মোঃ আবু তৈয়ব
হাটহাজারী- চট্টগ্রাম- প্রতিনিধি।।
ছাত্র জনতার আকাঙ্ক্ষা বাংলাদেশকে নতুন করে গড়তে হবে’চট্টগ্রামে এবি পার্টির আলোচনা সভায়- মজিবুর রহমান মঞ্জু।
শনিবার – ১৬ নভেম্বর- চট্টগ্রামে এবি পার্টির উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ ও আহতদের স্মরণে দোয়ামাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন- জুলাই, আগষ্টে ছাত্র জনতা নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। যদি এই গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হতো তাহলে আমরা যারা আন্দোলনে ছিলাম- ছাত্র জনতা যারা আন্দোলন করছে সবাইকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ছেড়ে দিত না। হাটহাজারীর কৃতিসন্তান- আপনাদের সন্তান ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা জেলের সাজা দিয়েছি- আল্লাহর কি মর্জি তিনি তাকে বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব দিয়েছেন। জনাব মঞ্জু ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময় কাঁচামরিচের কেজি বারো শত টাকা হওয়া- ব্যাংক লুট করে কানাডায়- সিঙ্গাপুর- মালয়েশিয়ায় বেগম পাড়া- হোটেল করার বিষয়টি উপস্থিত জনসাধারণকে স্মরণ করিয়ে দেন। জনাব মজিবুর রহমান মঞ্জু আহত ও নিহত পরিবারের দিকে তাকিয়ে বলেন- আপনাদের, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র জনতার এই ত্যাগ আমার ভুলে যেতে পারি না। বাংলার আপামর জনসাধারণকে সাথে নিয়ে বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাধ্যমে আমরা আহত ও নিহতদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করবো। নিয়ে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে বলেন- একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ না করেও আওয়ামীলীগ যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের একক দাবিদার হয়ে বাংলাদেশকে বিভক্ত করেছিল বর্তমানেও অনেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিজের অবদান দাবি করে জাতীয় ঐক্যকে বিনষ্ট করছে। তিনি সবাইকে এইধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। জনাব মঞ্জু পরে চট্টগ্রাম-৫ অর্থ্যাৎ বায়েজিদ একাংশ এবং হাটহাজারী আসনের জন্য এবি পার্টির পক্ষে লে. কর্ণেল অব. দিদারুল আলমকে পরিচয় করিয়ে দেন।
এবি পার্টির চট্টগ্রাম উত্তর জেলার ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক সাংবাদিক জিয়া চৌধুরী এবং মোরশেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় এবং এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক লে. কর্ণেল অব. দিদারুল আলমের সভাপতিত্বে হাটহাজারী চারিয়া বোর্ড স্কুল চারিয়া ইজতেমার মাঠ সংলগ্ন এফ.এম কনভেনশন হলে সকালঃ ১০ টা থেকে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-৫ -বায়েজিদ আংশিক ও হাটহাজারী- এবি পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ ও আহতদের স্মরণ ও আলোচনা সভায় উপস্থিত যুব- ছাত্র ও জনতার উদ্দেশ্যে তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন। সভাপতির বক্তব্যে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক লে. কর্ণেল মোঃ দিদারুল আলম- পিএসসি (অবঃ) বলেন-বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে এবি পার্টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আন্দোলন চলাকালে মিছিলে আমার আশেপাশে অনেকে গুলিবিদ্ধ হন। আমার পাশে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু গুলিবিদ্ধ হন। অবশেষে আমাদের দীর্ঘ লড়াই সফল হয়েছে এবং সরকারের পতন ঘটেছে। এখন আমাদের সামনে মূল লক্ষ্য একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করা, যেখানে সকল নাগরিকের জন্য সমান অধিকার- ন্যায়বিচার এবং মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে। এবি পার্টি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি- এই নতুন যাত্রায় আমরা একটি সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ এবং সমতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ উপহার দিতে পারব। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এবি পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর আহ্বায়ক এডভোকেট গোলাম ফারুক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক লে. কর্ণেল অব. হেলাল উদ্দিন বলেন- আমরা বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও অনিরাপদ রাখবো না- ছাত্র জনতা- সেনাবাহিনী থাকতে বাংলাদেশে আর ফ্যাসিস্ট আমল ফিরে আসতে দেওয়া হবে না। আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশকে গড়ে তুলবো। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এনায়েত উল্লাহ পাটোয়ারী বলেন- পত্রিকায়- সোশ্যাল মিডিয়ায় আহতদের আহাজারি দেখতে আমাদের ভালো লাগেনা। অবিলম্বে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
উক্ত স্মরন, দোয়া ও আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার লোকমান, চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক এবং কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব ছিদ্দিকুর রহমান, বিএনপি ফটিকছড়ি উপজেলার সভাপতি কর্ণেল অব. আজিমুল্লাহ বাহার, ছাত্র পক্ষের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মুহাম্মদ প্রিন্স, এবি পার্টির হাটহাজারী উপজেলার নেতা মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু,বোরহান উদ্দিন, ছাত্র নেতা আব্দুল কাদের, এবি পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার যায়েদ হাসান চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম বাবুল, সহকারী সদস্য সচিব আব্দুর রহমান মনির, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ সোহরাব হোসেন পিয়াস, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হাটহাজারী উপজেলার প্রতিনিধি ইয়াকুব ওয়াসিব, আর্কিটেক্ট তানভীর মাসুদ, সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট আব্দুল মালেক, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধা সামিন রহমান, মোঃ সাইম, দিলদার, আব্দুল আলিম, মাইমুন নূর চৌধুরী, তামিম, সিনান, শহীদ ইউসুফের স্ত্রী, শহীদ জামালের স্ত্রী, মির্জাপুর রুপায়ন সংঘের সাধারণ সম্পাদক জীবন বড়ুয়া, কুলগাঁ সিটি কর্পোরেশন স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক আবু রাহেল ফয়সাল। উক্ত স্মরন, দোয়া ও আলোচনা সভা হাটহাজারী উপজেলার কৃতিসন্তান . কর্ণেল অব. দিদারুল আলম এর পক্ষ থেকে আহত ও শহীদ পরিবারকে সম্মাননা বিপ্লবী স্বারক প্রদান করা হয়।অনুষ্ঠানে মনমুগ্ধকর দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন হাটহাজারী শাস্ত্রীয় সংগীত নিকেতন এর শিল্পী সুমন দে ও তার দল।