প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ২, ২০২৫, ১০:৫৭ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অগাস্ট ২৫, ২০২৪, ১১:৪২ এ.এম
লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্নক অবনতি- হাজার হাজার পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে- খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট।।

মোঃ মাসুদ রানা মনি
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি।।
লক্ষ্মীপুরের ৫ উপজেলার বন্যার পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।গত ২৪ ঘন্টায় প্রায় এক ফুট পানি বেড়েছে বলে বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন জানিয়েছে ।ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পুরো জেলায় দুইশর বেশী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকেই এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে নতুন করে আশ্রয় নিচ্ছে।
নোয়াখালী ও ফেনীর পানির চাপেই হু হু করে পানি বেড়ে চলেছে।ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটছে। জেলার পাঁচটি উপজেলায় সৃষ্ট বন্যায় জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে বেশির ভাগ ঘরবাড়ি জলমগ্ন হয়ে আছে। চরাঞ্চলের বেশিরভাগ নলকূপ ডুবে যাওয়ায় বর্তমানে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকেই রান্না বান্না করতে না পেরে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
লক্ষ্মীপুর জেলা সদর- রায়পুর- রামগঞ্জ- রামগতি ও কমলনগর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন জেলার কয়েক লাখ মানুষ। কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও মেঘনার জোয়ারের পানি বাড়ছে বলে জানিয়েছে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে প্রায় ৫০হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। তলিয়ে গেছে আমন ধানের খেতসহ শত শত হেক্টর জমি শাকসবজি। এছাড়া মহিষ, গরু ও হাঁস-মুরগীর খামারে পানি ঢুকে ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হয়েছে শত শত খামারি।
রামগতি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক সোহরাব হোসেন বলেন, গত দুই দিন বৃষ্টি পাত কমে হলেও উজান থেকে ধেয়ে আসা পানিতে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
গতকাল আজ রোববার সকালে রামগতি ও কমলনগর উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে- চরাঞ্চলের সব ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে আছে। বসতঘরের ভিতরে হাঁটু পানি- কোথাও কোথাও মাজা ও গলা সমান পানি হয়েছে। গত দুই দিনে প্রধান প্রধান সড়ক গুলোও পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলে বিশুদ্ধ পানির সংকট বেশি। অনেকে কোমর পানি ভেঙে- নৌকা ও কলাগাছের ভেলায় দূর থেকে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি সংগ্রহ করছেন। অনেক কেই আশ্রয় কেন্দ্রের খোঁজে বাড়ী ছাড়তে দেখা গেছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর হোসেন জানান, বন্যায় আমন ধানের বীজ তলা ১৪৮৬ হেক্টর- আমন ধান ধান ২৬১৮ হেক্টর- আউশ ধান ২৯৬৩ হেক্টর ও শরৎকালীন ৪৪৩ হেক্টরের সবজি আক্রান্ত হয়েছে। পানি আরও বেড়ে ২ দিন থাকলে এসব নষ্ট হয়ে যাবে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খান বলেন, মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এত পানি আগে কখনো দেখা যায়নি।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে স্ব স্ব উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ সাধারণ মানুষদের নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন খালের বাঁধ কেটে দেওয়া হয়েছে। খাল-নালা পরিষ্কারের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। বন্যার্তদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর মধ্যে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, কোড নাম্বারঃ ৯২