মোঃ রুবেল খান
মোংলা বাগেরহাট।।।
মোংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা পণ্য সারাদেশে সহজে পরিবহন করতে সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্প মোংলা- খুলনা রেল লাইনের কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। ইতিমধ্যে প্রকল্পটির ৯৬ দশমিক ৬ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী কাজ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারলে অক্টোবরের শুরু থেকে মোংলা বন্দর থেকে ট্রেন যাবে খুলনায়। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের অক্টোবর মাসেই পণ্য এবং যাত্রী সেবায় আওতায় আসবে মোংলা-খুলনা রেল লাইন। এটি চালু হওয়ার পর দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসবে।
প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা গেছে, মোংলা-খুলনা রেললাইন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। এ প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। রূপসা নদীর ওপর ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল সেতুর কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে ৮৫ কিলোমিটার নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে খুলনার বিল ডাকাতিয়া, লতা, মোস্তফার মোড়, আড়ংঘাটা, রূপসার জাবুসা, ফকিরহাটের ভট্টখামার, মহিষখামার, কাজীবাড়ি ও বেরবাড়ি এলাকায় ৫ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ কাজ চলছে।
প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হচ্ছে ৮টি রেলস্টেশন। এর মধ্যে ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর ও দিগরাজ স্টেশন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কাটাখালি, চুলকাঠি, বাঘা ও মোংলা স্টেশন নির্মাণ চলমান রয়েছে।
টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনের কাজ ৫০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া ৯টি স্থানে ভেহিকেল আন্ডারপাস (ভিইউপি) তৈরি হচ্ছে। এগুলোর অ্যাপ্রোচ সড়ক তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ভিইউপির ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এগুলো সম্পন্ন হলে ট্রেন চলাচলের সময় রেল ক্রসিংগুলোতে যানবাহন আটকা পড়বে না। এ ছাড়া দুর্ঘটনারও ঝুঁকি থাকবে না।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, ট্রেন চালু হলে মোংলা বন্দরের সঙ্গে রেলপথে যাতায়াত সুবিধার পাশাপাশি আরও গতিশীল হবে বন্দরটি। এ ছাড়া রেলপথে সুন্দরবনে যাওয়ার পথ সুগম হবে, বাড়বে পর্যটক। প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে ঢাকা, গাজীপুর, সাভার ও খুলনা ব্যবসায়ীরা রেলপথে মোংলা বন্দরে পণ্য আনা-নেওয়া করতে পারবে। লোকজন স্বল্প খরচ ও সময়ে খুলনা থেকে মোংলায় যাওয়া-আসা করতে পারবে। এ ছাড়া ভারত, নেপাল ও ভুটান এই রেলপথ ব্যবহার করতে পারবে।
মোংলা বন্দরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এইচ এম দুলাল বলেন, প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে মোংলা বন্দর ব্যবহারে ভারত বাণিজ্য বাড়াতে আরও আগ্রহী হবে। ৭৩ বছর আগে বন্দর প্রতিষ্ঠিত হলেও এতদিন বন্দরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ ছিল না। এখন ব্যবসায়ীরা অধিক সুবিধা ভোগ করবে। পর্যটকরা ট্রেনে করে মোংলা পর্যন্ত গিয়ে এরপর নৌযানে সুন্দরবন ভ্রমণে যেতে পারবে।