মনির হোসেন,বরিশাল ব্যুরো ।।
ঋতু বৈচিত্যের পালাক্রমে চলছে শীত মৌসুম। করোনার প্রকোপ কাটিয়ে শীতের শুরুতেই জমে উঠেছে বরিশাল নগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এরমধ্যে পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করছে বিভাগের মিনি সুন্দরবন খ্যাত পর্যটন কেন্দ্র ছৈলার চর।
এখানে প্রতিদিন বরিশাল বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীত মৌসুমের শুরুতে পর্যটকদের আগমনে উৎসবমুখর ছৈলারচর হয়ে উঠে জমজমাট। বিষখালী নদীর তীরে জেগে ওঠা ছৈলারচর পরিণত হয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভ‚মিতে। এখানে রয়েছে পর্যাটনের জন্য ব্যপক সম্ভাবনা।
স্থানীয় প্রশাসন ছৈলারচরকে পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষনীয় করে তুলতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহায়তা পেলে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে কাঠালিয়ার ছৈলারচর। সূত্রমতে, বিষখালী নদীর তীরে জেগে ওঠা ৪১ একরের বিশাল চর এখন ৬১ একরে পরিনত হয়েছে। যেখানে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ছৈলা গাছ থেকে চরটি পরিচিতি পেয়েছে ‘ছৈলারচর’ নামে। এখানে কোন হিংস্র প্রাণী না থাকায় এবং সহজ ও অপেক্ষাকৃত নিরাপদ যোগাযোগ ব্যাবস্থার কারণে সারাবছর ধরেই ভ্রমণ পিপাসুদের ভীর থাকে। তবে শীত মৌসুমের শুরুতে পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে।
এখানে রয়েছে ছৈলা, কেয়া, মাদার, আগুজি, নিম, বাদামসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ। সারাবছর রয়েছে এখানে পাখির কিচির মিচির ডাক। ফলে ছৈলার চরের এ প্রকৃতিক সৌন্দার্যে ভ্রমণ পিপাসুরা মুখরীত থাকে। পর্যটকদের কাছে চরটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে রোপন করা হয়েছে নানা প্রজাতির গাছ, তৈরি করা হয়েছে বিশ্রামাগার, শিশুদের চিত্ত বিনোদনের ব্যাবস্থা।
চরের একদিকে ২০ একর জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ডিসি ইকোপার্ক ও লেক। পার্কের মধ্যে রয়েছে একটি নয়নাভিরাম লেক। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ভ্রমণপিপাসুদের নদীর দৃশ্য উপভোগ করার জন্য করেছে বিভিন্ন ব্যবস্থা। এ চরকে কেন্দ্র করে কয়েকশ’ বেকার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। তবে সম্পূর্ণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে প্রয়োজন পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহযোগীতা।
ইতোমধ্যে মানবতার ফেরিওয়ালাখ্যাত স্থানীয় সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুফল চন্দ্র গোলদারের হস্তক্ষেপে ছৈলারচরে ব্যাপক উন্নয়ন মূলক কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়াও সংসদ সদস্যর হস্তক্ষেপে সড়ক পথে ছৈলারচরে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের সুবিধার্থে আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে ছৈলারচর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক নির্মানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন জনকন্ঠকে বলেন, ছৈলার চর পর্যটন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পটের উন্নয়নের জন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে একাধিকবার অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। আমার নির্বাচনী এলাকা কাঠালিয়া-রাজাপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য ছৈলারচর পর্যটন কেন্দ্রটির ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে। ইতোমধ্যে পর্যটন মন্ত্রণালয়ে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, ছৈইলারচরে পর্যটকদের সুবিধার্থে উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যার অধিকাংশই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখানে পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা তৈরি করতে পর্যটন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
গুঠিয়া মসজিদ - জেলার উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া এলাকায় নির্মিত বায়তুল আমান জামে মসজিদ ও ঈদগাহ কমপ্লেক্স। যদিও সবার কাছে এটি গুঠিয়া মসজিদ নামেই বেশি পরিচিতি। বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম ও বৃহৎ মসজিদ কমপ্লেক্স এটি। শিল্পের ছোঁয়ায় নান্দনিক এ মসজিদটিকে ঘিরে শীত মৌসুমের শুরুতে দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের উপস্থিতি দিন দিন বেড়েই চলেছে।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত - শীতের ভ্রমণ মৌসুমে জমে উঠেছে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। প্রতিদিন সৈকতে পর্যটকদের ভিড় বেড়েই চলেছে। পর্যটকদের উল্লাসে উৎসবমুখর সৈকত জমজমাট হয়ে উঠেছে।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮