মো: সোহেল ভোলা
জেলা প্রতিনিধি।।
জেলার বিভিন্ন মাছ ঘাট ও বাজারগুলোতে ইলিশ মাছের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে রুপালি ইলিশ। ফলে ব্যস্ততা বেড়েছে জেলেদের মাঝে। হইচই পরে উঠেছে মাছের আড়ৎগুলো। নৌকা নিয়ে ছুটছেন জেলে নদীতে। কিছুটা দেরিতে হলেও কাঙ্খিত ইলিশ প্রাপ্তিতে উচ্ছ্বাসিত জেলেরা।
বিভিন্ন মাছের ঘাট- আড়ৎ- পাইকারি ও খুচরা বাজারে ক্রেতা বিক্রেতাদের হাক ডাক ও দর কষাকষিতে মুহূর্তে চলছে ইলিশের বাজার। প্রতিদিন জেলার প্রায় শতাধিক ঘাটে কয়েক কোটি টাকার ইলিশ মাছ বেচা কেনা হয়। গত বছর জেলায় যে পরিমাণ ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল তা দেশের মোট ইলিশ উৎপাদনের ৩০ ভাগ। এখানকার ইলিশ ঢাকা, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়।
সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এ. এফ. এম. নাজমুস সালেহীন বলেন- আমরা বিভিন্ন মাছের ঘাটগুলো ঘুরে দেখেছি। প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে নদীতে। একই সাথে রুই- কাতলসহ বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছও আটকা পড়ছে জেলেদের জালে। মনে করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বন্যা হওয়ার ফলে ভেসে যাওয়া পুকুর-ঘেরের মাছ এসব। তবে ইলিশের মধ্যে ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বেশি। এছাড়া এক কেজি বা তারচেয়ে বড় ইলিশটা বেশি পাওয়া যায়।
জেলে মোঃ জসিম মাঝি ও আনোয়ার হোসেন বলেন- গত কয়েকদিন ধরে ইলিশ মাছের সরবরাহ বেড়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে ইলিশ বিচরণের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তাই ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে নদীতে জাল নিয়ে জায় জেলেরা। দাম ভালো থাকায় লাভমান হচ্ছেন জেলেরা।
মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান,- বর্তমানে ২৮০থেকে ৩৫০ গ্রামের ইলিশ মাছের হালি এক হাজার থেকে ১৩শ টাকা- ৬’শ থেকে ১০০’শ গ্রাম হালি তিন থেকে চার হাজার টাকা, এক কেজি ইলিশ মাছের হালি সাড়ে সাত থেকে আট হাজার টাকা ও ১৩’শ গ্রাম থেকে ১৫ ‘শ গ্রাম হালি সারে নয় থেকে বারো হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন- জেলায় সারা বছরই কম বেশি ইলিশ পাওয়া যায়। তবে জুলাই মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ইলিশের মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। গত প্রায় ১৫ দিন ধরে নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নদীতে পানির গভীরতা বেড়েছে। ফলে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে।
তিনি আরো বলেন- এ বছর ইলিশের সাইজ বেশ বড়। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন ঘাটে দৈনিক ৩৫০ থেকে ৬০০ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ হচ্ছে। এছাড়া চলতি অর্থবছর জেলায় এক লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে সামনের দিকে আরো ইলিশ পাওয়া যাবে। এতে জেলেদের মাঝে খুশি নেমে এসেছে।