চঞ্চল,
যথাযোগ্য মর্যাদা, আনন্দ-উচ্ছ্বাস আর জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে লালমনিরহাটে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে, লালমনিরহাট বিভাগ। কুচকাওয়াজ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প এবং দিনব্যাপী ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে সাজানো ছিল পুরো আয়োজন।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) প্রত্যুষে রেলওয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের শুভসূচনা হয়। সকাল সাড়ে ৭টায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সকাল ৮টায় রেলওয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ভবনসহ বিভাগের সকল দপ্তরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
দিবসটির মূল আকর্ষণ ছিল সকাল সাড়ে ৯টায় রেলওয়ে সোহরাওয়ার্দী ময়দানের অনুষ্ঠানমালা। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) আবু হেনা মোস্তফা।
অনুষ্ঠানে ডিআরএম আবু হেনা মোস্তফা বলেন, “বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব ও শহীদদের আত্মত্যাগের ফলে আমরা স্বাধীন হতে পেরেছি। তাই জাতীয় এই গুরুত্বপূর্ণ দিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে আমাদের এই প্রচেষ্টা। এই সংস্কৃতি অব্যাহত থাকলে পরবর্তী প্রজন্ম দিবসটির গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবে। মুক্তিযুদ্ধে যেমন পুরো জাতি একত্রিত হয়েছিল, সেই একতা, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বজায় থাকুক—এই কামনা করি।”
জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে রেলওয়ে চিলড্রেন পার্ক (সিপি) স্কুলের শিক্ষার্থীরা। এরপর রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি), জেনারেল রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি), স্কাউটস ও সিপি স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় মনোমুগ্ধকর সম্মিলিত কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্রদর্শনী।
স্বাধীনতার সুবর্ণ অর্জন ও বিজয় উল্লাসের পাশাপাশি বীরদের সম্মান জানাতেও ভুলেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সকাল ১০টায় রেলওয়েতে কর্মরত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ সংবর্ধনা প্রদান করা হয় এবং শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে তাদের হাতে চাদর তুলে দেওয়া হয়। একই সময়ে রেলওয়ে মেডিকেল বিভাগের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের। সেখানে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, ডায়াবেটিস পরীক্ষা, ব্লাড প্রেশার পরিমাপ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।
সকাল ১০টা ১০ মিনিট থেকে শুরু হয় আনন্দঘন ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। এর মধ্যে ছিল বিভিন্ন বয়সী বালক-বালিকাদের দৌড়, স্মৃতিশক্তি পরীক্ষা ও বালকদের ঐতিহ্যবাহী মোরগ লড়াই। তবে সবার নজর কাড়ে শিশু-কিশোরদের ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ প্রতিযোগিতা। এছাড়াও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহধর্মিণীদের জন্য আয়োজন করা হয় পিলো পাসিং খেলা।
উত্তেজনাপূর্ণ প্রীতি ফুটবল ম্যাচে দুইটি দলের মধ্যে ২০ মিনিট করে মোট ৪০ মিনিটের খেলা অনুষ্ঠিত হয়, যা দর্শকদের দারুণভাবে উপভোগ করতে দেখা যায়। এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর দিবসটি উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে জাতির সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা এবং শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘজীবন ও শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
দিনব্যাপী এই উৎসবে রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা গেছে। পরিশেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে আনন্দঘন এই আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮