প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ৪, ২০২৫, ৯:২৮ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ৪, ২০২৫, ৭:৩১ পি.এম

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) সংসদীয় আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী নাজমুল হাসান পাটোয়ারীর বলেছেন, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে উপজেলার সকল সরকারি অফিসে নাগরিকদের সম্মানের সাথে সেবা প্রদান করা হবে। সেবা গ্রহণ করতে কাউকে কোন প্রকার ঘুষ প্রদান বা হয়রানির শিকার হতে হবে না।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকাল ৪:০০ টায় সোনাপুর চৌরাস্তায় তাঁর সমর্থনে “মার্চ ফর দাঁড়িপাল্লা” ব্যানারে অনুষ্ঠিত গণমিছিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজ আমাদের ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি। সামান্য একটি জন্ম নিবন্ধনের জন্য দিনের পর দিন আমার ভাই–বোনদের হয়রানি করা হয়। কোটি টাকার সম্পদ দিয়ে নির্মিত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে মা-বোনদের জন্য পর্যাপ্ত ডাক্তার নেই, চিকিৎসাও যথাযথভাবে দেওয়া হয় না। এত সম্পদ কার্যত অকার্যকর করে রাখা হয়েছে।
আল্লাহ যদি আমাদের সুযোগ দেন, ইনশাআল্লাহ ইউনিয়ন পরিষদে জনগণকে হয়রানি বন্ধ করা হবে এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকে আধুনিক করে গড়ে তোলা হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার প্রতিবছর কোটি টাকার কৃষি প্রণোদনা দেয়। কিন্তু তা কৃষকদের হাতে পৌঁছায় না। শুকনা মৌসুমে কৃষকরা চাষের পানি পায় না। একটি গোষ্ঠী খাল দখল করে পানি সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে।
তিনি জানান, সুযোগ পেলে বরাদ্দকৃত কৃষি প্রণোদনা কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে এবং খাল খননের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে পানির ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, আল্লাহর ইচ্ছায় সুযোগ পেলে গ্রামের পারিবারিক বিরোধ ও সামাজিক অপরাধগুলোকে আর জিইয়ে রাখতে দেওয়া হবে না। তুচ্ছ অজুহাতে প্রতিপক্ষকে মামলা দেওয়া, থানায় দালালি—এসব বন্ধ করা হবে। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন করা হবে।
থানায় পুলিশি সেবা নিতে কোন মধ্যস্থতাকারীর প্রয়োজন হবে না। সেবা নিতে আসা নাগরিকদের থানায় কোন হয়রানি, ঘুষের লেনদেন এবং কোন পক্ষের দালালি সহ্য করা হবে না।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচিত হলে ‘ওপেন হাউজ’ প্রথার মাধ্যমে জনগণের মুখোমুখি হবো। সরকার থেকে আপনাদের বরাদ্দ, ইউনিয়ন পরিষদ, থানা পুলিশ, সরকারি হাসপাতালসহ সকল সেবার বিষয়ে জনগণ ও গণমাধ্যম সামনে সরাসরি প্রশ্ন করতে পারবেন—আমরা সেই ব্যবস্থা করব ইনশাআল্লাহ।
আপনার রাস্তা, মসজিদ, মন্দির কিংবা অন্য যে কোনো প্রকল্পে কত টাকা ব্যয় হয়েছে—আপনার জানার অধিকার থাকবে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পার হলেও রামগঞ্জে দৃশ্যমান কোন বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। রামগঞ্জ ছাড়া আশপাশের উপজেলাগুলোতে গ্যাস সংযোগ রয়েছে। সারাদেশে মাত্র পাঁচটি জেলায় রেলসংযোগ নেই—তার মধ্যে একটি আমাদের জেলা। এখানে কোন নার্সিং ইনস্টিটিউট নেই, মেডিকেল কলেজ নেই, টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট নেই; সরকারি হাসপাতালের অবস্থাও নাজুক।
আপনারা যদি আমাদেরকে সুযোগ দেন, ইনশাআল্লাহ আমরা এসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
তিনি নিজেকে রামগঞ্জের সন্তান দাবি করে বলেন, ঢাকায় আমার কোন বাড়ি নেই, নিজস্ব কোনো গাড়ি নেই। আমি সবসময়ই আপনাদের সাথে, আপনাদের শহর রামগঞ্জেই থাকি। ইনশাআল্লাহ নির্বাচিত হলেও আপনাদের সঙ্গে এখানেই থাকবো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট মহসিন কবির মুরাদ, শ্রম বিভাগের সভাপতি মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী, পৌর আমির এ্যাডভোকেট হাসান বান্না, নায়েবে আমির মাস্টার আবুল হোসেন, উপজেলা সেক্রেটারি ইমরান হোসাইন, পৌর সেক্রেটারি ইসমাইল ইলিয়াস, উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি জাকির হোসেন পাটোয়ারী, মাস্টার ফয়সাল আহমেদ। এ ছাড়াও রামগঞ্জ পৌরসভা ও ইউনিয়নের অন্তত দশ হাজার বেশি নেতাকর্মী এতে অংশ নেন।