
চঞ্চল,
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ইটভাটা শ্রমিক খোকন হত্যাকাণ্ডের দুই বছরেরও বেশি সময় পর অবশেষে রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে। চাঞ্চল্যকর এই ক্লুলেস হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি হিসেবে অভিযুক্ত মোঃ সফিউল ইসলামকে -৪০- গাইবান্ধা থেকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এনেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন -র্যাব-।
বুধবার -৯ জুলাই- বিকেলে র্যাব-১৩ এর মিডিয়া উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই সফল অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সফিউল ইসলাম গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার গোমাট এলাকার মৃত তনছেরের ছেলে।
ঘটনার প্রেক্ষাপট: নিখোঁজ থেকে শ্বাসরোধে হত্যা
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ঘটনাটি প্রায় দুই বছর আগে তথা ২০২৩ সালের ১৩ মে ঘটে। নিহত খোকন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের জাজিরা এলাকার একটি ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সেদিন ইটভাটার সর্দার আলম ফোন করে খোকনের স্ত্রীকে জানান যে, তার স্বামী বুড়িগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন।
পরিবারের দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর জাজিরা গ্রামের –বোটঘাট- সংলগ্ন বুড়িগঙ্গার নদীর পশ্চিম অংশের পানিতে খোকনের ভাসমান মরদেহ পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে এটিকে পানিতে ডুবে মৃত্যু বলে ধারণা করা হলেও, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পুরো ঘটনাকে নতুন মোড় দেয়। নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ মফিজুদ্দিন প্রধান –নিপুন- তার প্রতিবেদনে মতামত দেন যে, খোকনের মৃত্যু পানিতে ডুবে নয়, বরং শ্বাসরোধ করার কারণে হয়েছে।
এই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে, ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট খোকনের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
র্যাবের ছায়া তদন্ত ও সফল অভিযান
মামলাটি ক্লুলেস হওয়ায় এবং আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় র্যাব-১৩ ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। অবশেষে, দীর্ঘ দুই বছর পর সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব আসামির অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
গত মঙ্গলবার -৮ জুলাই- সন্ধ্যায় র্যাব-১৩, গাইবান্ধা সিপিসি-৩ এর একটি আভিযানিক দল গাইবান্ধা সদরের কামারজানী বাজারে অভিযান চালায়। সেখানকার ‘রাফিয়া হোটেল এন্ড সুইটস’ এর সামনে থেকে খোকন হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি সফিউলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-১৩ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক –মিডিয়া- বিপ্লব কুমার গোস্বামী জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তারকৃত সফিউলকে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
তার গ্রেপ্তারের মাধ্যমে এই ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের পেছনের মূল রহস্য উদঘাটন হবে বলে আশা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।