ইসমাইল ইমন চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার -২৬ মার্চ- সূর্যোদয়ের পর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সিটি মেয়র বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবসে আমি ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের শহীদদের স্মরণ করি এবং মুক্তিযুদ্ধে যারা আত্মত্যাগ করেছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধে দেশের পক্ষে নানাভাবে ভূমিকা সকল বীরকে শ্রদ্ধা জানাই।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন রক্ষায় সিটি কর্পোরেশনের পরিকল্পনা তুলে ধরে মেয়র বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বদ্ধভূমিগুলো নতুন প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা জরুরি। আপনারা জানেন ১৯৭১ সালের ১০ নভেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পায়োনিয়ার ফোর্স চট্টগ্রামের পাহাড়তলি অঞ্চলে এক নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। পাঞ্জাবি লেইন, বিহারী লেইন, ওয়ারলেস কলোনিসহ বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়ে ছিলো।
“পরবর্তী প্রজন্মের জন্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে পাহাড়তলীতে বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। বধ্যভূমির পিছনে যে জায়গাগুলো এখনো বেদখল আছে এবং বিভিন্ন মামলার কারণে বধ্যভূমির জায়গা সংরক্ষণ করা যাচ্ছেনা আমরা চেষ্টা করছি সেগুলোর সমাধান করে কীভাবে বধ্যভূমি সম্প্রসারণ করা যায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করব। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যারা এখনো বেঁচে আছেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা করেন তাদেরকে নিয়ে আমরা কমিটি করে বধ্যভূমি সংরক্ষণ করার আমরা চিন্তাভাবনা করছি এবং বধ্যভূমিতে প্রাণ হারানো শহীদদের নামের নামফলক স্থাপনের পরিকল্পনা আছে আমাদের।
স্বাধীনতা দিবসে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে মেয়র বলেন, আমরা একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি দীর্ঘদিন ধরে এবং সেই স্বপ্নটি আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে। এখানে উল্লেখ্য যে ২০২৪ আর ৭১ কে নিয়ে কোন ধরনের বিভেদ কিংবা কোন ধরনের বিতর্কে যাওয়া কখনো উচিত হবে না। ৭১ এবং ২৪ ইতিহাসে নিজ নিজ জায়গায় থাকবে। কোন একটিকে দিয়ে আরেকটি ঢেকে দেওয়ার চিন্তাভাবনা আমাদের করা উচিত নয় বলে আমি মনে করি। কারণ ৭১ এ একটি দেশ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের জন্য মানুষ যুদ্ধ করেছে এবং এমন একটা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। আর ২০২৪ এ একটি দল যারা ১৬ বছর ধরে ফেসিস্ট কায়দায় মানুষের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকারকে শেষ করে দিয়েছে সেটা রোধ করেছে ছাত্র-জনতা রক্তদানের মধ্য দিয়ে। আজকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হয়েছে এবং আমরা আশা করছি অনতিবিলম্বে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি বৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি বৈধ সংসদ দিয়ে মানুষের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার বাস্তবায়ন করবে।
এসময় মেয়রের সাথে শ্রদ্ধা জানান চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী বৃন্দ। এরপর মেয়র টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানোর পর দোয়া ও আলোচনা সভায় অংশ নেন।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮