মোঃ রাকিবুল হাসান
শেরপুর প্রতিনিধি।।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের বনগাঁও নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম। তিনি সারাবছরই তার জমিতে নানান ধরনের সবজি চাষাবাদ করে থাকেন। তবে এবার তিনি স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে রঙিন ফুলকপি চাষ করে বাম্পার ফলন ফলিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। শফিকুল ইসলাম তার অল্প জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে শুধু জৈব সার প্রয়োগ করে চার রঙের ফুলকপি চাষ করে দ্বিগুণ লাভবান হয়েছেন। শফিকুলের এমন সফলতা দেখে আগ্রহী হচ্ছেন স্থানীয় অনেক কৃষকরাও। আর রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য দেখতে শফিকুলের ক্ষেতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন স্থানীয় কৃষকসহ উৎসুক জনতা। কেউ নিচ্ছেন পরামর্শ আবার কেউ তুলছেন ছবি। ঝিনাইগাতি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কৃষক শফিকুল ইসলাম কৃষি অফিসের পরামর্শে তার নিজস্ব ১৫ শতক জমিতে চার রঙের ফুলকপির বীজ বপন করেন। এতে তিনি কোন প্রকার রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার না করে শুধু জৈবসার ব্যবহার করছেন। এতে চারাসহ সব মিলে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। চারা রোপনের ৭০ থেকে ৭৫ দিন পর ক্ষেতে আসে রঙ্গিন ফুলকপি। শফিকুল জানান, রঙ্গিন ফুলকপি বিক্রি শুরু করেছেন তিনি। তিনি আশা করছেন, পুষ্টিগুণে ভরপুর এই রঙ্গিন ফুলকপিগুলো প্রায় ১লাখ ৩০ হাজার টাকার মতো বিক্রি করতে পারবেন। এসব রঙিন কপি বাজারে নেওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যায়। একই গ্রামের কৃষক জামিল, ছাত্তার, করিম জানান, আমাদের এলাকায় শফিকুলের আগে অন্য কেহ রঙিন ফুলকপির চাষ করে নাই। আমিও ফুলকপিগুলো এর আগে দেখেছি। তবে এখানে খুব ভালো ফলন হয়েছে। এসব কপি আবাদে খরচ কম এবং বাজারে চাহিদা ও দাম বেশি। আগামীতে আমরাও আমাদের জমিতে রঙিন ফুলকপির চাষ করবো। ঝিনাইগাতি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, কৃষক শফিকুল ইসলাম শাকসবজি চাষে খুবই আগ্রহী। তিনি প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন। তার দেখাদেখি স্থানীয় অনেক কৃষকই এখন রঙিন ফুলকপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ফুলকপি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি সবজি। বিশেষ করে ফুলকপিতে ভিটামিন সি, ই, কে, ফলিক এসিড, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে। এটি ক্যানসার প্রতিরোধেও কাজ করে। উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার মঞ্জুরুল হক বলেন, কৃষক শফিকুল ইসলামের মতো যদি অরো কৃষক আগ্রহি হয়ে রঙ্গিন ফুলকপি চাষ করে। এক দিকে যেমন কৃষকরা আর্থিক ভাবে লাভবান হবে, অপর দিকে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অভ্যন্তরে রপ্তানি করে দেশের উৎপাদনে যুগান্তকারি ভূমিকা রাখবে। শেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষণ বিষয়ক কর্মকর্তা সুলতান আহম্মেদ বলেন, সাধারণ কপির চেয়ে রঙিন ফুলকপির চাহিদা বাজারে বেশি। উৎপাদন খরচও তুলনামূলক খুব একটা বেশি না। কৃষকদের সকল পরামর্শ দিতে জেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের সহযোগিতায় সব সময় পাশে আছে।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮