
মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠি-১ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল বলেছেন, বাংলাদেশে বীর সন্তান জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সম্মানী ভাতা ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় সর্বপ্রথম দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া চালু করেছেন। আজ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থাকার কারণেই মুক্তিযোদ্ধারা কিছুটা হলেও সম্মানিত বোধ করতে পারছেন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে রাজাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রফিকুল ইসলাম জামাল বলেন, স্বাধীনতার পরেও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকাও তৈরি হয়নি। যার ফলে বারবার মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি বলেন, আপনারা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, আজ হয়তো অস্ত্র ধরার শক্তি নেই—কিন্তু সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার সময় এসেছে। এই দায়িত্ব আপনাদেরই নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, আগামী ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি একটি নির্বাচন আসছে। সেই নির্বাচন আপনাদের মোকাবেলা করতে হবে, আপনাদের দিকনির্দেশনা দিতে হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জামায়াতের আমীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা মঞ্চে উঠে বক্তব্য দিয়েছেন। যারা ১৯৭১ সালে আমাদের মা-বোনদের ইজ্জত নিয়েছিল, যারা মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে হানাদার বাহিনী নিয়ে গিয়ে ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল এবং সম্পদ লুট করেছিল—তারা আজ মুক্তিযোদ্ধাদের মঞ্চে উঠে দাঁড়াচ্ছে। এই অবস্থা চলতে দেওয়া যাবে না। এখান থেকেই এদেশের মানুষকে মুক্তি পেতে হবে।
রফিকুল ইসলাম জামাল বলেন, গত ৫৪ বছর ধরে আমরা শুনে আসছি—আমরা শহীদ মিনারে ফুল দিতে গেলে নাকি পূজা করি। আগামীতে তারা (জামায়াতে ইসলামী) ক্ষমতায় এলে আমরা শহীদ মিনারে ফুল দিতে পারবো কি না, তা নিয়েই ভয়ের মধ্যে আছি। আমরা স্মৃতিসৌধে গেলে তারা বলে সেটাও নাকি পূজা। আমরা শহীদদের স্মরণ করার জন্য শহীদ মিনারে যেতে পারবো কি না—এই প্রশ্ন আজ সামনে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি—এই জাতীয় সংগীতের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা জাতীয় পতাকাকে সম্মান করে দাঁড়াই। তারা বলে এটা নাকি হিন্দুর লেখা, এই জাতীয় সংগীত বাংলাদেশের নয়। আমাদের জাতীয় সংগীত থাকবে কি না—এই সিদ্ধান্ত আজ মুক্তিযোদ্ধাদেরই দিতে হবে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ১৯৭১ সালের প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা তারা করবে। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সরকারে থাকবে মুক্তিযোদ্ধার দল, বিরোধী দলেও থাকবে মুক্তিযোদ্ধার দল। কোনোভাবেই পাকিস্তানের সহযোগীদের বাংলাদেশ শাসন করতে দেওয়া যাবে না।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তালুকদার আবুল কালাম আজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ শাহজাহান মোল্লা, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. মাসুম বিল্লাহ পারভেজ, যুবদলের সদস্য সচিব সৈয়দ নাজমুল, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রফিক মৃধাসহ রাজাপুর উপজেলার বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিকদল ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮