ইসমাইল ইমন চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে কোচিং সেন্টারগুলোর অনুমতিবিহীন পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও সাইনবোর্ডের কারণে নগরীর সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। যেহেতু কোচিং সেন্টারগুলো একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা খাত, তাই এটি অবশ্যই নৈতিকতা ও নীতিমালার আওতায় আসতে হবে।
এজন্য প্রতিটি কোচিং সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্স করা বাধ্যতামূলক।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টায় টাইগারপাসস্থ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কার্যালয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষার্থে নগর জুড়ে বেআইনি পোস্টার, ব্যানার, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন ধরণের ভিজ্যুয়াল দূষণ প্রতিরোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এসব কথা বলেন।
মেয়র ডা. শাহাদাত বলেন, শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখতে হলে সবাইকে নিয়ম-কানুন মানতে হবে। বর্তমানে প্রায় ৪০০ কোচিং সেন্টার রয়েছে তার মধ্যে মাত্র ১২০টির ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুত লাইসেন্সের আওতায় আনতে হবে। কোচিং সেন্টারগুলো ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান যেহেতু তারা ছাত্রদের থেকে ফি আদায় করে। এজন্য প্রতিটি কোচিং সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্স করা আবশ্যক।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমৃদ্ধ চকবাজার জোনটিকে একটি ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি জোনে রূপান্তর করতে। তাই যত্রতত্র ব্যানার-পোস্টার বন্ধ করতে হবে। এর পরিবর্তে আমরা ডিজিটাল বোর্ড বা এলইডি স্ক্রিনে নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করব। এতে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হবে না, একই সঙ্গে ব্যবসায়ীরাও নিয়ম মেনে বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন।
মেয়র বলেন, “সিটি কর্পোরেশন একা কিছু করতে পারবে না। নাগরিকদের সার্বিক সহযোগিতা ছাড়া নগর পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব নয়। আমরা নিজেদের রাজস্ব থেকে রাস্তা মেরামত, নালা-খাল পরিষ্কার ও জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ করছি। তাই সবাইকেই দায়িত্বশীল হতে হবে। যারা এখনো ট্রেড লাইসেন্স করেননি, তারা দ্রুত লাইসেন্স গ্রহণ করবেন এবং যাদের লাইসেন্স নবায়ন হয়নি তারা নবায়ন করবেন।
সভায় চসিকের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা রাজস্বের প্রসঙ্গে বলেন, চট্টগ্রামে প্রায় ৪০০ কোচিং সেন্টার রয়েছে। কিন্তু মাত্র ১২০টির ট্রেড লাইসেন্স আছে, বাকিগুলো লাইসেন্স ছাড়াই চলছে। কিছু প্রতিষ্ঠান ট্রেড লাইসেন্স করার পর আর রিনিউ করছেনা। আবার অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান অনুমতি ছাড়া ব্যানার-পোস্টার লাগাচ্ছেন এবং এগুলো অপসারণ করছেনা। এতে রাজস্ব ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি নগরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।
এছাড়া চট্টগ্রাম শহরে কোচিং সেন্টারগুলো অন্তত ৮০ ভাগ বিজ্ঞাপন-লিফলেট প্রচারের ক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমতি নিচ্ছেনা। নিয়ম মেনে আনুমানিক ২০ ভাগ বিজ্ঞাপন কর্পোরেশনের কাছ থেকে অনুমোদন নেয়। ফলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সিটি কর্পোরেশন। শত শত প্রতিষ্ঠান এ ধরনের অনিয়ম করছে যা নিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা।
তারা আরও বলেন, অনুমতিহীন, অবৈধ কোচিং সেন্টারগুলো যত্রতত্র বিজ্ঞাপন, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ করছে। একটি ব্যানার বা সাইনবোর্ডের জন্য মাত্র এক-দুই হাজার টাকার কর প্রদানই যথেষ্ট। অথচ অনেক প্রতিষ্ঠান তা পরিশোধ করে না। অথচ এই অর্থ দিয়েই সিটি কর্পোরেশন শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সবুজ রাখতে কাজ করে। শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নাগরিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানি, চট্টগ্রাম কোচিং এসোসিয়েশনের সভাপতি আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ সোহেল, নগরীর বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের প্রতিনিধিবৃন্দ ও গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮