মোঃ রুবেল খান
মোংলা বাগেরহাট।।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া -দানা- এখন প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় দানা মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮৫কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে।
বৃহস্পতিবার -২৪ অক্টোবর- এর প্রভাবে মোংলা উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নদীতে পানি বাড়ায় বেড়িবাঁধ নিয়ে উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। বিশেষ করে চাঁদপাই ইউনিয়নের নদী পাড়ের মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছেন।
বৈরী আবহাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন দৈনিক আয়ের ওপর নির্ভরশীল ভ্যানচালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। উপজেলা জুড়ে বৃষ্টির কারণে কর্মজীবী মানুষ কাজে বের হতে পারেনি। বিশেষ করে দিনমজুর, মিস্ত্রি ও নির্মাণ শ্রমিকরা ঘর থেকে বের হতে পারেনি। রাস্তাঘাটে যানবাহন ও লোক চলাচলও ছিল কম।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সকালে প্রস্তুতি সভা করেছেন উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া শারমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
মোংলা উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য এখানে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০৩টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ১৩২০জন স্বেচ্ছাসেবক। যাতে পরিস্থিতি অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজন আশ্রয় নিতে পারেন। সেই সাথে মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিসকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মজুদ রাখা হয়েছে শুকনা খাবার, ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানি।
বৃষ্টিপাতের কারণে ব্যাহত হচ্ছে বন্দরে অবস্থানরত বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজের পণ্য ওঠানামা ও পরিবহণের কাজ। পুরোপুরি বন্ধ না হলেও বৃষ্টিতে বন্দরে অবস্থানরত ৭ টি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য ওঠা-নামার কাজ ব্যহত হচ্ছে। এছাড়া মোংলা বন্দরের নিজস্ব নৌযান নিরাপদে এ্যাঙ্করে রাখা হয়েছে। বন্দরে খোলা হয়েছে একটি কন্ট্রোল রুম।
ঘূর্ণিঝড়কে ঘিরে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব এলার্ট ওয়ান জারি করেছেন। এলার্ট বাড়লেই তখন বন্দরে সকল কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন হারবার মাস্টার কমান্ডার সাইফুর রহমান ভুইয়া।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে দেশী-বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে সর্তকতাবস্থায় থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় মনিটরিং করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এদিকে প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টির হচ্ছে সুন্দরবনের দুবলার চরেও। সেখানে স্বাভাবিকের তুলনায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুবলা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনের চরগুলোতে। এছাড়া জোয়ারে পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।