কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ।।
কথায় আছে কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ। কিন্তু পৃথিবীর বুকে একমাত্র দুর্যোগ পৌষ মাস ডেকে আনতে পারে না। দুর্যোগের ডাকে সবসময় সাড়া দেয় পৃথিবীর সর্বনাশ।
দুর্যোগের কারণে প্রতিবছর সারা বিশ্বে জীবন ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করার কোনো উপায় এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তবে এ বিষয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি থাকলে ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম পর্যায়ে রাখা সম্ভব। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নানা কারণে বিশ্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েই চলেছে।
ফলে দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া জরুরী। এ প্রেক্ষাপটে আজ ১৩ অক্টোবর পালিত হয়ে থাকে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস।
প্রতিবছরের ন্যায় এবার দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে- 'দুর্যোগে আগাম সতর্কবার্তা সবার জন্য কার্যব্যবস্থা'। এ প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলায় সবাইকে একসঙ্গে ও সমন্বিতভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
প্রাকৃতিক দূর্যোগ কমানোর সুযোগ মানুষের হাতে নেই তবে, এই মানুষের জন্যই পৃথিবীর বুকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের বৈশ্বিক সংস্কৃতির প্রচারের জন্য ১৯৮৯ সালের ১৩ অক্টোবরকে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের জন্য আন্তর্জাতিক দিবস হিসাবে মনোনীত করেছে।
জাপানে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে জাতিসংঘের তৃতীয় বিশ্ব সম্মেলনে গৃহীত দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ২০১৫-২০৩০ এর সেন্ডাই ফ্রেমওয়ার্কের সাথে সামঞ্জস্য রেখে দুর্যোগ ঝুঁকি ও জীবন, জীবিকা এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতি হ্রাস করার দিকে অগ্রগতি স্বীকার করার এটি একটি সুযোগ।
২০১৬ সালে জাতিসংঘের মহাসচিব সেনদাই সেভেন ক্যাম্পেইন শুরু করেছিলেন সাত বছরের মধ্যে সাতটি লক্ষ্যের প্রতিটিকে প্রচার করতে। ২০২২ সালল টার্গেট হল 'টার্গেট জি'। ২০৩০ সালের মধ্যে বহু-বিপদ প্রারম্ভিক সতর্কীকরণ সিস্টেম এবং দুর্যোগ ঝুঁকির তথ্য এবং মূল্যায়নের প্রাপ্যতা এবং অ্যাক্সেস উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা।
দুর্যোগ মানুষের জীবন ও মঙ্গলের উপর যে প্রভাব ফেলে তার উপর দিবসটির ফোকাস রেখে এই বছরের প্রতিপাদ্য হচ্ছে দুর্যোগ ঝুঁকির তথ্য বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরা। গান এবং সঙ্গীত দুর্যোগের ঝুঁকি প্রতিরোধ এবং হ্রাস করার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি দুর্দান্ত যোগাযোগের হাতিয়ার প্রদান করে। এই কারণেই ইউনিসেফ, ইউএনডিআরআর এবং উজবেকিস্তানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এই বছরের আন্তর্জাতিক দুর্যোগ দিবস উপলক্ষে "সিং ফর রেজিলিয়েন্স" বাদ্যযন্ত্র প্রতিযোগিতার ঘোষণা করেছে।
এখানে প্রত্যেকেরই তাদের প্রতিভা দেখানোর এবং তাদের গান জমা দিয়ে দুর্যোগ ঝুঁকি কমানোর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করে তাদের সম্প্রদায়ের নিরাপত্তায় অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলো এমন একটি ঘটনা যা সমগ্র পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
এটি হল এমন একটি গুরুতর সমস্যা যা স্বল্প বা দীর্ঘ সময়ের জন্য ঘটে এবং ব্যাপক মানবিক, বস্তুগত, অর্থনৈতিক বা পরিবেশগত ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে। যা ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায় বা সমাজের নিজস্ব সম্পদ ব্যবহার করেও মোকাবেলা করার সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যায়। যখন কোনো দুর্যোগ আঘাত হানে তখন উন্নয়নশীল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। বিপত্তির কারণে শিল্পোন্নত দেশগুলোর তুলনায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ৯৫% এরও বেশি মৃত্যু হয় এবং প্রাকৃতিক বিপত্তির কারণে ২০ গুণ বেশি (জিডিপির শতাংশ হিসাবে) ক্ষতি হয়।
সব জিনিসের একদিন অবসান হয়। একদিন হয়তো পৃথিবীর বুকে প্রাকৃতিক দুর্যোগেরও অবসান হবে।
আর সেই দুর্যোগ মোকাবেলায় সর্বস্তরলর মানুষের হয়ে উঠতে হবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিরুদ্ধে সচেতন, সকলকে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে দুর্যোগমোকাবেলায়। আমাদের দেশেও প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দুর্যোগে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেই ক্ষয়ক্ষতি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে নিজেদেরই সচেতন হওয়া উচিত এবং দুর্যোগ প্রতিরোধে একযোগে কাজ করা উচিৎ।
যোগাযোগের ঠিকানাঃ মোল্লা ব্রিজ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪। মোবাইলঃ ০১৯১৮-৪০৪৭৬০, বিজ্ঞাপনঃ ০১৭৩৩-৩৬১১৪৮