মোহাম্মদ কেফায়েত উল্লাহ
খাগড়াছড়ি থেকে।।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় উপজেলায় এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগ ওঠেছে একই মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে । রামগড় উপজেলা সদরের মাস্টারপাড়া সিনেমা হল এলাকায় অবস্থিত তালিমুল উম্মাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠেছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়- তালিমুল উম্মাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র নাঈম কোরবানির ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসার পর পর আর মাদ্রাসায় যেতে চায় না। জোরাজুরি করে মাদ্রাসায় পাঠানোর পর সে আবার বাড়ি চলে আসে। ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলে বলে- সে মাদ্রাসায় আর যাবে না। কেন যাবে না এমন প্রশ্ন করা হলে সে জানায়- মাদ্রাসার হুজুর সামাদ তার সাথে খারাপ কাজ করে -বাথরুমে ঢুকিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় খারাপভাবে স্পর্শ করেছে – সেজন্যে- আর মাদ্রাসায় যাবে না।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর মা খাদিজা বেগম জানান- কোরবানির ঈদের তিন চার দিন আগে আমার ছেলের সাথে শিক্ষক সামাদ নোংরা কাজ করেছে। তারপর থেকে আমার ছেলে এখন সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকে। মাদ্রাসার কথা বললেই সেই ভয়ে চোখ-মুখ উলটে ফেলে। ভিকটিম নাঈম -১১- জানান আমাকে হুজুর ভয় দেখিয়েছেন এবং বিষয়টি কাউকে বলতে নিষেধ করেছেন।
জানা গেছে- মাওলানা আব্দুস সামাদ রামগড় উপজেলার কোট মসজিদ ইমাম কাম মোয়াজ্জিম হিসেবে কর্মরত রয়েছেন পাশাপাশি তিনি মাস্টার পাড়া তালিমুল উম্মাহ ইসিলামিয়া মাদ্রাসায় চাকুরি করেন। মাওলানা আব্দুস সামাদ রামগড় পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড চৌধুরী পাড়া এলাকার মৃত আব্দুল খালেক মোল্লার ছেলে। এছাড়াও তিনি মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ।
মাদ্রাসাসূত্রে জানা যায়- অত্র মাদ্রাসার আবাসিকে ৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ভিকটিম শিক্ষার্থীর পরিবার মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েছেন কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
উপরন্তু- ভিকটিম শিক্ষার্থীর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীরা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, মাদ্রাসায় বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য দেওয়া হয়। কিন্তু মাদ্রাসার লম্পট শিক্ষক যদি আমাদের সন্তানদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে বলাৎকার করে তাহলে আমরা দ্বীন শিক্ষার জন্য কোথায় যাবো ! এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এমন নোংরা কাজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক মাওলানা আবদুস সামাদের কাছে অভিযোগের সত্যতা জানার জন্য একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় তালিমুল উম্মাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসা’র পরিচালক মুফতি মোহাম্মদ ইউনুস জানান- ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা মাদ্রাসার সুনাম রক্ষার্থে শিক্ষক আব্দুস সামাদকে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেছি এবং মাদ্রাসার শিক্ষকতার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মুফতি ইউনুস বলেন- আমরাও চাই এসব নোংরা কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হোক।