতো নৃশংস ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। একেরপর এক শুধু মামলার তারিখ পড়ছে। তাহলে ৩০ দিনে শিশু ধর্ষন মামলার বিচার সমাপ্ত করার সিদ্ধান্ত কে,কিভাবে বাস্তবায়ন করবে। তিনি মনে করেন আসামী পক্ষ প্রভাবশালী বিধায় কৌশলে তদন্তকে প্রলম্বিত করানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে দায়ী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা জরুরী। আগামী ১৭-৩-২৫ তদন্ত প্রতিবেদন এ-র জন্যে পরবর্তী দিন ধার্য আছে।
উল্লেখ্য নরপশু আসামী লক্ষন দাশ -৩০- কতৃক পাশবিক নির্যাতনে হত্যা করা হয়েছে শিশু মারজান হক বর্ষাকে। জোর পূর্বক ধর্ষণের সময় রক্তাক্ত সাত বছরের নিষ্পাপ শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর বস্তায় ভরে লাশ গোপন করে ফেলে দেওয়া হয় নর্দমায়। বস্তায় টিসিবির সীলের সূত্র ধরেই লাশ উদ্ধারের মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ ওই নরপশুকে পাকড়াও করে। পুলিশের জেরার মুখে ফুটফুটে বর্ষাকে নিষ্ঠুরতম নির্যাতনে খুনের দায় স্বীকার করেছে ওই মুদি দোকানের কর্মচারী লক্ষণ দাশ -৩০-।
আর এর মধ্যদিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর জামালখান এলাকায় সংগঠিত চাঞ্চল্যকর এবং নৃশংস শিশু বর্ষা হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়। আত্মস্বীকৃত খুনি-ধর্ষক এই পাষন্ডের ফাঁসি দাবি করেছেন বর্ষার স্বজন ও স্থানীয়রা। সামান্য একজন দোকান কর্মচারীর এমন ভয়ঙ্কর অপরাধে হতবাক জামালখানের স্থানীয় বাসিন্দারা। নগরীর ব্যস্ততম একটি এলাকায় একজন শিশুর প্রতি এমন নিষ্ঠুরতা নজিরবিহীন। ঘর থেকে বের হয়েই যদি এমন পাশবিকতার শিকার হতে হয় তা হলে এই নগরীতে কন্যা শিশুদের নিরাপত্তা কোথায়- এমন প্রশ্নও সবার মুখে মুখে।
পুলিশ বলছে- ভয়ঙ্কর অপরাধের পরও লক্ষণ ছিল নির্বিকার-নির্ভয়। তার মধ্যে বিন্দুমাত্র অনুশোচনাও দেখা যায়নি। ধর্ষণ, খুন আর লাশ গুমের মতো ঘটনা সংঘটিত করেও লক্ষন সেন ছিলো স্বাভাবিক ।

নগরীর কুসুম কুমারি সিটি কর্পোরেশন স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী মারজানা হক বর্ষা জামালখান লিচু বাগানস্থ সিকদার হোটেলের পাশের গলির বাসা থেকে চিপস কিনতে বের হয়। এরপর সে গলির মুখের দোকানে যায়। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হওয়ার পরও বর্ষা দোকান থেকে বাসায় ফিরে না আসায় তার পরিবারের সদস্যরা আশপাশ এলাকাসহ সম্ভাব্য স্থানে ব্যাপক খোঁজাখুঁজি করেন। খোঁজ না পেয়ে পরদিন তার বড় বোন ছালেহা আক্তার রুবী থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন। থানার উপ-পরিদর্শক সুজন দাশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। তিনি ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজসহ বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেন। এরমধ্যে বিকেলে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে জনৈক বেলাল হোসেন জামালখান লিচু বাগান সিকদার হোটেলের পিছনে ড্রেনের উপর বস্তাবন্দি শিশুর লাশ দেখতে পেয়ে থানায় সংবাদ দেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল সম্পন্ন করে লাশ চমেক হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। শিশুটির পরিবারের সদস্যরাও লাশ সনাক্ত করেন।

শিশু বর্ষার বাসার পাশেই লাশটি ফেলে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় বর্ষার মা ঝর্ণা বেগম বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করলে২৮/১০/২২ ইং রাতেই একটি মামলা রের্কড করা হয়। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় থানার এসআই মো. নওশের কোরেশীকে। পুলিশ জানায়, বস্তা কেটে লাশটি বের করার সময় বস্তার গায়ে টিসিবির সীল নজরে আসে। বস্তায় পেঁয়াজের খোসাও ছিল। এই সূত্র ধরে পুলিশ সাথে সাথে টিসিবির সীলযুক্ত বস্তায় মালামাল বিক্রি হয় এমন দোকান ও আশেপাশের বিভিন্ন রেস্তোরার গোডাউনে টিসিবির সীলযুক্ত বস্তা খুঁজতে শুরু করে। একপর্যায়ে শ্যামল স্টোর মুদি দোকানের গোডাউনে একটি খালি টিসিবির সীলযুক্ত বস্তা খুঁজে পাওয়া যায়। টিসিবির সীলযুক্ত বস্তাকে টার্গেট করে উক্ত দোকানের মালিক ও কোন কোন কর্মচারী কাজ করে তাদের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়। সেই সাথে ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ মিলিয়ে দেখা হয়। বস্তা ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনায় লক্ষণ দাশকে সন্দেহ করা হয়। এরপর তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে লক্ষণ স্বীকার করে মারজানা হক বর্ষাকে চিনতো। বিভিন্ন সময়ে দোকান থেকে চিপস, চকলেট দিত। ঘটনার দিন সে তাকে ১০০ টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় দোকানের গোডাউনে নিয়ে যায়। এরপর গোডাউনের ভিতরে থাকা চৌকিতে বসিয়ে বর্ষার কাপড়চোপড় খুলে ফ্লোরে থাকা পেঁয়াজের খোসার উপর রাখে। পরবর্তীতে সে চৌকিতে শিশুটির মুখ এবং নাক চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণকালে তার যৌনাঙ্গ ছিড়ে রক্তপাত শুরু হয়। তখন লক্ষণ দাশ বর্ষার মুখ এবং নাক চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

এরপর শিশুটির নিথর দেহ সে তার গোডাউনে রাখা টিসিবির সীলযুক্ত প্লাস্টিকের বস্তার ভরে সেখানে রেখে দেয়। এরপর বর্ষার বস্তাবন্দি লাশ গোডাউন থেকে বের করে ডান পাশে দেওয়াল সংলগ্ন ড্রেনে দেওয়ালের উপর দিয়ে ফেলে দেয়। এর কিছুক্ষণ পরে সে বর্ষার পরনে থাকা কাপড়চোপড় পেঁয়াজের খোসার বস্তার ভিতর খোসাসহ ঢুকিয়ে বস্তাটি ওই ড্রেনে ফেলে দেয়। আরো কিছুক্ষণ পরে সে বর্ষার ব্যবহৃত স্যান্ডেল নিয়ে ড্রেনে ফেলে দেয়।
লক্ষণকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন এমন একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পূর্ব পরিচিত হওয়ায় ১০০ টাকার লোভে শিশুটি লক্ষণের কথায় গোডাউনে যায়। কিন্তু সেখানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করতে চাইলে সে চিৎকার শুরু করে। তার হাতেপায়ে ধরে তাকে ছেড়ে দিতে বলে বর্ষা। কিন্তু তাতে লক্ষণের মন গলেনি। সে শিশুটির মুখ চেপে ধরে চৌকিতে শুইয়ে তার উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। রক্তাক্ত হওয়ার পরও এই নরপশু তাকে ছাড়েনি। গ্রেফতার লক্ষণ দাশ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার উত্তর পদুয়া গ্রামের ফেলেরাম দাশের পুত্র। জামালখানে গোপাল মুহুরীর গলির এ কে এম জামাল উদ্দিনের বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় মুদি দোকান শ্যামল স্টোরের গোডাউনে থাকতো সে। বর্ষাদের বাসাও একই গলিতে। চাঁদপুরের বাসিন্দা বর্ষার বাবা-মা সেখানে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

খেটে খাওয়া মানুষদের নিয়ে বিরিশিরি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

বর্ষা ধর্ষণ ও হত্যা ,আড়াই বছরেও মেলেনি ডিএনএ রিপোর্ট

আপডেট সময় : 04:38:51 pm, Tuesday, 11 March 2025

ইসমাইল ইমন চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম নগরীর জামাল খানের চাঞ্চল্যকর শিশু বর্ষা ধর্ষন, হত্যা ও লাশ গোপনের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আসেনি প্রায় আড়াই বছরেও। আই.ও বলছেন ডিএনএ রিপোর্টের অপেক্ষায় তদন্ত ঝুলে আছে।

মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৬ষ্ট আদালতে বাদী ও ভিকটিম পক্ষে একাধিকবার তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট তলব এর আবেদন করেছে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইট ফাউন্ডেশন বিএইচআরএফ। কিন্তু ডিএনএ রিপোর্ট এর অপেক্ষায় তা ঝুলে আছে। মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন – বিএইচআরএফ মহাসচিব এডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান বলেন,শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলা সমূহ গুরুত্ব না দেয়ায় আজ একের পর এক নারকীয় শিশু ধর্ষণের মতো নৃশংস ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। একেরপর এক শুধু মামলার তারিখ পড়ছে। তাহলে ৩০ দিনে শিশু ধর্ষন মামলার বিচার সমাপ্ত করার সিদ্ধান্ত কে,কিভাবে বাস্তবায়ন করবে। তিনি মনে করেন আসামী পক্ষ প্রভাবশালী বিধায় কৌশলে তদন্তকে প্রলম্বিত করানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে দায়ী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা জরুরী। আগামী ১৭-৩-২৫ তদন্ত প্রতিবেদন এ-র জন্যে পরবর্তী দিন ধার্য আছে।
উল্লেখ্য নরপশু আসামী লক্ষন দাশ -৩০- কতৃক পাশবিক নির্যাতনে হত্যা করা হয়েছে শিশু মারজান হক বর্ষাকে। জোর পূর্বক ধর্ষণের সময় রক্তাক্ত সাত বছরের নিষ্পাপ শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর বস্তায় ভরে লাশ গোপন করে ফেলে দেওয়া হয় নর্দমায়। বস্তায় টিসিবির সীলের সূত্র ধরেই লাশ উদ্ধারের মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ ওই নরপশুকে পাকড়াও করে। পুলিশের জেরার মুখে ফুটফুটে বর্ষাকে নিষ্ঠুরতম নির্যাতনে খুনের দায় স্বীকার করেছে ওই মুদি দোকানের কর্মচারী লক্ষণ দাশ -৩০-।
আর এর মধ্যদিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর জামালখান এলাকায় সংগঠিত চাঞ্চল্যকর এবং নৃশংস শিশু বর্ষা হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়। আত্মস্বীকৃত খুনি-ধর্ষক এই পাষন্ডের ফাঁসি দাবি করেছেন বর্ষার স্বজন ও স্থানীয়রা। সামান্য একজন দোকান কর্মচারীর এমন ভয়ঙ্কর অপরাধে হতবাক জামালখানের স্থানীয় বাসিন্দারা। নগরীর ব্যস্ততম একটি এলাকায় একজন শিশুর প্রতি এমন নিষ্ঠুরতা নজিরবিহীন। ঘর থেকে বের হয়েই যদি এমন পাশবিকতার শিকার হতে হয় তা হলে এই নগরীতে কন্যা শিশুদের নিরাপত্তা কোথায়- এমন প্রশ্নও সবার মুখে মুখে।
পুলিশ বলছে- ভয়ঙ্কর অপরাধের পরও লক্ষণ ছিল নির্বিকার-নির্ভয়। তার মধ্যে বিন্দুমাত্র অনুশোচনাও দেখা যায়নি। ধর্ষণ, খুন আর লাশ গুমের মতো ঘটনা সংঘটিত করেও লক্ষন সেন ছিলো স্বাভাবিক ।

নগরীর কুসুম কুমারি সিটি কর্পোরেশন স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী মারজানা হক বর্ষা জামালখান লিচু বাগানস্থ সিকদার হোটেলের পাশের গলির বাসা থেকে চিপস কিনতে বের হয়। এরপর সে গলির মুখের দোকানে যায়। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হওয়ার পরও বর্ষা দোকান থেকে বাসায় ফিরে না আসায় তার পরিবারের সদস্যরা আশপাশ এলাকাসহ সম্ভাব্য স্থানে ব্যাপক খোঁজাখুঁজি করেন। খোঁজ না পেয়ে পরদিন তার বড় বোন ছালেহা আক্তার রুবী থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন। থানার উপ-পরিদর্শক সুজন দাশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। তিনি ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজসহ বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেন। এরমধ্যে বিকেলে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে জনৈক বেলাল হোসেন জামালখান লিচু বাগান সিকদার হোটেলের পিছনে ড্রেনের উপর বস্তাবন্দি শিশুর লাশ দেখতে পেয়ে থানায় সংবাদ দেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল সম্পন্ন করে লাশ চমেক হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। শিশুটির পরিবারের সদস্যরাও লাশ সনাক্ত করেন।

শিশু বর্ষার বাসার পাশেই লাশটি ফেলে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় বর্ষার মা ঝর্ণা বেগম বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করলে২৮/১০/২২ ইং রাতেই একটি মামলা রের্কড করা হয়। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় থানার এসআই মো. নওশের কোরেশীকে। পুলিশ জানায়, বস্তা কেটে লাশটি বের করার সময় বস্তার গায়ে টিসিবির সীল নজরে আসে। বস্তায় পেঁয়াজের খোসাও ছিল। এই সূত্র ধরে পুলিশ সাথে সাথে টিসিবির সীলযুক্ত বস্তায় মালামাল বিক্রি হয় এমন দোকান ও আশেপাশের বিভিন্ন রেস্তোরার গোডাউনে টিসিবির সীলযুক্ত বস্তা খুঁজতে শুরু করে। একপর্যায়ে শ্যামল স্টোর মুদি দোকানের গোডাউনে একটি খালি টিসিবির সীলযুক্ত বস্তা খুঁজে পাওয়া যায়। টিসিবির সীলযুক্ত বস্তাকে টার্গেট করে উক্ত দোকানের মালিক ও কোন কোন কর্মচারী কাজ করে তাদের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়। সেই সাথে ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ মিলিয়ে দেখা হয়। বস্তা ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনায় লক্ষণ দাশকে সন্দেহ করা হয়। এরপর তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে লক্ষণ স্বীকার করে মারজানা হক বর্ষাকে চিনতো। বিভিন্ন সময়ে দোকান থেকে চিপস, চকলেট দিত। ঘটনার দিন সে তাকে ১০০ টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় দোকানের গোডাউনে নিয়ে যায়। এরপর গোডাউনের ভিতরে থাকা চৌকিতে বসিয়ে বর্ষার কাপড়চোপড় খুলে ফ্লোরে থাকা পেঁয়াজের খোসার উপর রাখে। পরবর্তীতে সে চৌকিতে শিশুটির মুখ এবং নাক চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণকালে তার যৌনাঙ্গ ছিড়ে রক্তপাত শুরু হয়। তখন লক্ষণ দাশ বর্ষার মুখ এবং নাক চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

এরপর শিশুটির নিথর দেহ সে তার গোডাউনে রাখা টিসিবির সীলযুক্ত প্লাস্টিকের বস্তার ভরে সেখানে রেখে দেয়। এরপর বর্ষার বস্তাবন্দি লাশ গোডাউন থেকে বের করে ডান পাশে দেওয়াল সংলগ্ন ড্রেনে দেওয়ালের উপর দিয়ে ফেলে দেয়। এর কিছুক্ষণ পরে সে বর্ষার পরনে থাকা কাপড়চোপড় পেঁয়াজের খোসার বস্তার ভিতর খোসাসহ ঢুকিয়ে বস্তাটি ওই ড্রেনে ফেলে দেয়। আরো কিছুক্ষণ পরে সে বর্ষার ব্যবহৃত স্যান্ডেল নিয়ে ড্রেনে ফেলে দেয়।
লক্ষণকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন এমন একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পূর্ব পরিচিত হওয়ায় ১০০ টাকার লোভে শিশুটি লক্ষণের কথায় গোডাউনে যায়। কিন্তু সেখানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করতে চাইলে সে চিৎকার শুরু করে। তার হাতেপায়ে ধরে তাকে ছেড়ে দিতে বলে বর্ষা। কিন্তু তাতে লক্ষণের মন গলেনি। সে শিশুটির মুখ চেপে ধরে চৌকিতে শুইয়ে তার উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। রক্তাক্ত হওয়ার পরও এই নরপশু তাকে ছাড়েনি। গ্রেফতার লক্ষণ দাশ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার উত্তর পদুয়া গ্রামের ফেলেরাম দাশের পুত্র। জামালখানে গোপাল মুহুরীর গলির এ কে এম জামাল উদ্দিনের বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় মুদি দোকান শ্যামল স্টোরের গোডাউনে থাকতো সে। বর্ষাদের বাসাও একই গলিতে। চাঁদপুরের বাসিন্দা বর্ষার বাবা-মা সেখানে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।