শরীয়তপুর প্রতিনিধি।।
শরীয়তপুরের জাজিরায় ডাকাতি ও হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলার আসামি জসিম মোল্লা -৩৫- নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার -১৫ আগস্ট- দুপুরে জাজিরা উপজেলার বিকেনগর ইউনিয়নের বড়কৃষ্ণনগর বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ গেট সংলগ্ন মুন্সি কান্দি গ্রামের জলিল শিকদারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জসিম মোল্লা জাজিরা উপজেলার সেনেরচর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আইয়ুব মোল্লার ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়- ২০২২ সালে সেনেরচর ইউনিয়নের রিপন মোল্লা নামের একজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে আলোচনায় আসে জসিম মোল্লা। এর আগে তিনি বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করতে গিয়ে পুলিশ ও র্যাবের হাতে একাধিকবার ধরা পড়েছে। অধিকাংশ সময়ই তিনি পুলিশের পোশাক ব্যবহার করে ডাকাতি করতেন। এছাড়া হত্যা মামলাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় অন্তত ২৪টির অধিক মামলা রয়েছে তার নামে।
স্থানীয় সূত্র বলছে- বিকেনগর ইউনিয়নের কলেজগেট এলাকার জলিল শিকদার ও লাভলী বেগম দম্পতির পরিবারের সাথে জসিম মোল্লার সুসম্পর্ক ছিল। এদিকে লাভলী বেগমের সাথে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মজিবর মাদবর -বানিয়া- ও তার লোকজনের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। সেই জেরে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ৬ আগস্ট রাতে মজিবর মাদবর তার লোকজন নিয়ে লাভলী বেগমের বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করেন। এরপর বৃহস্পতিবার আবারও মজিবর মাদবর তার লোকজন নিয়ে লাভলী বেগমের বাড়ীতে লুটপাট করতে আসে। সেসময় জসিম মোল্লা বাধা দিতে আসায় তাকে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। এসময় লাভলী বেগম সামনে আসলে তাকেও কুপিয়ে জখম করা হয়।
জলিল শিকদারের ছেলে মাহিম শিকদার মুঠোফোনে বলেন- জসিম মোল্লা আমার মাকে মা বলে ডাকতো। তাই আমাদের যেকোন সমস্যায় তিনি আমাদের পরিবারের পাশে থাকতেন। মজিবর বানিয়া- মন্টু হাওলাদারের লোকজন অনেকদিন যাবৎ আমাদের সাথে আমাদের বাড়ীর জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি করছিল। কিন্তু জসিম মোল্লার কারনে কিছু করতে পারছিল না। বৃহস্পতিবার যখন জসিম মোল্লা আমাদের বাড়ীতে আসে তখন আব্দুল সরদার ও মজিবর বানিয়ারা মিলে ৫০-৬০ জনের মত লোক অতর্কিতভাবে হামলা করে জসিম মোল্লাকে ওখানেই কুপিয়ে মেরে ফেলে। সেসময় আমার মা বাধা দিতে যাওয়ায় তার গালে ও গলায় কোপ লাগে। আমার মা লাভলী বেগম এখন ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ক্রিটিকাল অবস্থায় আইসিইউতে আছেন।
এবিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা -ওসি- হাফিজুর রহমান বলেন- খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছি। এবিষয়ে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।