
মো. রুবেল মিয়া, টাঙ্গাইল:
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে এক বাক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে ইসমাইল হোসেন (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার পর থেকে পলাতক থাকা ইসমাইলকে শুক্রবার রাতে টাঙ্গাইল র্যাব-১২ এর সিপিসি-৩ সদস্যরা মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে নাছির গ্রুপ কোম্পানি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাক প্রতিবন্ধী ১৮ বছর বয়সী ওই কিশোরীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গত মার্চ মাসে একাধিকবার ধর্ষণ করে ইসমাইল। ভয়ে কিশোরী বিষয়টি কাউকে জানায়নি।
পরবর্তীতে শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করলে পরিবার সন্দেহ করে এবং লিখে ও ইশারায় মেয়েটি ঘটনার বিস্তারিত জানায়।
ভুক্তভোগীর বাবা জানান, আমাদের বোবা মেয়েটি এসএসসি পাস করেছে। বড় হয়ে কিছু করার স্বপ্ন ছিল তার। সেই স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে ইসমাইল। সে আমাদের সম্মানও নষ্ট করেছে। আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে কালিহাতী থানায় মামলা দায়ের করেন।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, মামলার পর মেয়েটির মেডিকেল পরীক্ষা ও আদালতে জবানবন্দির ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রেফতার আসামিকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সহপাঠী, প্রতিবেশী ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
কালিহাতী উপজেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক নীরু ব্যানার্জি ও সদস্য সচিব মানিক ভট্টাচার্য বলেন,এ ধরনের জঘন্য অপরাধ সমাজে ভয়াবহ বার্তা দেয়। তাই আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
গ্রেফতারে সন্তোষ প্রকাশ করে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের কেন্দ্রীয় নেতা গৌরাঙ্গ বিশ্বাস বলেন,
অবশেষে আইন তার নিজস্ব গতিতে কাজ করছে দেখে আমরা স্বস্তি পেয়েছি। এই ঘটনার ন্যায়বিচার যেন দ্রুত নিশ্চিত হয়, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের কালিহাতী উপজেলা শাখার সভাপতি ও সাংবাদিক শাহ আলম বলেন, একজন প্রতিবন্ধী কিশোরীর প্রতি এমন পাশবিক আচরণ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। আমরা চাই, এই মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হোক এবং অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
ইসমাইলের গ্রেফতারের খবরে নারান্দিয়া এলাকায় স্বস্তি ও আনন্দের বন্যা বইছে। স্থানীয়রা মিষ্টি বিতরণ করে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বলেন— ন্যায়বিচার পেলে সমাজে শান্তি ফিরবে। যেন আর কোনো মেয়ে এমন নির্যাতনের শিকার না হয়।