
বিজয় চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধি:
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস চিকিৎসা শেষে অবশেষে বাড়ি ফিরেছে দশ বছরের যমজ শিশু সারিনাহ জাহান সায়রা ও সাইবাহ জাহান সায়মা।
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে আজ বুধবার সকালে দুই শিশুকে বিদায় জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান, বিমান দুর্ঘটনায় আহত ৫৭ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩৩ জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং বর্তমানে তিনজন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন—তবে তারা সবাই আশঙ্কামুক্ত। একজনকে মানসিক ট্রমা ম্যানেজমেন্টের জন্য মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি দুই বোনের মধ্যে সায়রার ৩০ শতাংশ এবং সায়মার ১৫ শতাংশ শরীরে পুড়ে গিয়েছিল। চিকিৎসা দলের নিবিড় তত্ত্বাবধানে ধীরে ধীরে তারা সুস্থ হয়ে ওঠে।
ডা. নাসির উদ্দিন বলেন,
“আমাদের চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা প্রতিটি রোগীর জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা পাওয়া গেছে। আহত যারা বাড়ি ফিরেছেন, তাদের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং ফলোআপ চিকিৎসা দিচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন,
“সিঙ্গাপুর, ভারত, চীন ও যুক্তরাজ্যের যেসব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আমাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন, আমরা তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞ।”
দুই শিশুর বাবা-মা ইয়াসিন মজুমদার ও আকলিমা আক্তার চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন,
“তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম আর আন্তরিকতার কারণেই আমাদের দুই মেয়েকে আজ আমরা সুস্থ অবস্থায় ঘরে নিয়ে যেতে পারছি।”
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতলা ভবনে বিধ্বস্ত হয়। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় ৩৬ জন নিহত হন এবং ১২৪ জন আহত হন। সরকারি তদন্তে দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে পাইলটের উড্ডয়ন-ত্রুটি শনাক্ত করা হয়।

























