মামুন মিঞা
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার।।
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় মধুমতি নদীতে বাঁশ ও জাল দিয়ে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করা হচ্ছে।
উপজেলার বানা ইউনিয়নের দিঘলবানা গ্রামের খেয়াঘাটের দক্ষিণ পাশে আধা কিলোমিটার দুরে এ বাঁধ নির্মাণ করে মাছ শিকার করছে।
এতে মাছের চলাচলে বাঁধা ও নদীর গতিপথ পরিবর্তনের আশঙ্কা রয়েছে।অপরদিকে সাধারণ জেলেরা মাছ ধরতে না পেরে বিপাকে পড়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়- মধুমতি নদীতে এখন পানি তুলনামূলক অনেক কম হওয়ায় বাঁশ ও জাল দিয়ে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দেওয়া হয়েছে।
বাঁধটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫০০ থেকে ২০০০ মিটার।
নদীর এ পাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত বাঁশের বাঁধের মাঝ দিয়ে পাতা হয়েছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল,কাথা জাল। এরই একটি নির্দিষ্ট দূরুত্বে জাল দিয়ে বিশেষ ধরনের ফাঁদ তৈরি করা হয়েছে। এসব ফাঁদে মাছ এসে আটকে যায়। প্রতিদিন তিন থেকে চারবার মাছ আহরণ করা হচ্ছে এ বাঁধ থেকে।
কয়েক বছর ধরে এভাবে মাছ শিকার করা হলেও প্রশাসনের থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পার্শ্ববর্তী মহম্মদপুর উপজেলার বাসিন্দা সজিবের নেতৃত্বে ১২ জন মিলে এ বাঁধটি দিয়েছেন। বাঁধটি দিতে প্রায় দুই থেকে তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে। প্রধানত বালিয়া মাছ শিকার করার জন্য এ ধরনের বাঁধ দেওয়া হয়। বাঁধ দেওয়ার পর আর খুব একটা খরচ ও কষ্ট করতে হয় না। নৌকা নিয়ে বসে থেকেই মাছ পাওয়া যায়।
তারা আরো জানান, পাঙ্গাশ থেকে শুরু করে ইলিশ,বেলে মাছ,খসল্লা, পাবদা, আইড়, রিটা সব ধরনের মাছও পাওয়া যায়। মূল ফাঁদে একবার আটকে গেলে মাছ আর বের হতে পারে না। এভাবে আড়াআড়ি ভাবে বাঁধ দেওয়ার কারণে অন্য জেলেরা স্বাভাবিকভাবে মাছ ধরতে পারে না। এতে অবৈধভাবে বাঁধ দেওয়া ব্যক্তিরা আর্থিকভাবে লাভবান হলেও গরিব জেলেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রবাহমান জলাশয়ে কোনো ধরনের বাঁধ, স্থায়ী অবকাঠামো বা অন্য কোনোভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। জলাশয়ে পানিপ্রবাহ ও মাছের চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে। বাঁধ দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
বাঁধটির মালিক সজিব বলেন, কয়েক মাস আগে বাঁধটি দেওয়া হয়েছে। মোহাম্মদপুর এলাকার ১২ জন মিলে বাঁধটি দিয়েছি, খরচ হয়েছে তিন-চার লাখ টাকা মতো৷ বারবার বলেন আপনি ঘাটে আসেন ভাগি কয়জন বলা যাবে।এবং সকল প্রশ্নের উত্তরে দিয়া যাবে। আল আমিনের বাড়ির পাশে থাকি সে দেখাশোনা করে।তবে বেলে মাছ বেশি শুধু ধরা পরে।
এদিকে আল আমিন বলেন, আপনি লেখালেখি করে আমার যা পারেন তাই করেন। এই বাঁধ পারলে কেটে দিয়েন।
তবে সালথা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অঃদাঃ) শাহ মো: শাহরিয়ার জামান সাবু বলেন, আলফাডাঙ্গা উপজেলায় আমি অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছি।বাসের মধ্যে আছি আপনারা কথা শুনা যাচ্ছে না,এখন বক্তব্য দেওয়া যাচ্ছে না, অফিসে আসবেন সাক্ষাত হবে। বাঁধ অপসারণের পদক্ষেপ নেবেন কি না উত্তর হা না জানতে চাইলে বারবার বলনে কোন কিছুই শোনা যাচ্ছে না।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনার ভূমি একেএম রায়হানুর রহমান বলেন, নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা কোনো সুযোগ নেই। নদীতে বাঁধ আছে আমার জানা নেই।দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধটি অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।আরো বলেন, আমি ১৭ নভেম্বর এ্যাসিল্যান্ড ও ১ ডিসেম্বর ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করি,অভিযোগ পাওয়ার পর সার ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা,টিটা বাওড়ে অবৈধ্য ভাবে কাঠা দিয়ে মাছ শিকার অপসারণ,সরকারি রাস্তায় জায়গা মুক্তকরা এবং যে কোন ধরনের অভিযোগ পেলই ব্যবস্হা গ্রহন করেছি।অভিযান চলমান থাকবে।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮