প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৭, ২০২৫, ৩:২২ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ২৬, ২০২৫, ১২:১৯ পি.এম

মো মোসাদ্দেক হোসেন,
যখন ভোরের ক্লান্ত সূর্য হারিয়ে যায় পশ্চিমা দিগন্তে, দিঘল অন্ধকারে ঢেকে যাওয়া ক্যাম্পাস তখন হঠাৎ ই ভরে ওঠে চন্দ্র আলোয় ।নিশীথের নির্জন আকাশে ভাসমান এই কোমল আলো, যেন শুভ্র মণিমুক্তোর মতো জ্বলজ্বল করে। তার ম্লান হলদে সোনালী ছোঁয়া, দূর থেকে দেখে যেন মনে হয় উপমহাসাগরীয় কোনো ক্ষুদ্র সোনালী দ্বীপ। তার অভ্যন্তরীন সব লাল-ধূসর ছায়াময় গর্ত, যেন নিঃশব্দে ফিসফিস করে শোনায়—হাজার হাজার বছর আগের সব ধ্বংসের নাটক। আকাশের ওপর বিক্ষিপ্ত মৃত্তিকার চিত্রের এই নিরব চন্দ্রনাথ অতি সহজেই হৃদয়ের আনাচে কানাচে কত গভীর ভাবেই না দাগ কেটে যায় তার দর্শকের।তার হলদে ম্লান আলোড়নে বিরাজ করা রুক্ষতা ও কোমলতার ঐক্য যেন আলোকরশ্মি ও অন্ধকারের এক চিরন্তন নাটক।
এই নির্মল আলোয় মীরমুগ্ধ সরোবরের পানিতে কাঁপতে থাকা প্রতিটি অসংঙ্গায়িত প্রতিচ্ছবি মনে করিয়ে দেয়—প্রতিটি রাতই আসলে এক অমীমাংসিত রহস্য, এক অবর্ননীয় নিদারুন নির্মমতা, এক অযাচিত নিস্তব্ধতা। কোলাহল সব ঘনিয়ে এলেই বোধ হয় আকাশের এক কোণ থেকে ভেসে ওঠা অমোঘ এ চন্দ্রনাথ কতই না নীরব বেশভূষার অথচ কি অতিরিক্ত প্রবল তার প্রভাব, যেন কোনো প্রাচীন গুপ্তরহস্যের রক্ষক।
শিক্ষার্থীরা তারই পানে চেয়ে, কেউ চরম আবেগে বিলীন হয়, কেউ তার প্রিয়তমার উপমায় বলে চাঁদের মতো সুশ্রী তুমি,দেখো তোমাকে দেখার প্রবল ইচ্ছা একদিন আমাকে কাঙ্গাল করে দিবে। আবার কেউ ভাবে হয়তো কোন এক দৈব বরে এই চন্দ্রিমালো তাদের দুঃখ, হতাশা, বঞ্চনা মুছে দেবে, হৃদয়ে জোগাবে এই দূর্গতির দূর্গম অরণ্যে জীবন নির্বাহের রসদ, এক মহাসাগর সুসময়ের অঙ্গীকার। অথচ তারা অনেকে জানেই না
এই শিক্ষাঙ্গনে চাঁদ দেখাও অতি অপ্রয়োজনীয় বিলাসিতা, খুবই অফলপ্রসু বেজায় কাজ। এখানে চাঁদ দেখে কবি হওয়ার চেয়ে, স্থানাভাবে চাঁদ পানে চেয়ে হতাশার অশ্রু ঝরানোর সংখ্যাই আবশ্যকীয় ভাবে বেশি;
কারন প্রত্যন্ত গ্রামীন এই ইবি রূপ লাবণ্যে মনোহর হলেও, বিশ্ব মানের সুবিধা, সমৃদ্ধশালী শিক্ষা আর তড়িৎ আধুনিকতার দিক থেকে খানিক ক্লান্ত ও পশ্চাৎ স্বর।
সারাদিনের রবি প্রতাপ পশ্চিমা দিগন্তে দ্রবীভূত হলে ইবির নিকষ কালো নিশীথের অন্ধকার আকাশ হতে শশি তার স্নিগ্ধ আলো ছড়িয়ে দেয় ক্লান্ত পরিশ্রান্ত শিক্ষার্থীদের নয়ন জুড়ে । আপাতদৃষ্টিতে এ চন্দ্র জ্যোতি সান্ত্বনা দেবে, নতুন স্বপ্ন দেখাবে মনে হলেও,গভীরতায় তাকালে বোঝা যায়, এই আলো সবার গায়ে মাখার জন্য নয়। চাঁদ আকাশে যতই উজ্জ্বল হোক, সে দূরে থাকে, অপ্রাপ্য থাকে। শিক্ষার্থীরা আকুল প্রাপ্তির তিয়াসা নিয়ে তার দিকে হাত বাড়ায়, অথচ ছুঁতে পারে না।
ইবির শিক্ষার্থীর চোখে সেই নির্দয় চাঁদই আজ ইবি প্রশাসনের প্রতীক—নীরব অথচ কর্তৃত্বশালী, দৃশ্যমান অথচ অস্পর্শ্য; চাঁদের মতোই যেন তার গৌরবজ্জ্বোল আলো আছে, কিন্তু নেই বাস্তবিক উষ্ণতা; আছে স্বপদে উপস্থিতি, কিন্তু নেই তালিবে ইলমের প্রতি সহমর্মিতা। বিদ্যার্থীদের কান্না, শোক, স্বপ্নভঙ্গ, মৃত্যু—সবকিছু একই আকাশের নিচে ঘটে গেলেও তা পৌঁছায় না সে চাঁদের দরবারে।
প্রচলিত প্রবাদের মতোই এখানে শিক্ষার্থীরা বামন হয়ে প্রাপ্তির খাতায় শূন্য দিয়ে শুধু চাঁদের পানে তাকিয়েই থাকে। তারা অধিকার চায়, তারা স্বপ্ন দেখে, তারা আন্দোলন করে—কিন্তু প্রতিবারই চাঁদবদন প্রশাসন ক্রমশ দূরে সরে যায়। এখানে চন্দ্রালো তাই আশার নয়, হতাশার আলো; প্রতিবার স্মরণ করিয়ে দেয়—এখানে শিক্ষার্থীর জীবন কতটা অবহেলিত, কতটা মায়ূস।
১৭৫ একরের এই ক্যাম্পাসে নীরব নিশীথের নিষ্ঠুর চাঁদ তাই হয়ে উঠেছে দূর আকাশে ভেসে থাকা, অস্পর্শযোগ্য প্রশাসনের ক্ষমতার এক নির্দয় প্রতিমা।
জ্বি, আমি আজ এখানে কোন চাঁদের কেচ্ছা লিখছিনা, চাঁদ নিয়ে ঔদার্যপূর্ণ, অন্তিম আবেগ মিশ্রিত লেখা বোধহয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সাথে অতটা মানানসই নয়।
-শুধু পুঁথিগত বিদ্যা আর পাশ করার কুক্ষিগত আকাঙ্খা তাদের একমাত্র প্রতিপাদ্য। উৎপাদনশীল ও উদ্ভাবনমূখী উদ্যোগের স্বল্পতা কুরে কুরে খায় এসব অসীম সম্ভাবনা পূর্ন বিশ্বমানের শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা। এই চরম অভাব, অবর্ণনীয় অনটনে শিক্ষার্থীদের মনের রঙ, জীবনের স্বাদ দুইটায় যেখানে নিবর্ন, সেখানে প্রায় ১৮০০০ স্বপ্নের অভিভাবক বিশ্ববিদ্যালয়ের আযীমুশান প্রশাসনের বিমাতৃসুলভ আচরনেরই স্বল্প কথা লিখছি আজ ।
একবুক স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল সাজিদ আব্দুল্লাহ। তার বাবা হয়তো ভেবে ছিলেন আল কোরআন ও ইসলামিক স্টাডিজে পড়ে তার ছেলে হবে দ্বীনের দায়ী, হবে দেশ বরেণ্য কোরআন গবেষক, তাফসিরের মুফাসসির, টেলিভিশনে সম্প্রচার হবে তার আলোচনা, তা দেখে নিজের প্রাণ জুড়াবেন এবং গর্ববোধে আর দশ জন কে দেখিয়ে বলবেন এই জগৎ বিখ্যাত আল্লামার জন্মদাতা আমি, তর্জনী উঁচু করে বলবেন আমার এই আঙ্গুল ধরে হাঁটা শিখেছে সে। কোন শীতের রাতে তীব্র জ্বরে অস্থির পুত্রের সেবায় রাত কাটিয়ে দেওয়া পিতার মনে একটা সন্তান কতটুকু জায়গা দখল করে, কত মূল্যবান হয়ে উঠে তা কি দুনিয়ার আর কারো পক্ষে কল্পনা করা সম্ভব? এক পিতার মহামূল্যবান রত্ন সাজিদকে অপঘাতে মৃত্যু ছাড়া আর কি দিতে পেরেছে এই প্রশাসন?
শিক্ষার্থীদের দাবীর মুখে পরে তদন্তের কার্যভার নিয়ে কত টাল বাহানা তাদের। এই চাঁদ কুসুম প্রশাসন কি অনুভব করতে পারে, একজন সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় ৭-৮ ডোলের মহা অসহ্যনীয় ব্যথা বরন করে সজ্ঞানে থাকা মাতৃ মন, কী এককে ব্যথিত হলে জ্ঞান হারা হয়?তারা কি জানে সাজিদের মা কতবার জ্ঞান হারা পুত্র খোয়ানোর শোকে? সাজিদের বাবা এক সাক্ষাৎকারে বললেন তার চোখ দিয়ে আর পানি আসেনা। তারা কি জানে একটি পিতৃমন কতটুকু নির্লিপ্ত হয় ছেলের লাশের খাঁটিয়া কাঁধে নিলে, কতটুকু নিরুদ্বেগ হলে অশ্রুপাত রুদ্ধ হয়ে যায় তার?
-না, তারা জানে না। দ্রুত ন্যায় বিচারের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটি বা তদন্তভার সিআইডির কাছে হস্তান্তর এবং আজ ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও সে তদন্তের অগ্রগতিতে ইবি প্রশাসনের চাপ প্রয়োগের উদ্যোগেকেও সন্দেহের তীরে বিদ্ধ করছেন এ বিদ্যাপীঠের বিদ্যার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্যে,তারা জানে চেয়ার বদলের হিসাব, একটি পদোন্নতি, একটি বেতন গ্রেড বৃদ্ধির হিসাব। পতিত, পলাতক, খুনি স্বৈরাচার যেমন তাজা প্রাণ পুড়িয়ে ছাড়খার করে হিসাব করেছিল মেট্রোরেলের ক্ষয়ক্ষতির তেমনি ইবি চন্দ্রলোকের এ প্রশাসন তরুণ প্রাণ পানিতে ডুবিয়ে বিচার করে ৭/৮ মাস আগে বাস ভাঙচুরের, বহিষ্কার করে আপন শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের স্বপ্নভঙ্গের রক্তাক্ত কোন শোক তাদের আকাশে পৌঁছায় না। তারা কমিটি গঠন করে নাম প্রকাশ করে চুনোপুঁটি ফ্যাসিস্টদের; রাঘববোয়ালরা স্বপদে বহাল থাকে।
২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রতিষ্ঠার মাত্র ১২ বছরেই তাদের অধিকাংশ কার্যক্রম অনলাইনে নেওয়ার ঘোষণা দেয়, বলে শিক্ষার্থীদের সকল প্রয়োজনীয় কাজ করে দিতে বাধ্য থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। অথচ ইবি প্রতিষ্ঠান ৪৫ বছরের একটা লম্বা সময় পার হলেও, সকল একাডেমিক, প্রশাসনিক কাজ চলে প্রাচীন পন্থায় হাতে কলমে কাগজে।
প্রায়শই সামাজিক গনমাধ্যমে দেখা মিলে প্রাক্তন, বর্তমান শিক্ষার্থীদের হাহাকার,
"আমরা ছাত্র না শুধুই রোল নাম্বার?ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সাড়ে ছয় বছর পড়াশোনা করলাম-অনার্স-মাস্টার্স শেষ করলাম। অথচ এখনো বুঝে উঠতে পারছি না, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা আদৌ আমাদের ছাত্র মনে করেন কি না।একটি ট্রান্সক্রিপ্টের জন্য অপেক্ষা করছি প্রায় দুই বছর ধরে।অথচ তারা শুধু দোষ চাপিয়ে যায় একে অন্যের ঘাড়ে যেমন-পরীক্ষা কমিটি বলে প্রশাসনের দায়িত্ব,প্রশাসন বলে আইসিটি বিভাগের দায়িত্ব,আইসিটি বিভাগ বলে নতুন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়নি।
আমার প্রশ্ন-দুই বছর সময়ে কি একটি নম্বরপত্র তৈরি করতে যথেষ্ট নয়?।" এমন সব কাকুতি মিনতি সম্পন্ন তিক্ত বাস্তব চিত্রের।
২৩ শে সেপ্টেম্বর ২০২৫ এক বিবৃতির মাধ্যমে ইবনে সিনা ট্রাস্ট জানায়, ইবনে সিনার যেকোন সেন্টারে চিকিৎসা সেবায় সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ছাড় পাবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ইমার্জেন্সি রোগী শিক্ষার্থীর জন্য একটা সিট বরাদ্দ দিতে পারেনা।
এখনো ইবির ভর্তি প্রক্রিয়া নবীন শিক্ষার্থীদের হয়রানি আর পেরেশানির স্বরূপ। নবীন শিক্ষার্থীদের ভাষ্যে ইবিতে চান্স পাওয়ার থেকে ভর্তি হওয়ার প্রক্রিয়া কঠিন। বারবার প্রসাশনের আধুনিকায়নের স্বইচ্ছা প্রকাশ ও শত কোটি টাকার বাজেট করলেও প্রশাসনিক জটিলতার শিকল আর কোন অদৃশ্য কাটাতারের ব্যারিকেডে প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছর পার হলেও কোনো বাস্তব পরিবর্তন সম্ভব হয়নি এক্ষেত্রে। আবাসন যেন এই প্রশাসনের নাট্যমঞ্চের আরেক ট্র্যাজেডি। নাম মাত্রই শিক্ষার্থী সিট পায় হলে।
এখানে মেডিকেল সেন্টার যেন এক লোমহর্ষক নাম,আইন বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান বলছেন, "আমার এক
ফ্রেন্ডের নখের সমস্যা। মেডিকেলে গেলাম, ডাক্তার কিছু না বুঝতে পেরে গুগলে সার্চ দিল তাও কিছু করতে পারলো না। পরে অবশ্য একটা রোগ খুঁজে বের করল গুগলে সার্চ করে কিন্তু উচ্চারণ করতে পারল না রোগের নাম। পরে উনি অন্য একজনের কাছে পাঠিয়ে দিল। যার কাছে পাঠিয়ে দিল সে আবার আরো একটু উপরের ব্যক্তি! সে গুগল সার্চ না করে চ্যাট জিপিটিতে চলে গেল! এরা আবার এমবিবিএস ডাক্তার! কিভাবে?"
সম্প্রতি এক ঘোষনায় গুগল জানায়, তার ‘জেমিনি ফর এডুকেশন’ এর উদ্যোগে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন জেমিনি প্রো এআই। এতে এক বছরের জন্য থাকবে জেমিনি ২.৫ প্রো মডেল, ডিপ রিসার্চ, অডিও ওভারভিউ, ভিও ৩ মডেলে ছবি থেকে ভিডিও তৈরির সুযোগ এবং ২ টেরাবাইট অনলাইন স্টোরেজ। তবে এ সুবিধা পেতে শিক্ষার্থীদের নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইডুমেইল (Edu Mail) দিয়ে সাইন ইন করে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে। কিন্তু, সুযোগ কাজেই লাগাতে পারবেনা এ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিংহভাগ শিক্ষার্থী। কারন,
প্রতিষ্ঠার এতগুলো বছর পেরিয়ে গেলেও এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথমবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে একটি ইডুমেইল তুলে দিতে পারেনি। স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা আবেদন সাপেক্ষে পায় এই ইডুমেইল (Edu Mail) যা প্রথম বর্ষে পেলে গবেষনা আর তথ্য অনুসন্ধানের বিস্তর সুযোগ থাকতো তাদের হাতে হয়তো এই সুযোগ পেয়েই তারা স্নাতক শেষ করে তথাকথিত চাকরি যুদ্ধে যোগ না দিয়ে হতে পারতেন নিত্যনতুন সমস্যার সমাধান উদ্বভাবনে গবেষণা সহযোগী বা তরুন গবেষক। হতে পরতেনএকটি বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থার অংশ। দেশে অন্যান্য সকল নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলো প্রথম বর্ষে ভর্তির পরই প্রতিটি শিক্ষার্থীকে একটি করে ইডুমেইল প্রদান করে যার অনুপস্থিতি ইবি শিক্ষার্থীদের অনেকাংশে অবহেলিত ও পশ্চাৎপদ করে রাখে।
শিক্ষার্থীদের প্রানের দাবী ইকসু,কিছুদিন আগেও এ বিষয়ে প্রশাসনের বক্তব্য ছিল ইকসু বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিনেন্সে নেই, আইনের দোহাই দিয়ে আটকিয়ে রেখেছিল।অথচ তারা অনুধাবন করে না আইন হলো সার্বভৌমের আদেশ। তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বভৌমত্বের প্রতীক শিক্ষার্থীদের দাবিকে আইন সম্মত মনে করছে না।অথচ,
খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলছেন, "ইকসু গঠন সম্ভব, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক অভিপ্রায়ই মূল আইন হওয়া উচিত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের। আমরা জানি constitution is the Supreme law of the state সেখানে আমাদের সংবিধানে কোন আইন না থাকা সত্বেও জনগনের অভিপ্রায়ে ইন্টেরিম গভর্মেন্ট দেশ চালাচ্ছে তো এখানে ইকসু গঠনে কোন আইনি বাধা দেখছিনা। সদিচ্ছা, শিক্ষার্থীবান্ধব ইচ্ছা থাকলেই সম্ভব। এসময় ইকসু আইন ও সংবিধি প্রনয়ন সম্পর্কিত কমিটিতে ইবির আইন অনুষদের কোন শিক্ষক না রাখা দূর্ভাগ্যজনক জনক বলেন এবং এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।"
উল্লেখ্য, বর্তমানে বিভিন্ন আলোচনা সমালোচনার পর প্রশাসনের তৎপরতায় ও বিভিন্ন উদ্যোগে কিছুটা আশার আলো দেখছে ইকসু প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলন কর্তৃক ১৮ ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে ২২ শে সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহনের বর্ষপূর্তিতে মূল্যায়ন জরিপ পরিচালিত হয় যেখানে ১৩১২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। ফলাফলে ১০ এর মধ্যে ২.৪৫ পেয়ে অকৃতকার্য হন উপাচার্য মহোদয়।
তারপরও শিক্ষার্থীরা সব উপেক্ষা করে এই প্রত্যাশায় বুকবাঁধে যে, জুলাইয়ে শত শত শহীদের রক্তের ভিত্তি প্রস্তরে দন্ডায়মান এ স্বর্নকেশী প্রশাসনের কোন একসময়, কোন একটা অছিলায় শুভচেতনার উদয় ঘটবে যেভাবে সন্ধ্যার কালো আকাশে ম্লান সোনালি হলুদ আভার নির্মল জোছনার উদয় ঘটে, অজুহাতের নিকষ কালো অমানিশায় ভাঁটা পড়ে; সুখ, সমৃদ্ধি, উৎকর্ষতা, উদ্ভাবন ও উৎপাদনমুখী সৃষ্টি কর্মের ফুলঝুড়ি হবে তাদের জীবন।এই তীব্র আকাঙ্খা কে ধারন করে সকল না পাওয়া অধিকার, হতাশা, দুর্দশা, অভিযোগ, অনুযোগ কে সাথে নিয়ে একটি ক্ষীণ আশা পুঁজি করে যে হিন্দুপুরান বৃহদারণ্যক উপনিষদের পঞ্চম ব্রাহ্মণের সে গল্পের মতো এ প্রশাসন একদিনে না হোক কোন একদিন তাদের এমন উদাসীনতা, নিজের ইন্দ্রিয় কামনাকে দমন করবেন, দয়া করবেন নিজেদের আত্মার,বিবেকের অস্তিত্বে এবং শিক্ষার্থীদের দান করবেন প্রবাহমান প্রফুল্লতর সজীব শিক্ষা জীবন, এমন সুদিনের অপেক্ষায় সেই চন্দ্র লোকের পানে চেয়ে প্রতিটি রাত পাড়ি দিচ্ছে এই বিদ্যাপিঠের প্রায় ১৮০০০ শিক্ষার্থী।