
অরবিন্দ রায়
স্টাফ রিপোর্টার।।
সারাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন বুধবার ৩ জুলাই সকাল ১০ টা থেকে শুরু হবে ।ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন চলবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত। ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সময় হবে হবে ৫ ঘন্টা। নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ শ্রেনি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত এ মূল্যায়ন অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষার্থীদের ভয়, আতঙ্ক, পড়ার চাপ নয় উৎসব মুখর পরিবেশে ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন অনুষ্ঠিত হবে।
ষাণ্মাসিক মূল্যায়নের প্রশ্নপএ প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পোর্টালে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ পাঠিয়ে দিবেন। মূল্যায়ন উৎসব শুরুর আগের দিন বিকেলে প্রধান শিক্ষক প্রশ্নপত্র পিন্ট করতে পারবেন।
মূল্যায়নের কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ নিজ নিজ বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হবে। ষাণ্মাসিক মূল্যায়নের নির্দেশনা প্রফেসর মো. মশিউজ্জামান চেয়ারম্যান -রুটিন দায়িত্ব- স্বাক্ষরিত পএ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে।
শ্রেনি কক্ষে যদি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কোন শিক্ষার্থী -শ্রবন প্রতিবন্দ্বি- দৃষ্টি প্রতিবন্ধী- বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ইত্যাদি- থাকে তা হলে তাদের জন্য শুধু মৌখিক নির্দেশনা না দিয়ে বিকল্প উপায়ে মূল্যায়ন নির্দেশনা গুলো বুঝিয়ে দিতে হবে। একজন শিক্ষক ২০ জন শিক্ষার্থীর দায়িত্ব পালন করবেন।
নতুন এ শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের রাত জেগে পড়া লেখা করে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হচ্ছে না। নতুন শিক্ষা কার্যক্রমে কোন নম্বর পদ্ধতি নেই। নম্বর ছাড়াও শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা যায় তার উদাহারন বর্তমান শিক্ষাক্রম। বর্তমান শিক্ষাক্রমে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও প্রয়োগের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। একজন শিক্ষার্থী নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষকের পাশাপাশি শিক্ষার্থী নিজেও নিজেকে মূল্যায়ন করতে পারবেন।
৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রোজামনি জানায়- নতুন কারিকুলাম বাস্তবমুখী শিক্ষা। আমরা যা শিখি তাই করি। আমাদের মুখস্থ করতে হয় না। নিজের হাতে সব কিছু তৈরি করতে পারি।
পাঁচদোনা স্যার কৃষ্ণ গোবিন্দ গুপ্ত স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাসুম বিল্লাহ জানান- নতুন কারিকুলাম আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে চলছে। নতুন কারিকুলামে প্রাইভেট ও কোচিং বানিজ্য কমে যাবে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিশন ১৯৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে নতুন কারিকুলামে প্রয়োজন আছে। বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্হা এগিয়ে যাচ্ছে।
শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ে ট্রেইনার শিলা রানী শাখারী জানাম- নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা তাদের তৈরিকৃত বিভিন্ন ধরনের কাগজের বা পাতার ঝালর, বিভিন্ন গাছের ঝড়া পাতা সংগ্রহ করে পাখি- ফুল- মাছ সহ বিভিন্ন জিনিস তৈরি করবে। আঙ্গুল পাপেট বা হাত পাপেট দিয়ে বিভিন্ন উপস্হাপনা করবেন । শিক্ষার্থীরা একক কাজ ও দলীয় কাজ করবে । গান, কবিতা আবৃত্তি- একক উপস্থাপনা- দলীয় উপস্থাপনা তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ে মূল্যায়নে বন্ধু খাতা তৈরী করেছে । বন্ধু খাতায় শিক্ষার্থীরা ১৯৫২ ভাষা আন্দোলন- ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ- স্বাধীনতা দিবস- বিজয় দিবস- বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ছবি- শহীদ মিনার- স্মৃতিসৌধ- গ্রাম বাংলার প্রাকৃতিক দৃশ্য- সহ বিভিন্ন দৃশ্য বন্ধুখাতায় শিক্ষার্থীরা অংকন করেছে।
নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা বাস্তবমুখী শিক্ষা অর্জন করেছে। শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি ভঙ্গি- জ্ঞান- যোগ্যতা- দক্ষতা বাড়াবে নতুন শিক্ষা কার্যক্রম।
নরসিংদী সদর উপজেলার গনিতের মাস্টার ট্রেইনার আনোয়ার হোসেন জানান- আগে শিক্ষার্থীরা গনিত দেখে ভয় পেত। নতুন কারিকুলামে ভয়ের পরিবর্তে বাস্তব- প্রেক্ষাপটের মাধ্যমে গনিতে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।
নরসিংদী সদর উপজেলার ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের মাস্টার ট্রেইনার জাকির হোসাইন জানান- নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
নতুন কারিকুলামের রুপকল্প হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত- দেশ প্রেমিক- উৎপাদনমুখী- সুখী ও বৈশ্বিক নাগরিক গড়ে তোলা।
নতুন কারিকুলামে মর্যাদা- সামাজিক ন্যায় বিচার- সাম্য জাতীয়তাবাদ- সমাজতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতার অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা দক্ষতা অর্জন করবে।