সিলেট থেকে শেখ জাবেদ আহমদ
টেকনাফের দুর্গম পাহাড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে জকিগঞ্জের নিখোঁজ হওয়া ৫ তরুণসহ ৬ জনকে। পাচার হবার সর্বশেষ ধাপে ছিল তারা। আর সামান্য দেরি হলেই হয়তো পরিবার, স্বজন ও দেশের সঙ্গে আজীবনের আড়ি হতো। যদ্দুর শুনেছি, অপহরণকারীরা সাগরে পাঠিয়ে দেবার সমস্ত আয়োজন করে ফেলেছিল। নৌকায় উঠলেই এরা আর দেশ চোখে দেখত না। কারণ টাকা দিয়ে এদের উদ্ধার করা মতো সঙ্গতি কোনো পরিবারেরই নেই।
মিডিয়ায় সিরিয়াসলি প্রচার হবার এক দিনের মধ্যেই উদ্ধার হয়েছে তারা। দেশের বাস্তবতায়, টেকনাফের অবস্থা বিবেচনায় এবং তাদের পরিবারের যে অসহায়ত্ব তাতে এত দ্রুত উদ্ধার পাওয়া আশাতীত ঘটনা।
এটা সম্ভব হয়েছে স্থানীয় ও জাতীয় প্রায় প্রতিটি মিডিয়ার আন্তরিকভাবে গুরুত্বসহ খবর প্রচার এবং জকিগঞ্জ ও টেকনাফ থানা পুলিশের পেশাদারিত্বের জোরে। পাশাপাশি, এলাকা ও এলাকার বাইরের মানুষজন অভাবনীয় সাড়া দিয়েছেন। বেশ কিছু মানুষ দায়িত্ব নিয়েছেন, ঝাঁপিয়ে পড়েছেন বলা যায়।
আমাদের মানুষজন অভিযোগ প্রবণ। তাছাড়া এসব ঘটনায় এমনিতেও এত কিছু ঘটে, মানুষ প্রচুর অভিযোগ করতে বাধ্য হয়। এই একটা ঘটনায় পরিবারগুলোর কোনো অভিযোগ ছিল না। আমি কালকে থেকে আপডেটেড ছিলাম। তারা যেখানেই গেছেন, সবাই আন্তরিকভাবে তাদের সমস্যা শুনেছে, বুঝেছে। আমাদের উপজেলা থেকে জেলা শহর সিলেটে পৌঁছাতেই সময় লাগে ৩ ঘন্টা। সেখানে হতদরিদ্র মানুষগুলো টেকনাফ গিয়ে এক দিনের ভেতর ৬ জনকে উদ্ধার করে ফেলেছে। এটা নিশ্চয়ই ম্যাজিক না। অনেকের চেষ্টা ও শ্রম।
কোথায় কার এফোর্ট কতখানি ছিল এখন বুঝতে পারছি না। যারা এফোর্ট দিয়েছেন তারা নিশ্চয়ই জানেন।
সবাইকে তো আর আমি রিচ করতে পারব না। অন্তত আমার মাধ্যমে যারা কাজ করেছেন এবং কন্সার্ন হয়েছেন সবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাচ্ছি।
৬ টা পরিবারে আজকে ঈদের আনন্দ। এই ঈদ যারা টেকনাফের পাহাড় থেকে নামিয়ে আনলেন, যাদের চেষ্টা ও শ্রমে ১৮/১৯ বছরের ছেলেগুলো বাকি জীবন দেশের মাটিতে নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পেল...খোদা আপনাদের ভালো করুক।
রাজমিস্ত্রীর কাজে দেশের এক কোণা থেকে আরেক কর্ণারে ছুটে গিয়েছে ছেলেগুলো। এরা হারালে পরিবারের লোকজনের মুখ থেকে শুধু হাসি নয়, খাবারও হারিয়ে যেত।
আপনাদের সকলের ভালো হোক।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮