সোহানুর রহমান বাপ্পি
ক্রাইম রিপোর্টর।।
নুর মোহাম্মদ কিশোরগঞ্জ ২ থেকে বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্য। তিনি এর আগে একজন বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত এবং ২০০৭-২০১০ সালে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ছিলেন। অক্টোবর 2012 সালে- তিনি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক যুব ও ক্রীড়া সচিব হিসাবে নিযুক্ত হন। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার যেসব সম্পদ পাওয়া গেছে তার মধ্যে রয়েছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী থানার চান্দপুর গ্রামের মীরেরপাড়ায় ২০ বিঘা জমির ওপর একটি রাজকীয় বাড়ি। এর মধ্যে রয়েছে রেলওয়ের ৪ বিঘা জমি। যার মূল্য ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। বাড়ির নির্মাণ ব্যয় ৩ কোটি টাকা।
বাড়ি থেকে ১ মাইল পূর্বে নুরুল আমিন'র ৪০০ বিঘা জমির ওপর তৈরি মাছের প্রকল্প প্রশাসনিক, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দখলে রাখেন। বাড়ি থেকে প্রকল্প পর্যন্ত যাওয়ার জন্য ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ২৫ ফুট প্রস্থের পাকা রাস্তা। আইজিপি থাকা অবস্থায় সর্বশেষ এক বছরে কটিয়াদীতে ১৩ কোটি টাকায় জমি কিনেছেন ৪০০ বিঘা। বেইলি রোড ও মোহাম্মদপুরের পিসিকালচার হাউজিংয়ে ৯ কোটি টাকায় কিনেছেন ৫টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। অভিযোগে বলা হয়েছে- আইজিপি থাকাকালে ৬- মিন্টো রোডে সরকারি অনুমোদন ব্যতীত ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ করেছেন। খুলনায় ৩৫০ বিঘা জমির ওপর ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তুলেছেন চিংড়ি প্রকল্প। ২০০৮ সালে পূর্বাচলে র্যানরিকা নামক প্রকল্পের মাধ্যমে প্লট বরাদ্দ দেয়ার কথা বলে পুলিশ সদস্যদের কায় থেকে নিয়েছেন ১০ কোটি টাকা। পরে প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। পল্লবীতে ৯ কোটি টাকায় বানিয়েছেন জমির প্রকল্প। তার স্ত্রী পনম সমিতির চেয়ারম্যান থাকাকালে ২ কোটি টাকা আÍসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
গাজীপুরের মাওয়ায় ২০ কোটি টাকায় কিনেছেন ৩০ বিঘা জমি। স্কাইওয়েজ কোম্পানির মালিক মানিক মিয়ার -বাড়ি ৩৯৬- রোড ৬- বারিধারা- ডিওএইচএস- সঙ্গে ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প তৈরি করেছেন। দুবাইয়ে মানিক মিয়ার সঙ্গে -দুবাই অফিস-ফ্লোরিডা হোটেল- ১ম তলা- ১০২ নম্বর কক্ষ- পোস্ট বক্স-১১৩৮১- ২৫ কোটি টাকা পুঁজির মাধ্যমে যৌথ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন ব্যাংকে তার নামে-বেনামে প্রায় ১০০ কোটি টাকা রয়েছে বলে দুদক মনে করছে। দুদকে আসা এক অভিযোগে বলা হয়েছে- মুক্তিযোদ্ধা লতিফের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে তার ভাগ্নে মুর্শেদ আলীর মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির কথা বলে বিভিন্ন কায়দায় ৩০ বিঘা জমি, ১টি দোকান ও ৩ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। মুর্শেদের নামে তিনি ১৪০ বিঘা জমি রেজিস্ট্রি করিয়েছেন। মানিকখালী বাজারে রেলওয়ের জমির ওপর মুর্শেদের নামে ১টি মিনি মার্কেট তৈরি করে দিয়েছেন। এর মূল্য ১৮ কোটি টাকা। মুর্শেদের কাছ থেকে কিছু জমি নূর মোহাম্মদ নিজ নামে রেজিস্ট্রি করছেন।
তার নামে জনতা ব্যাংক মানিকখালী বাজার শাখায় মোটা অংকের টাকা রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে দাখিলকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধান অনুযায়ী ভাগ্নে শাওন ও মনকে ব্যবসার জন্য তিনি দিয়েছেন ১৫ কোটি টাকা। তার বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন কটিয়াদী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিলন। দীর্ঘদিন আগে বাড়ি নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এখন পর্যন্ত তার ৮৪ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়নি। সম্প্রতি কটিয়াদীর চাতল হাইস্কুল সংলগ্ন এলাকায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার জমি বিক্রি করেছেন দারোগা মজিবুরের কাছে। কম দামে দলিল করে এখানে কর ফাঁকি দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, তার আত্নীয় সামছুদ্দিনকে ৩০ লাখ টাকা পুঁজি ও ১০ কাঠা জমি কিনে ব্যবসা ধরিয়ে দিয়েছেন। মিশনে লোক পাঠানোর সময় ৫৬০ জনের মধ্যে ১০০ জনকে সঠিকভাবে পাঠানো হয়। বাকি ৪৬০ জনের কাছ থেকে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা ঘুষ নেয়া হয়। বিশ্বাস বিল্ডার্স নামে এক কোম্পানির সঙ্গে ১০ কোটি টাকায় যৌথ ব্যবসা রয়েছে নূর মোহাম্মদের।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮