মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ,
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প অফিসে নিয়মবহির্ভূতভাবে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার ঘটনায় দিনভর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসজুড়ে। আজ সকালেই ছয় হলের জাকসুর কয়েকজন প্রতিনিধি জাকসু পরিচয় ব্যবহার করে এবং প্রশাসনের পূর্বানুমোদন ছাড়াই প্রকল্প অফিসে প্রবেশ করে কর্মচারী ও প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা প্রকল্প অফিসে গিয়ে বিভিন্নভাবে কর্তৃত্ব ফলান এবং হঠাৎই অফিসের মূল প্রবেশদ্বারে তালা ঝুলিয়ে দেন।
প্রকল্প অফিসের কর্মচারীরা জানান, ঘটনাটি এতটাই আকস্মিক ছিল যে তারা হতভম্ব হয়ে পড়ে। এ সময় জাকসুর ওই প্রতিনিধিদের কাছ থেকে গালিগালাজ ও হুমকি-ধামকির মতো আচরণের মুখোমুখি হতে হয় বলে তারা দাবি করেন। এমনকি ঘটনার অডিও রেকর্ডও সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে কর্মচারীরা জানিয়েছেন।
ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, হল ও দপ্তরে বিষয়টি নিয়ে জল্পনা-কল্পনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও ঘটনাটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিকেল থেকেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি পর্যালোচনা শুরু করা হয়।
সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও জাকসুর প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাকসুর পক্ষ থেকে প্রকল্পের নথিপত্র চাওয়া কিংবা প্রকল্প অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার মতো কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত এবং জাকসুর গঠনতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অভিযোগ রয়েছে, বৈঠকে জাকসুর পক্ষ থেকে প্রকল্পের নির্দিষ্ট কিছু নথি নেওয়ার জন্য প্রকল্প পরিচালককে চাপ প্রয়োগ করা হয়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে জাকসু প্রতিনিধি দল প্রকল্প অফিসের তালা খুলে দেয়।
ঘটনা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রকল্প অফিসে তালা ঝুলানোর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, একটি বিশেষ গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে প্রকল্পের কার্যক্রম স্থবির করে দিতে নানা ইন্ধন দিয়ে আসছে এবং আজকের ঘটনাও সেই ধারাবাহিকতার অংশ হতে পারে।
ঘটনার পর থেকে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও প্রশ্ন উঠেছে—গঠনতন্ত্র বহির্ভূতভাবে ছাত্রসংগঠনের একটি অংশ প্রকল্প অফিসে হস্তক্ষেপ করতে পারে কীভাবে, এবং প্রশাসন এ বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনার বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮