তৌহিদুল ইসলাম চঞ্চল, বিশেষ প্রতিনিধি
নিজের কাছে দলিল থাকা সত্ত্বেও ১৬ বছর ধরে জমি রয়েছে অবৈধ দখলে এই অভিযোগ তুলেছেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মো. আইনুল হক। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রভাব খাঁটিয়ে দখলদাররা করেন মামলা।কিন্তু আদালতে মূল মামলার ও আপিল মামলার রায় পক্ষে থাকলেও জমি এখনও দখলমুক্ত হয়নি। তাই এতো বছরের হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির কথা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকার ও প্রশাসনের ক্ষতিপূরণের দাবি করলেন বৃদ্ধ আইনুল।
পাশাপাশি নিজ জমি দখলমুক্ত করতে চাইলেন প্রশাসনের সহযোগিতা এবং দোষীদের উপযুক্ত বিচারের দাবি জানালেন।
বৃহস্পতিবার -২২ মে-বিকেলে উপজেলার কাকিনায় অবস্থিত নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মাধ্যমে এই আর্জি জানান আইনুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আইনুল বলেন, “আমার জমির মূল মালিক ছিলেন ত্রৈলক্ষনাথ ভট্টাচার্য ও কাশীমোহন ভট্টাচার্য। পরে ত্রৈলক্ষনাথের স্ত্রী কুসুম কুমারী দেব্যা ১৯৫৫ সালে ২ একর জমি মো. ফোরকান উল্লাহকে পাট্টা দলিল দেন। সেই জমির একটি দাগ নম্বর ছিল ৪১৮৭।সেই দাগে থাকা ত্রৈলক্ষনাথদের পারিবারিক শিবমন্দিরের জমি ছিল ৪ শতক। তা বাদ দিয়ে অবশিষ্ট ২৪ শতাংশ জমি ফোরকান উল্লাহ নিজে ভোগ করেন। পরে ১৯৭৪ সালে ফোরকান সেই জমি ফজলুল হক ও আইনুল হক -আমার-কাছে দলিল মূলে মালিকানা বুঝিয়ে দেন।“
তিনি আরও বলেন, “ এরপর ২০০৮ সালে রনজিৎ মোহন্ত, কালীপদ সেন ও পুতুল সেন নামে তিনজন ব্যক্তি এই অবৈধয়ভাবে এই জমির মালিকানা দাবি করেন ও মামলা করেন। সেই মামলা চলাকালীন সময়ে কাকিনা ইউনিয়ন আ. লীগের সাধা : সম্পাদক ও চেয়ারম্যান শহিদুল হক শহিদ এবং সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও কাকিনা ইউনিয়ন আ. লীগের সভাপতি তাহির তাহু আমাকে আপোসের কথা বলে শুধু পূজা অনুষ্ঠানের জন্য সাময়িকভাবে ২-৩ শতক জমি ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু উল্লিখিত বিষয়টির লিখিত প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও পূজা শেষে আমার জমি ফেরত না দিয়ে উলটো দখলে নিয়ে সেখানে স্থায়ী ঘর নির্মাণ করেন রনজিৎ ও কালীপদরা। সেই মামলার দীর্ঘ কার্যক্রম শেষে গত ২০২২ সালে মূল মামলায় আমার পক্ষে আদালতের রায় পাই। কিন্তু রনজিৎ রা জেলা জজ আদালতে আপিল করেন। পাশাপাশি আপিলের প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম চলাকালীন সময়েও অবৈধ কার্যকলাপ চালিয়ে যান। এমনকি ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও তারা আদালতের আদেশ অমান্য করে ঘর নির্মাণ অব্যাহত রাখেন।"
আইনুল হক বলেন, “অবশেষে ২০২৫ সালের ১৯ মে আপিল মামলাতে বিজ্ঞ আদালত বাদীদের আবেদন খারিজ করে দেয়।“
আইনুল হক অভিযোগের সুরে বলেন, “গত ১৬ বছর ধরে আমি বিভিন্নভাবে হয়রানি ও মানসিক চাপের মধ্যে ছিলাম। এছাড়াও মামলার খরচ, নিরাপত্তা ও সামাজিক সম্মানহানির মুখে পড়েছি।“
তিনি সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং জমি অবৈধ দখলমুক্ত করার দাবি জানান। এছাড়াও তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আইনুল হকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রনজিৎ মোহন্ত, কালীপদ সেন ও পুতুল সেনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি। এমনকি ইউনিয়ন আ. লীগের সভাপতি তাহির তাহুর মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয়দের দাবি, রনজিৎ ৫ আগস্টের পর ভারতে পালিয়ে গেছেন আর তাহু আত্মগোপনে আছেন।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮