মামুন মিঞা
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ফরিদপুর।।
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একে এম মহিউদ্দীনের -৫৫- বিরুদ্ধে নিজ বিদ্যালয়ের ১৪ বছরের এক ছাত্রকে যৌন হয়রানি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত রবিবার -১৭ নভেম্বর- বিকেলে ওই বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার -১৮ নভেম্বর- সকালে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে বিদ্যালয়ের মাঠে মানববন্ধন করে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা।
একই সময়ে যৌন হয়রানির ঘটনাটি থামাচাপা দিতে বিদ্যালয়ের কক্ষে প্রধান শিক্ষকের তরফে শালিসের আয়োজন করে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মানববন্ধন ও শালিসের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের উপর হামলা করেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের লোকজন।
ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানাযায়- গত রবিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের সিড়ির উপর রাকিব শেখ নামে এক শিক্ষার্থীর সাথে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন সহকারী শিক্ষক হাসানুজ্জামান।
এ সময় ওই শিক্ষার্থী দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে উদ্ধার করে প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দীনের তত্ত্বাবধানে রাখেন অন্য শিক্ষকগন।
প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দীন তার কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ওই ছাত্রীর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়।
একপর্যায় সহ্য করতে না পেরে ওই ছাত্রী প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে চিৎকার দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরে ওই ছাত্রী অন্যন্য শিক্ষকদের কাছে তাকে যৌন হয়রানির বিষয়টি খুলে বলে।
এদিকে এ ঘটনার পরদিন সোমবার সকালে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে বিদ্যালয়ের মাঠে মানববন্ধন করে অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী।
একই সময় যৌন হয়রানির ঘটনাটি থামাচাপা দিতে ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারকে নিয়ে বিদ্যালয়ের কক্ষে শালিসের আয়োজন করেন প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দীন ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
খবর পেয়ে মানববন্ধন ও শালিসের সংবাদ সংগ্রহ করতে সাংবাদিকদের একটি টিম বাধা দেন তাদের উপর হামলা করেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের লোকজন। পরে পুলিশ গিয়ে ওই সাংবাদিকদের উদ্ধার করেন।
ও বিকেলে ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দীন বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এক ছাত্রের সাথে ওই ছাত্রীকের আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া যায়। শিক্ষকগন ওই ছাত্রীকে আমার কাছে নিয়ে আসে।
ওই ছাত্রীকে শাসন করার পর সে এসব অভিযোগ তুলেছে। সাংবাদিকদের কাজের বাধা দেওয়ায় বিষয় তিনি বলেন, ঘটনাটি মাঠের মধ্যে ঘটেছে। আমি তখন স্কুলের কক্ষে ছিলাম। তাই কে কি করেছে তা দেখিনি।
এ বিষয় সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা -ওসি- মো. আতাউর রহমান বলেন- প্রথমে স্কুলের এক ছাত্র ও এক ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে শিক্ষকরা। পরে ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি মিমাংসার জন্য সকালে স্কুল পরিচালনা কমিটি- শিক্ষকরা ও ভূক্তভোগীর পরিবার শালিসে বসেছিল। এ সময় সাংবাদিকরা ক্যামেরাবন্দী করলে তাদের উপর হামলা করে এবং আটকে রাখে স্থানীয় লোকজন।সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করি।
তিনি আরো বলেন- ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারের সাথে আমরা কথা বলেছি। তারা কোনো অভিযোগ থানায় দেবে না। সম্ভবতঃ তারা মিমাংসা করে ফেলবে। এখন তারা যদি অভিযোগ না দেয়, তাহলে আমরা কিভাবে ব্যবস্থা নেব।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮