বিশেষ প্রতিবেদক।।
ট্যাংক লড়ি চালক ও শ্রমিকদের উপর সন্ত্রাসী হামলা ও চাঁদাবাজি বন্ধের প্রতিবাদে বরিশালে দুইঘন্টা ধর্মঘট ও কর্মবিরতি পালন করেছে ট্যাংক-লড়ি শ্রমিক ইউনিয়ন। এসময় তেল পরিবহন বন্ধ করে দেওয়ার কারণে অনেক পাম্পে পেট্রোল ও অকটেন সংকট তৈরি হয়। শ্রমিকরা স্থানীয় কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবীতে এই ধর্মঘট পালন করছে বলে জানা গেছে ।
পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন তারা।
১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল ৯টায় হঠাৎ করেই বরিশালের বাধরোডের মেঘনা পেট্রোলিয়াম ডিপোর সামনে থেকে বেলস পার্ক পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত ট্যাংক লড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। লড়ি চালক ও শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়- গতরাতে একদল সন্ত্রাসী বিভাগীয় শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ মাসুদ রানার উপর হামলা চালিয়ে তাকে আহত করেছে এবং লড়ি প্রতি ৫০০ টাকা করে চাঁদা দাবি করেছে। চাঁদা না দিলে তারা লড়ি চলতে দেবেনা বলায় প্রতিবাদে ধর্মঘট ডেকেছে ট্যাংক লড়ি চালক ও শ্রমিকরা।
বরিশালের বাধ রোডে প্রধান সড়কে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড এবং কেডিসি রোডে পদ্মা পেট্রোলিয়াম। এই দুটি ডিপো থেকেই বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি জেলায় নিয়মিত তেল সরবরাহ করা হয়। মেঘনা ডিপো থেকে বৃহস্পতিবার ৬০-৭০টি এবং অন্যান্য দিন ৪০-৫০টি লড়ি নিয়মিত তেল সরবরাহ করে বলে জানান মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড এর তত্ত্বাবধায়ক কামরুল ইসলাম। তবে বাহিরে অপেক্ষমান ট্যাংক লড়ি দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ে তিনি কিছু বলতে নারাজ। এসময় বিভাগীয় শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামাল হোসেন বলেন- ১০ নং ওয়ার্ডের এই দুটি ডিপোতে ১২০টির মতো ট্যাংক লড়ি চলাচল করে। প্রতিটি লড়ি থেকে ৫০০ টাকা করে চাঁদা দাবি করেছে স্থানীয় কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন ও তার লোকেরা। তারা রীতিমতো এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। তেল সরকারের আর গাড়ি মালিকানা। শ্রমিকরা কি করে তাকে চাঁদা দেবে? এ কথায় জয়নাল আবেদীন ও তার সহযোগী রাজু ক্ষিপ্ত হয়ে মাসুদ রানার উপর হামলা চালায় এবং তাকে মারধর করে মারাত্মক জখম করে। এ ঘটনার প্রতিবাদ সকাল নটা থেকে ১১টা পর্যন্ত ধর্মঘট চলেছে। পরে সেনাবাহিনীর মেজর ও মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের লোকের আশ্বাসে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছি বলে জানান কামাল।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন জানালেন- আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে একটা মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। মেঘনা ডিপোর শ্রমিকদের সাথে তার ছেলেদের মারামারির ঘটনা ঘটেছিল। তিনি শুধু মিটমাট করে দিয়েছেন। ওরা এই সুযোগে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা দোষারোপ শুরু করেছে।
বিষয়টি নিয়ে মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন- যেহেতু সেনাবাহিনীর সিইও নিজেই এটি দেখছেন- আজ বেলা দুটোয় এ নিয়ে বৈঠকও করবেন তিনি। তারপর বিস্তারিত জানাতে পারবো বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা।