চট্টগ্রাম ব্যুরো:
সুয়ারেজ লাইন চট্টগ্রাম ওয়াসার একটি পাইলট প্রকল্প যেখানে চট্টগ্রাম শহরের প্রত্যেকটা বাড়ির মলমূত্র এবং ময়লা পানি একটি নির্দিষ্ট স্থানে স্থানান্তর করে চট্টগ্রাম শহরকে একটি স্বাস্থ্য-কর নগরী উপহার দেয়াই চট্টগ্রাম ওয়াসার অন্যতম লক্ষ্য বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
নগরীর মনছুরাবাদ এলাকার পশ্চিম পাড়া নামক এলাকায় সুয়ারেজ প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে বাঁধার সম্মুখীন হন স্থানীয় প্রকল্প কাজের লোকজন। সারোয়ার আলম জুয়েল নামে এক ব্যক্তি এমন হুমকি দিয়েছে বলে জানান প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করা লোকজন।
বিষয়টি প্রকল্প পরিচালক বরাবর জানানো হলে তিনি বিষয়টি তদন্ত করার জন্য একজন ইঞ্জিনিয়ার সহ প্রায় ৬ জনের একটি টিম বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন করা অবস্থায় হুমকী প্রদানকারি জুয়েলকে মুঠোফোনে কল দিয়ে, হুমকির দেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি দ্বায়িত্বরত ওয়াসার এক কর্মকর্তাকে বলেন, এটি তার(জুয়েল) এর ব্যক্তিগত রাস্তা। অথচ কাগজপত্র করে নথী পত্র ইত্যাদি যাচাই করে জানা যায় এটি একটি এজমালি রাস্তা বা চলাচল পথ হিসেবে ২০১২ সালের কোর্টের একটি আদেশে স্পষ্ট উল্লেখ আছে। ওয়াসার প্রকল্পের লোকজন কোর্টের আদেশের কথা উল্লেখ করলে," সন্ত্রাসী জুয়েল প্রতি বলে " কোর্টকে বিষয়টি আমাকে এখানে এসে বুঝিয়ে দিতে বলেন"। এই রাস্তা ব্যক্তিগত রাস্তা সুতরাং এখানে কোন সরকারি কাজ কর্ম চলতে দিব না। " পরে প্রকল্পের লোকজনকে সে(সন্ত্রাসী) আরো বলে এই চলাচল রাস্তা নিয়ে বিরোধ চলমান। সে এটাও দাবি যে " সে প্রকল্প পরিচালকে সহ স্থানীয় কয়েকজন ইন্জিনিয়াকেও বিষয়টি অবগত করেছে, তবে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বিষয়টি মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য ২০০৯ সালে চলাচল রাস্তাটি নিজের ক্রয়কৃত সম্পত্তি দাবি করে ১৪৫ ধারায় মামলা করে জুয়েল এর মাতা বর্তমানে মৃত। পরে আদালত থানা এবং সহকারী ভূমি অফিসের তদন্ত প্রতিবেদনের নথী এবং সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ এর আদলে ২০১২ সালে একটি আদেশ দেয়। সে দীর্ঘ এক যুগ পার করার পরও রাস্তাটি নিজের জমি বলে দাবি, রাস্তা প্রতিনিয়ত নির্মাণ সামগ্রী রেখে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করেই যাচ্ছে।
জুয়েলের সাথে অন্যায় কাজের সহযোগী হিসেবে যুক্ত হয়েছ, লোকাল পাতি নেতা যার নাম রুবেল, জানা যায় সে আবার সোয়ারেজ প্রকল্পের লোকাল কন্ট্রাক্টর, ধারণা করা হচ্ছে তার আসকারা পেয়ে জুয়েল আরো ব্যাপোরোয়া আচরণ করছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জুয়েল প্রতিপক্ষের চলাচল এর জন্য পাঁচ লাখ টাকা চাদা দাবি করে। তবে পরবর্তীতে সে বিষয়ে তার অস্বীকারও করে।
এর সাথে স্থানীয় আরো কিছু কুচক্রী মহল জড়িত যারা মূল রাস্তাটিকেও চসিকের উন্নয়ন কার্যক্রম করতেও বাধা দিয়ে আসছে অথচ এই ক্ষুদ্র রাস্তাটি দিয়েই কবরস্থানে যেতে হয়।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে ঐ এলাকার স্থানীয় একজন জানান মনছুরাবাদ পশ্চিম পাড়া এলাকায় মির্জা বাড়ি কবর স্থানটিতে এই এলাকার মানুষ মরলে কবরের খাটিয়া পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া মুশকিল, এই খানের বিল্ডিং গুলো যে যার মত নির্মাণ করেছে কেউ সিডিএর প্লান নিয়ে করেছে বলে মনে হয় না। জুয়েলও তার মন যা চায় তাই করছে, কে বাঁধা দিবে স্বাধ্যই বা কার।
হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পকে জনবান্ধব না করে জন দুর্ভোগ এর কারণ চট্টগ্রাম ওয়াসার সুয়ারেজ কর্তৃপক্ষকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে একদল সন্ত্রাসী গ্রুপ, তারা কোথাও কোথাও এক বা কোথাও বহু। আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা না করলে তাদের দৌরাত্ম কমানো যাবেনা বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
রাস্তায় বাঁধা প্রদান সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপির এক সহকারী পুলিশ কমিশনার জানায় সরকারি কাজে বাধা প্রদানের কোন অভিযোগ পেলে আমরা ছাড় দিব না। সুয়ারেজ প্রকল্প যেহেতু একটি সরকারি প্রকল্প সে প্রকল্পের কাজে কেউ বাঁধা দিলে, যথাযথ কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে সংবাদ প্রেরণ করলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রকল্প পরিচাল আরিফুল ইসলাম বলেন " এ ধরনের কিছু কিছু ব্যক্তি রয়েছে যাদের কাজই হল এসব করে বেড়ানো, তবে চিন্তার কিছু নেই আমরা প্রতিটি বাড়িকে সোয়ারেজ প্রকল্পের আওতায় আনব, যেখানে পাইপলাইন বসানো যায় সেখানেই আমরা এ কার্যক্রম পরিচালনা করব। আর এসব দুষ্ট প্রকৃতির লোক যদি গায়ের জোরে বাঁধা দেয় তাহলে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট আছে, পুলিশ আছে যদি প্রয়োজন পড়ে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নেব। কোন সন্ত্রাসীকে আমরা প্রশ্রয় দিবোনা।
এদিকে সারোয়ার আলম জুয়েল সরকারি কাজে বাধা এবং হুমকি দিয়ে সিআরপিসির ৩৩৯, ৩৪৯, ৩৫০, ৩৭৭, ৪০৩, ৪২৫, ৪৬৩, ১০৭, ১২০ক, ১৯১ এর স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে বলে মন্তব্য করেন একজন আইনজীবী।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮